মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

চুয়াডাঙ্গার ছয়ঘরিয়ায় আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

  • আপলোড তারিখঃ ২৫-০৩-২০২১ ইং
চুয়াডাঙ্গার ছয়ঘরিয়ায় আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা, আসামিদের ধরতে রাতভর পুলিশের অভিযান নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে বালি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর মল্লিক (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার বেলা একটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের চিত্রা নদীর ধারে অবস্থিত শুকুরের বালির গাঁদায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখেন। সেখানে চিবিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর মল্লিক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নুরুল্লাপুর গ্রামের বিলপাড়ার রনজেত মল্লিকের ছেলে ও ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এদিকে, গতকাল রাতেই নিহতের পিতা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের হুলিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলী বেশ কিছুদিন যাবত পাশ্ববর্তী শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ফার্ম সংলগ্ন চিত্রা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। জাহাঙ্গীর মল্লিক ম্যানেজার হিসেবে শুকুর আলীর বালির ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। গতকাল বুধবার সকালে শুকুর আলী, জাহাঙ্গীরসহ তিনজন উত্তোলনকৃত বালু ট্রাক্টরযোগে আনতে পাঠাই। সেখানে যাওয়ার পর ছয়ঘরিয়া গ্রামের কিছু যুবক পূর্বশত্রুতার জের ধরে জাহাঙ্গীরকে বালি আনতে বাধা দিলে তাঁদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। এরই মধ্য মারামারি শুরু হলে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে থাকা দুজন পালিয়ে যায়। এসময় জাহাঙ্গীরকে একা পেয়ে হামলাকারীরা তাঁকে বেধড়ক মারপিট করে মুমূর্ষ অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের ভাই ইকবাল বলেন, ‘বালি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে চাঁদাবাজ একটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে জাহাঙ্গীর ছয়ঘরিয়া বালির মাঠে আছে জানতে পেরে চাঁদাবাজরা তাঁদের দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে জাহাঙ্গীরের নিকট চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে না চাইলে তারা জাহাঙ্গীরকে কোদাল, ব্যালচা ও লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।’ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর শুকুর বলেন, একই উপজেলার ছয়ঘরিযা গ্রামের চিত্রা নদীর পাড়ে আমার বালির খোলার ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতো জাহাঙ্গীর আলম। বেলা ১টার দিকে চাঁদাবাজী মামলার আসামি ছয়ঘরিয়া গ্রামের চাঁদাবাজ মোমিন ও পলাশ তার দলবল জাহাঙ্গীরের কাছে চাঁদা দাবি করে। জাহাঙ্গীর চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মোমিন পলাশ ও তার দলবল মিলে জাহাঙ্গীরকে বেধড়ক পিটয়ে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডে গ্রামবাসী ও জাহাঙ্গীরের স্বজনরা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, দুপুরে মূমুর্ষ স্থানীয়রা জাহাঙ্গীরকে জরুরি বিভাগে নেয়। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে হাসাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রাখেন। জাহাঙ্গীরের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়েছে। তাঁর বাম হাত ভাঙা ছিল। সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ‘বালি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (আজ) ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা রমজেদ মল্লিক বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেছেন। আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেপ্তারের স্বার্থে এই মুহূর্তে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।’


কমেন্ট বক্স
notebook

চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গায় যৌথ সভায় জেলা বিএনপির সম্পাদক শরীফুজ্জামান