মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

২১ বছর পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ ফজিলা খাতুন

  • আপলোড তারিখঃ ২৫-০৬-২০২৩ ইং
২১ বছর পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ ফজিলা খাতুন
ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের ফজিলা খাতুন যখন নিখোঁজ হন তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর। দুই মেয়ে ফিরোজা ও পিঞ্জিরা খাতুন তখন শিশু। স্বামী হোসেন আলী মারা গেলে তখন ফজিলা দিশেহারা হয়ে পড়েন। সংসার নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া ফজিলা একপর্যায়ে মেয়েদের এতিমখানায় রেখে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। তারপরও তিনি সামাল দিতে পারেননি। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে ফজিলা নিখোঁজ হয়ে যান। এদিকে এতিমখানায় ফিরোজা ও পিঞ্জিরা খবর পায় মা হারিয়ে গিয়েছেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর মাকে না পেয়ে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেয়। এরপর কেটে যায় ২১ বছর। সেই নিখোঁজ ফজিলা গতকাল শনিবার দুপুরে নিজ গ্রামে ফেরেন। গত শুক্রবার আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে তাকে বাংলাদেশে পৌঁছে দেয়া হয়। ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় ফজিলার সন্ধান পান তাঁর স্বজনেরা। ফজিলা খাতুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষখালী গ্রামের খয়বার আলী শেখের মেয়ে। আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ ুেমাহাম্মদ আখাউড়া-আগরতলা সীমান্তের শূন্যরেখায় নিখোঁজ ফজিলা খাতুনকে মেয়ে পিঞ্জিরার হাতে তুলে দেন। ২১ বছর পর মাকে কাছে পেয়ে আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সঙ্গে ছিলেন পিঞ্জিরার স্বামী আবদুল হালিম শেখ ও মামাতো ভাই মো. জালাল উদ্দিন। মেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন তার মা ২১ বছর আগে বিষয়খালীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। ঘটনাচক্রে কোনোভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে চলে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এভাবে কেটে যায় বহু বছর। অবশেষে আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন ফজিলার সন্ধান পেয়ে পরিবারকে খবর দেন। পিঞ্জিরা আক্তার আরও বলেন, ২০২২ সালের আগস্টে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীনের মাধ্যমে জানতে পারেন, তাদের মা জীবিত আছেন এবং ভারতে আছেন। ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর এক মাকে তার সন্তানের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরে তারা আনন্দিত। মানসিক বিকারগ্রস্ত হওয়ায় ২১ বছর আগে ঝিনাইদহ থেকে তিনি হারিয়ে যান। ত্রিপুরায় তাকে পাওয়া যায়। ত্রিপুরার মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে তিনি বেশ কয়েক বছর চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার পর ত্রিপুরার রাজ্য সরকার বিষয়টি তাদের জানায়। কিন্তু তার দেওয়া তথ্য অসম্পূর্ণ থাকায় তারা তার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি শুধু গ্রামের নাম বিষয়খালীর পরিবর্তে বিষখালী বলছিলেন। প্রথমে কুষ্টিয়ার বিষখালীতে খোঁজ করা হয়, কিন্তু সেখানে তার পরিবারের তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে ঝিনাইদহের বিষয়খালী গ্রামে খোজ নিয়ে তার পরিবারে সন্ধান পাওয়া যায়। অবশেষে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়েছে। মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. খুরশিদ আলম মিয়া বলেন, ২০০২ সালে বিষয়খালী পূর্বপাড়ার ফজিলা খাতুন ওরফে ফজি নিখোঁজ হন। দীর্ঘদিন পর তিনি বাড়ি ফিরে আসায় পরিবার এমনকি গ্রামের মানুষ সবাই খুশি। তিনি আরও বলেন, ফজির নামে একটি ব্যাংক ঋণ আছে। এটি পরিশোধ করা হতদরিদ্র পরিবারের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়।


কমেন্ট বক্স
notebook

দেশের কোনো নাগরিকেরই এখন দুটি এনআইডি কার্ড নেই: ডিজি