আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটির সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখার অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বিএনপি। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে, দেরিতে হলেও অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গত রাতে (শনিবার রাতে) ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ফ্যাসিবাদী শাসনের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার করা যায় ও একটি নির্বিঘ্ন বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়।’
তিনি গুম, খুন, নিপীড়ন ও জনগণের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী অপশাসনে জড়িত ফ্যাসিবাদী দলের বিচার সহজ করতে প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের পদক্ষেপকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলেও অভিহিত করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘কিন্তু আমাদের দাবি অনুযায়ী যদি এই সিদ্ধান্ত আগে থেকেই নেওয়া হতো—তাহলে সরকার চাপের মুখে পড়ে কাজ করার লজ্জাজনক ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে পড়ত না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটি মনে রাখবে এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারিক কার্যক্রমের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তাকে একটি চিঠি দিয়েছেন।
১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের শেষ সাক্ষাতের উল্লেখ করে তিনি বলে, সেসময় তারা তাকে আরেকটি চিঠি দেন, যাতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনকে নোংরামি থেকে মুক্ত করতে পতিত ফ্যাসিস্ট দল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত বিচারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার উদ্বৃতি দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব এবং প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সভা, সমাবেশ এবং আলোচনায় বারবার এই দাবি তুলেছি। এটি লক্ষণীয়, নীতিগতভাবে আমরা প্রশাসনিক আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার বিরোধিতা করেছি। সেই অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, বিএনপি আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের ঠিক আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিল।’