আদম পাচারকারী চক্রের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের একাধিক পরিবার। সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যত আর অন্ধকার প্রবাস জীবনের আশঙ্কায় মায়ের বুকফাটা কান্না। প্রতারিত পরিবারগুলো আইনের আশ্রয় নিয়েও পাচ্ছেন না কোনো প্রতিকার। কারণ প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থে দালাল চক্র নিজেদের রক্ষা করতে সব ‘ম্যানেজ’ করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গতকাল রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেন হরিণাকুণ্ডুর শাখারীদহ গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আলতাফ হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন।
তিনি জানান, তার ছেলে শাহীনকে থাইল্যান্ডে পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে কম্বোডিয়ায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। শাহীন ছাড়াও আরও ৮ যুবক একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। হালিমা অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে ফজলুল করিম ফয়জুল, তার ছেলে ফয়সাল আহমেদ, স্ত্রী জাহানারা খাতুন ও পুত্রবধূ তারানা হক রথী বিদেশে পাঠানোর কথা বলে এলাকার বহু মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে হালিমা খাতুন বলেন, তার ছেলে শাহীন ছাড়াও নাথকুণ্ডু গ্রামের আকরাম আলী, সিফাতুল্লাহ, হলিধানীর রাহুল আহমেদ, প্রতাপপুরের রানা মিয়া, সদর উপজেলার জয়রামপুরের সবুজ, পৌর এলাকার কলাবাগানপাড়ার নাজিব এবং বেড়াদির আব্দুল গাফ্ফার- এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে জনপ্রতি ৭ লাখ টাকা করে মোট ৫৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে সবুজ, নাজিব ও আব্দুল গাফ্ফার নেপালের বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।
প্রতারিত যুবক নাজিব ও সবুজ জানান, থাইল্যান্ডে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। পরে তাদের কম্বোডিয়ার স্ক্যাম্প নামের একটি কোম্পানিতে ১৮ ঘণ্টার শ্রমে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে তারা সেখানে চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। মাসে মাসে টাকা পাঠানো তো দূরের কথা, নিজেদের জীবন নিয়েই তারা শঙ্কিত।