করোনা ভাইরাস : ভরা রবি মৌসুমেও পণ্য বিক্রি করতে পারছে না কৃষক
- আপলোড তারিখঃ ৩১-০৩-২০২০ ইং
মেহেরাব্বিন সানভী:
রবি ফসলের ভরা মৌসুমে করোনা ভাইরাসের আতংকে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে পারছেন না চুয়াডাঙ্গার অনেক কৃষক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনায় বড় ধরনের জন সমাগম হয় এমন বাজার বাদে কাঁচামালের হাট-বাজার সীমিত পরিসরে খোলা থাকায় কৃষক তাঁদের উৎপাদিত রবি শস্য বিক্রিতে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁরা বলছেন, পাইকারি ক্রেতা কম থাকায় এবং জেলার বাইরে থেকে ব্যাপারি না আসতে পারায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন।
এদিকে, ‘দিন আনে, দিন খায়’ এমন কৃষিশ্রমিকরা আছেন মহাবিপাকে। একদিকে কাজ নেই, অন্যদিকে ঘরে খাবার নেই। তাই বারবার গেরস্থের দোয়ারে যাচ্ছেন কাজ আর খাবারের সন্ধানে। চুয়াডাঙ্গার এসব কৃষিশ্রমিকদের মুখে এখন দুঃশ্চিন্তার ছাপ তাই স্পষ্ট।
পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক রমজান আলী জানান, এখন রবি ফসল পিঁয়াজ, গম, মশুর, ছোলা, মটর, খেশারিসহ অন্যান্য ফসল ঘরে তোলার সময়। কামলা দিয়ে আমরা ঠিকই ফসল ঘরে তুলছি। কিন্ত হঠাৎ করেই করোনার প্রভাবে হাট-বাজারে পাইকারি ক্রেতা না থাকা এবং জেলার বাইরে পণ্য রপ্তানি করতে না পারায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণে কামলার টাকাও পরিশোধ করতে পারছি না।
ঘোলদাড়ি গ্রামের চাষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, '৫/৭ দিন বিভিন্ন হাটে পণ্য নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছি। কিন্ত কোনো হাটেই পণ্য বেচতে পারিনি। বরং এই সময়ে পরিবহন খরচ অনেক বেশি গুনতে হয়েছে। পণ্য বেচতে না পারায় কামলা, জমি চাষ, সার, ওষুধের টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আর পরবর্তী ফসল রোপনের কথাও ভাবতে পারছি না।'
এদিকে বেশিরভাগ চাষীর ঘরে অতিরিক্ত পিঁয়াজ রাখার জায়গা না থাকায় গরমে তা পচন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
বলেশ্বরপুর গ্রামের দিনমুজুর আনিচুর রহমান বলেন, 'সারাদিন কাজ করে মাঠ থেকে বিভিন্ন ফসল কৃষকের ঘরে তুলে দিয়ে এখন মজুরির টাকা পাচ্ছি না। কোথাও কাজ-টাজও নাই। চাষীরা বলছে, তারা পণ্য বিক্রি করতে পারছে না বলে টাকা দিতে পারছে না।'
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, তিনি জেলার সংশ্রিষ্ট্য সকল স্থানে চিঠি দিয়েছেন জনসমাগম না করে কৃষি পণ্যের হাট যেন খোলা থাকে। কৃষকরা তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে পারে। কাঁচা বাজার খোলা রাখার নির্দেশনা সরকারি পর্যায়েও আছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাজার অনেকটাই নিস্তেজ। কাঁচা বাজার খোলা থাকলেও বিক্রি কম। সমস্যাটা অনেকাংশে কৃষককেই বহন করতে হচ্ছে। তবে আগামি কয়েকদিনের মধ্যে বাজার আবার স্বাভাবিক হতে পারে।
কমেন্ট বক্স