ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৪ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা

রাতে এক পশলা বৃষ্টির পর দিনে তীব্র তাপদাহ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৪ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে এক পশলা বৃষ্টি হলেও আবার গতকাল বুধবার সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা প্রচণ্ড উত্তপ্ত। এ জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জেলার কৃষকেরা আপাতত বৃষ্টি চান না।

গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল মাত্র ২১ শতাংশ। এর আগে গত মঙ্গলবার জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও দিনে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে। জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, আপাতত তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর থেকে ক্রমেই উপরে উঠতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। ১৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৪ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও ১৫ এপ্রিল এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৬ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে যৌথভাবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিও সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। এরপর শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায়। রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা তিনটা ও সন্ধ্যা ছয়টায় এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার (২২ এপ্রিল) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টা বেজে ২০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গায় দমকা হাওয়াসহ ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে সামান্য বৃষ্টির কারণে দিনের তাপমাত্রা কমেনি।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলছে গরমজনিত রোগবালাই। কাজ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। চুয়াডাঙ্গা শহরের গৃহিনী আমিনা বেগম বলেন, ‘বাড়ির ছাদ থেকে গরম নামছে। ট্যাংকের পানিও গরম। পানি দিয়ে এমনিতেই ভাব উঠছে।’

বড় বাজারের ফল বিক্রেতা মো. তারিক বলেন, ‘গরমে ফল দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খরিদদারও কম। সবমিলিয়ে বিপদে আছি।’ সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ বিশ্বাস বলেন, ‘এখন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। যদিও প্রচুর গরম। তবুও আমরা বৃষ্টি চাই না। বৃষ্টি হলে, আমাদের কষ্ট আরও বেশি তিন-চার গুণ বাড়বে। ধান ঝাড়া-মাড়াইয়ের কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে বৃষ্টির কারণে ধান কাটাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। আমরাও বৃষ্টি চাই। তবে আরও কয়েকদিন পর থেকে হলেই কৃষক সমাজ উপকৃত হবে। কিন্তু আমাদের কথায় তো কিছু হয় না। ওপরে আল্লাহ আছেন, তিনিই ভরসা।’

আড়ত মালিক সজিব মিয়া বলেন, বৃষ্টি তো চাই। কিন্তু এখন এমন সময়, যেবারই ধান কাটার সময় ঝড়-বৃষ্টি হয়, সেবারই কষ্ট বেশি হয়। এখন কদিন এইভাবে রোদ হলে, কৃষকরা ধান কাটা, ঝাড়া-মাড়াইয়ের কাজ সহজে করতে পারবে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় আম ও লিচুতে লোকসান হবে। বলছেন বাগান মালিকরা। আম ও লিচু বাগান মালিক মো. পারভেজ হোসেন বলেন, আমার চার বিঘা আম ও তিন বিঘা লিচু বাগান আছে। এবারে লিচু আর আম দুটোতেই খুব একটা ফলন পাবো না। অনেক লিচু ও আমের গুটি গরমে ঝরে যাচ্ছে। একটা বিপদে আছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘একটানা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। সবজিসহ অনেক ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আবার যারা এখন ধান কেটে ঘরে তুলছেন, তাদের জন্য বৃষ্টি না হলে দুর্ভোগ বাড়বে। আমাদের ব্লক সুপারভাইজার, উপ-সহাকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে কৃষকদের মাঠ পর্যবেক্ষণ করাসহ পরামর্শ দিচ্ছেন। যাদের ধান দুধ পর্যায়ে আছে, তাদেরকে নিয়মিত পানি দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, ‘তীব্র গরমে হার্টের রোগীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছেন, বাড়ছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। চিকিৎসা নিতে আসা এসব রোগীদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে বলা হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, খাওয়ার স্যালাইন, লেবুর শরবত ও তরলজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া এবং রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’ তিনি আর বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও গরমজনিত রোগীর চাপ প্রচুর। হাসপাতালের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ জনের বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি থেকে সেবা নেয়া রোগীদের অনেককেই বেড না পেয়ে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৪ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা

রাতে এক পশলা বৃষ্টির পর দিনে তীব্র তাপদাহ

আপলোড টাইম : ০৮:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় টানা ১৪ দিন ধরে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে এক পশলা বৃষ্টি হলেও আবার গতকাল বুধবার সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা প্রচণ্ড উত্তপ্ত। এ জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জেলার কৃষকেরা আপাতত বৃষ্টি চান না।

গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল মাত্র ২১ শতাংশ। এর আগে গত মঙ্গলবার জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাতে ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও দিনে প্রায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে। জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, আপাতত তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর থেকে ক্রমেই উপরে উঠতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। ১৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৪ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও ১৫ এপ্রিল এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৬ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে যৌথভাবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিও সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। এরপর শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায়। রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা তিনটা ও সন্ধ্যা ছয়টায় এ জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার (২২ এপ্রিল) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার বেলা তিনটায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিনগত রাত ১টা বেজে ২০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গায় দমকা হাওয়াসহ ১ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে সামান্য বৃষ্টির কারণে দিনের তাপমাত্রা কমেনি।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলছে গরমজনিত রোগবালাই। কাজ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। চুয়াডাঙ্গা শহরের গৃহিনী আমিনা বেগম বলেন, ‘বাড়ির ছাদ থেকে গরম নামছে। ট্যাংকের পানিও গরম। পানি দিয়ে এমনিতেই ভাব উঠছে।’

বড় বাজারের ফল বিক্রেতা মো. তারিক বলেন, ‘গরমে ফল দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খরিদদারও কম। সবমিলিয়ে বিপদে আছি।’ সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ বিশ্বাস বলেন, ‘এখন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। যদিও প্রচুর গরম। তবুও আমরা বৃষ্টি চাই না। বৃষ্টি হলে, আমাদের কষ্ট আরও বেশি তিন-চার গুণ বাড়বে। ধান ঝাড়া-মাড়াইয়ের কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে বৃষ্টির কারণে ধান কাটাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। আমরাও বৃষ্টি চাই। তবে আরও কয়েকদিন পর থেকে হলেই কৃষক সমাজ উপকৃত হবে। কিন্তু আমাদের কথায় তো কিছু হয় না। ওপরে আল্লাহ আছেন, তিনিই ভরসা।’

আড়ত মালিক সজিব মিয়া বলেন, বৃষ্টি তো চাই। কিন্তু এখন এমন সময়, যেবারই ধান কাটার সময় ঝড়-বৃষ্টি হয়, সেবারই কষ্ট বেশি হয়। এখন কদিন এইভাবে রোদ হলে, কৃষকরা ধান কাটা, ঝাড়া-মাড়াইয়ের কাজ সহজে করতে পারবে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় আম ও লিচুতে লোকসান হবে। বলছেন বাগান মালিকরা। আম ও লিচু বাগান মালিক মো. পারভেজ হোসেন বলেন, আমার চার বিঘা আম ও তিন বিঘা লিচু বাগান আছে। এবারে লিচু আর আম দুটোতেই খুব একটা ফলন পাবো না। অনেক লিচু ও আমের গুটি গরমে ঝরে যাচ্ছে। একটা বিপদে আছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ‘একটানা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। সবজিসহ অনেক ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আবার যারা এখন ধান কেটে ঘরে তুলছেন, তাদের জন্য বৃষ্টি না হলে দুর্ভোগ বাড়বে। আমাদের ব্লক সুপারভাইজার, উপ-সহাকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে কৃষকদের মাঠ পর্যবেক্ষণ করাসহ পরামর্শ দিচ্ছেন। যাদের ধান দুধ পর্যায়ে আছে, তাদেরকে নিয়মিত পানি দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, ‘তীব্র গরমে হার্টের রোগীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছেন, বাড়ছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। চিকিৎসা নিতে আসা এসব রোগীদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে বলা হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান, খাওয়ার স্যালাইন, লেবুর শরবত ও তরলজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া এবং রোদ থেকে বাঁচতে ছাতা ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’ তিনি আর বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও গরমজনিত রোগীর চাপ প্রচুর। হাসপাতালের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ জনের বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি থেকে সেবা নেয়া রোগীদের অনেককেই বেড না পেয়ে মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।