বিজিএমইএ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন, ‘এখন আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ একটি রাজনৈতিক দল, তারা আজ পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ জন্ম হওয়া অবধি এবং বাংলাদেশের জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায়নি। জনগণ তাদের ম্যান্ডেট দেয়নি, কেন দেয়নি? কারণ ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই তারা (জামায়াত) মিথ্যা কথা বলে। রাজনীতির সাথে ধর্মকে মিশিয়ে ফেলে। আমরা কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিতে পারি আমাদের দল ক্ষমতায় গেলে আমরা রাস্তা-ঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করব, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করব, আপনাদের যাতে খুলনা, রাজশাহী, ঢাকামুখী যেতে না হয়, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন হবে, কৃষির উন্নয়ন হবে। কিন্তু আমরা গ্যারান্টি দিতে পারব না যে, আপনি বেহেশতে যাবেন। এটা যারা দেয়, তারা নিজেরাও জানে, এটা মিথ্যা কথা।’
গতকাল শুক্রবার বিকেলে জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এদিন প্রথম হাসাদাহ ইউনিয়নের পুরন্দরপুর, পরে পর্যায়ক্রমের মাধবপুর, কাটাপোল, বকুন্ডিয়া, করিমপুর, বৈদ্যনাথপুর এবং হাসাদাহ বাজারে পথসভা করেন তিনি।
জেলা বিএনপির সভাপতি আরও বলেন, ‘ভোট দিলে যদি বেহেশতে যাওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশের ১০ পারসেন্ট মানুষ আছে, তারা তো মুসলমান না, তারা ভিন্ন ধর্মের, তারা বেহেশতে যাবে কীভাবে? আর বেহেশতে যাওয়া, দোযখে যাওয়া এটি আপনার যার যার ব্যক্তিগত আমল। যদি নির্দিষ্ট কোনো মার্কায় ভোট দিয়ে বেহেশতে যাওয়া যেত, তাহলে আমরা নামাজ পড়তাম না, আমরা ধর্মীয় আচার পালন করতাম না, শুধু নিদিষ্ট মার্কায় ভোট দিয়ে জান্নাতে যেতাম। এগুলো ২০ বছর, ২৫ বছর আগে চলত, এখন মানুষ বোঝে, আমরা এই বিতর্কে যেতে চায় না, আমরা চায় মানুষ সত্যটা জানুক।’
বাবু খান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা লাখ লাখ মামলার আসামি হয়েছে। তারপরও আমরা আমাদের ঐক্য, ঈমানদারি ধরে রেখে দল পরিবর্তন করিনি। সাময়িকভাবে হয়ত কেউ সক্রিয় ছিলাম, নিষ্ক্রিয় ছিলাম, দল পরিবর্তন করি নাই। আমরা অনুরোধ করব, আপনারা যারা মুরুব্বি আছেন, তরুণ প্রজন্ম আছেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক, তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হবে ইনশাআল্লাহ। আর প্রবীণদের ভোট সবসময় ধানের শীষের পক্ষ হবে।’
এছাড়া পথসভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু আরও বলেন, ‘মূল যে ফসল ধান-পাট এগুলোতো এ জেলায় হয়। এর বাইরে নিত্যনতুন ফসলের যে এখানে গবেষণা করে, এখানে যে ঝুঁকি নিয়ে চাষ করা হয়, সেটা কিন্তু এই চুয়াডাঙ্গার মানুষই করে। দেখেন আজ থেকে তিন বছর-চার বছর আগে প্রচুর পেঁয়াজের চাষ করতাম। পেঁয়াজ এখন খুব বেশি চাষ হচ্ছে না। আমার যারা ঢাকার বন্ধু, আশেপাশের বন্ধু পেঁয়াজের চাষ করে। আমি গর্ব করে বলি যে চাষ আমরা ৫ বছর আগে বাদ দিয়ে দিয়েছি, সেগুলো তোরা এখন করিস। আমরা এখন করি মাল্টা, কমলা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি এইগুলো চাষ হচ্ছে। এই যে নিত্যনতুন কৃষির উদ্ভাবন আমাদের মাঝে আছে বলেই আমরা দাবি করব আগামীতে চুয়াডাঙ্গা জেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় হোক।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিলটন, চুয়াডাঙ্গার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মারুফ সারোয়ার বাবু, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়র হোসেন খান খোকন, সহসভাপতি গোলাম মঞ্জুর সিদ্দিকী মিলন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দীন ময়েন, উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক পিয়ারা বেগম, হাসাদাহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল আল মামুন, সহসভাপতি শফিকুল আলম লিটন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, জীবননগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ আরিফ, কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক সামছুল আলম, হাসাদাহ ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ হাসাদাহ ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান সম্পাদক