চুয়াডাঙ্গায় বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিদায়ী জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ
- আপলোড তারিখঃ ০৪-১০-২০১৮ ইং
ক্ষণকালের জন্য এসেছিলাম চেষ্টা করেছি বাকিটা আপনারা করিয়ে নিবেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার পরিবেশ উন্নয়ন ও সৃজনশীলতায় নিরবছিন্ন অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গার বিদায়ী জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তাকে এই সম্মাননা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত বিদায়ী জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রথমে ডিসি হতে চাইনি। তারপর বন্ধু বান্ধব অনেকেই ডিসি হয়েছে। আমি কেন হয়নি। তারপর হলাম। তবে ভেবেই এসেছিলাম, ৬ মাসের জন্য জেলা প্রশাসক হিসেবে থাকবো। কিন্ত দেখতে দেখতে তিনগুণ সময় হয়ে গেছে। এমসয় যারা চায়না, তারা চেয়েছে, আমিও চেয়েছি, সরকারকে লিখেছি। আবার সরকারও চেয়েছে। তাই বদলী হয়েছে। বদলি হতেই হবে। এটাই চাকরির নিয়ম। এর আগেও অনেক জায়গায় চাকরি করেছি। বদলিও হয়েছি। তবে যেখানে থেকেছি, সেখানের মানুষের প্রতি একটা মায়া লেগে যায়। চুয়াডাঙ্গার মানুষের কথাও মনে থাকবে। যেখানেই থাকি আসবেন। দেখা হবে। সরকার আমাকে পাঠানোর আগে একটা পরিকল্পনা নিয়েছিলো। ডিসি হিসাবে আমি এই জেলায় কি করবো। চেষ্টা করেছি। এখন, কতটুকু করতে পেরেছি সেটা আপনা বিবেচনা করবেন। চুয়াডাঙ্গাকে দেশের মানুষ চিনতো না। দর্শনায় কেরু কোম্পানি আছে সেটি দিয়েই চুয়াডাঙ্গা চিনে মানুষ। কিন্তু খুশির বিষয় সরকার চুয়াডাঙ্গাকে চেনে। চুয়াডাঙ্গা থেকে ২০ থেকে ২৫ টি দাবি গিয়েছিল। সরকার দশ বারোটি ইতিমধ্যে মেনে নিয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সি গ্রেডে ছিলো। বর্তমানে সরকার বি গ্রেডে দিয়েছে। একই সাথে চুয়াডাঙ্গার আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্য ছয়টি জেলাকে বি গ্রেড মর্যাদা দিচ্ছে সরকার। প্রস্তাব করেছিলাম সরকারের কাছে মিনি সচিবালয় করার জন্য। সরকার মেনে নিয়েছে। এখন থেকে এক জায়গায় বড়ভবনে সব সরকারি অফিস থাকবে। সব সরকারি সেবা একস্থানে পাবে জনগণ। হয়রানি কমবে।
স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে আট থেকে দশ কিলোমিটার নদী খনন করা হয়েছে। আমি সব কাজ করতে পারিনি। তবে মানুষকে বিশেষ করে তরুনদের নিজের কাজ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া একটা প্লাটফর্ম খুজে পাওয়া। তারা যেন আমাকে এসে বলতে পারে। এখন যে কেউ আমাকে ইএনওকে ফোন করতে পারে। ইভটিজিং থেকে শুরু করে শব্দ দূষণ পযন্ত বন্ধ করতে এখন আর ডিসি এসপিকে যাওয়া লাগে না। তারা নিজেরাই প্রতিরোধ করতে জানে। তবে আমার বদলির আদেশ হওয়ার পর শুনছি কোচিংগুলো আবার জেগে ওঠার পরিকল্পনায় আছে, বিআরটিএ অফিসের দালালরা আবার চক্রটাকে সক্রিয় ঘোষনার পরিকল্পনা করছে। আমি তো চলেই যাবো। আমি চলে যাবার পর আবার কি এগুলো শুরু হবে। তা যেন না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে এটা আপনাদের জেলা। এই জেলাকে ভালো রাখার দায়িক্ত আপনাদের। আপনাদেরকেই এই জেলার ভালো মন্দের বিচার করে জেলার উন্নয়নে কাজ করতে হবে এবং করাতে হবে। যিনি জেলা প্রশাসক হিসেবে আসবেন তাকে সহায়তা করবেন। নির্বাচন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। নিজেরা সহায়তা করলে সমাজের উন্নয়ন হবে। অন্য জেলার চেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার জন্য কিছু করতে পারি সেই চেষ্টা করবো। চুয়াডাঙ্গা সি গ্রেড থেকে বি গ্রেডে উন্নীত হচ্ছে। সরকার নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছে। পরিবেশ, শিক্ষা, কোচিং ও খেলাধুলায় চুয়াডাঙ্গা উন্নতি হলেই ভালো। অসম্পূর্ণ কাজগুলো আপনারা করবেন। যিনি আসবেন তাকে সহযোগিতা করবেন।
দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নওরোজ মোহাম্মদ সাঈদ, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উপ-পরিচালক জাফর ইকবাল, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সিদ্দিকুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন, ভিকুইন্স পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান কচি।
দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র বার্তা সম্পাদক হুসাইন মালিকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক আলি কদর পলাশ, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শাহ আলম সনি, চুয়াডাঙ্গা তারা দেবী ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক শেখ সেলিম, দৈনিক আকাশ খবরের সম্পাদক-প্রকাশক এ্যাড. তছিরুল ইসলাম মালিক ডিউক, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবি জহির রায়হান, আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহ আলম মন্টু।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র সহ-সম্পাদক সুমন পারভেজ, পলাশ কুমার সাহা, হেমন্ত কুমার সিংহ, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপক সেলিমুল হাবিব সেলিম, নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল রানা ডালিম, আফজালুল হক বিশ্বাস, ফেরদৌস ওয়াহিদ, মেহেরাব্বিন সানভি, কম্পিউটার অপারেটর বিএ জীবন, রুদ্র রসেল, আলমডাঙ্গা ব্যুরো প্রধান হামিদুল আজম, আলমডাঙ্গা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ শফিউজ্জামান, জীবননগর ব্যুরো প্রধান জাহিদ বাবু, মিঠুন মাহমুদ, ভালাইপুর প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান রোকন, তিতুদহ প্রতিনিধি আকিমুল ইসলাম, কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি সুলতান জসিম ও রাশেদুল ইসলাম, বারাদী প্রতিনিধি সেলিম, অফিস সহকারি ফয়সাল প্রমূখ।
কমেন্ট বক্স