জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম শুধু কবি নন, তিনি ছিলেন এক সংগ্রামী মানুষ এবং অসাম্প্রদায়িক চিন্তার ধারক। তার জীবনদর্শন ও সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মের জন্য এক জীবন্ত প্রেরণা। জন্মজয়ন্তী উদ্যাপন হবে তার আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য সুযোগ।’ তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মানুষের মধ্যে নজরুলের প্রতি এক গভীর ভালোবাসা রয়েছে। বাংলাদেশে নজরুল উদ্যাপন স্থলগুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্পট, যা আমাদের জন্য গর্বের।’
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৪ মে জেলার সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ মে এসব প্রতিযোগিতার সেরা প্রতিযোগীরা একটি ওপেন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন, যা তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকালে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে কার্পাসডাঙ্গা বাজার থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হবে, যা শেষ হবে স্থানীয় স্কুল প্রাঙ্গণে। ২৬ মে বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি, নজরুল সংগীত প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব আয়োজন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করা হবে। সভায় বিভিন্ন ইভেন্টের জন্য উপ-কমিটিও গঠন করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তিথি মিত্র, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে. এইচ. তাসফিকুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, এস এম ইসরাফিল হোসেন, সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক ড. মুন্সি আবু সাইফ, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী মণ্ডল, দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার, রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান, জেলা জাসাস সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব সেলিম, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘নজরুল ছিলেন বিদ্রোহ ও মানবতার কবি। তার লেখা সমাজ পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা জোগায়। তার জীবন ও সাহিত্য নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারে।’ সভা শেষে জাতীয় কবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং তার আদর্শ ও মূল্যবোধ আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।