মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

সাদা পোশাকে পুলিশের হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য দুই গ্রাম, মাঠে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের ধান
  • আপলোড তারিখঃ ০৮-০৫-২০২৫ ইং
সাদা পোশাকে পুলিশের হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন ছবির ক্যাপশন: এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামে সাদা পোশাকে এক কিশোরীকে উদ্ধারে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশের হামলা এবং নিরীহ মানুষের নামে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের খয়েরতলা-বাকুলিয়া এলাকায় বাকুলিয়া ও খয়েরতলা গ্রামবাসী এ মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে গ্রাম দুটির শতাধিক নারী অংশ নেয়। পুলিশের ওপর কথিত হামলার অভিযোগ এনে যশোর কোতয়ালী থানার পুলিশ কনস্টেবল শওকত আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। কিন্তু গ্রামবাসীর ভাষ্য আটককৃতরা সাধারণ কৃষক ও ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না।

মানববন্ধনে বাকুলিয়া গ্রামের গৃহবধূ শিউলি খাতুন বলেন, ‘গত সোমবার (৫ মে) বিকেলে কয়েকজন বাকুলিয়া গ্রামে আসে। তাদের শরীরে পুলিশের কোনো পোশাক ছিল না। সাদা পোশাকে এসে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চায়। এসময় হাতাহাতি হয়। এরপর এক নারী পুলিশ তার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে মাছুরার নাকে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।’

কনিকা খাতুন নামে আরেক গৃহবধূ বলেন, ‘এখনো সেই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতো আচরণ করছে পুলিশ। গ্রামে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এখন ধান কাটার সময়। কিন্তু কেউ মাঠে কাজে যেতে পারছে না। রাত হলে গ্রামে কোনো পুরুষ থাকতে পারছে না। পুলিশ এসে নিরীহ মানুষদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর রাতে মাঠ থেকে ধান আনার সময় দুইজনকে ধরে নিয়ে গেছে এই মামলায়।’

আলমগীর হোসেন নামে বাকুলিয়া গ্রামের এক যুবক বলেন, ‘পুলিশের আতঙ্কে বাকুলিয়া গ্রামে পুরুষ মানুষ রাতে বাড়িতে থাকতে পারছে না। রাতে গ্রামের নারীরা সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। পুলিশ সাদা পোশাকে পরিচয় না দিয়ে কেন একটা মেয়েকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবে। তারা কেন পুলিশ পরিচয় দেয়নি, কেন পুলিশের পোশাক বাদে এসেছে। এটা তো অন্যায়। তারা অন্যায় করলো আবার গ্রামের মানুষের নামে মামলা দিয়েছে।’

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে যশোর কোতয়ালী থানা থেকে এএসআই তাপস কুমার পাল, কনস্টেবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন পুলের হাট এলাকার এক কিশোরীকে উদ্ধারে সাদা পোশাকে (সিভিল পোশাক) বাকুলিয়া গ্রামে যায়। সেসময় তারা প্রথমে সুজনের ঘরে ঢুকে তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে মেয়েটিকে হাত ধরে টেনে বের করে নিয়ে আসে। তখন অন্যরা প্রতিবাদ করলে কয়েকজনকে তারা থাপ্পড় মারে। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হলে হাতাহাতি হয়। এসময় পুলিশ সদস্য রাবেয়া এক গৃহবধূর নাকে ঘুসি মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরে এলাকার ৬-৭ জন ক্ষিপ্ত হয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য শওকত আলী বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭০ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।’




কমেন্ট বক্স
notebook

দেশের কোনো নাগরিকেরই এখন দুটি এনআইডি কার্ড নেই: ডিজি