ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে সরকারিভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সরবরাহে ঘাটতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ জেলার প্রতি ইউনিয়নে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এসব উপকরণ না থাকায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে গ্রামের মানুষের মাঝে অনীহা দেখা দিয়েছে। বাজারেও জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় মানুষ ইচ্ছা থাকলেও তা কিনতে পারছেন না। ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ মাস ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী উপকরণের সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এর মজুদ খুবই সীমিত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষ করে দীর্ঘ মেয়াদী পদ্ধতি ইনজেকশন ও চলমান পদ্ধতির উপকরণ কনডম ও মেয়েদের খাবার বড়ির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। যার প্রভাবে দরিদ্র শ্রেণির দম্পতিদের মাঝে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে তারা পাচ্ছে না সরকারি সরবরাহ, অন্যদিকে বাজার থেকে কিনতে গেলেও দাম চড়া।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় জন্মনিয়ন্ত্রণে একজন করে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও তিনজন করে পরিবার কল্যাণ সহকারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। তারা সপ্তাহের চার দিন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে দম্পতিদের সাথে কথা বলেন ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ করেন। উপকরণ ঘাটতির কারণে কর্মীরা ব্যবহারকারী দম্পতিদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাজার থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সংগ্রহের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফলসী ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পারবতী বালা জানান, তার ইউনিয়নে দুই হাজার ৮৫৭ জন দম্পতি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ঘাটতি থাকায় এই মুহূর্তে তাদের চাহিদা মোতাবেক সামগ্রী সরবরাহ করতে পারছেন না। একই কথা জানালেন জোড়াদাহ ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ইমরুল কায়েস।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানিয়া আক্তার তৃপ্তি জানান, এই মুহূর্তে উপকরণ সামগ্রীর স্বল্পতা থাকলেও মানুষ এখন খুবই সচেতন। ঘাটতির সময়কাল ওই সব দম্পতি বাইরে থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে পদ্ধতি চলমান রাখবেন বলে তার বিশ^াস।
ঝিনাইদহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপ-পরিচালক মোজাম্মেল করিম জানান, ঘাটতি হলেও সেটা সাময়িক। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, টেন্ডার জটিলতার কারণে এই ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই ঘাটতি এতই বেশি যে গত ১৫ বছরেও দেখা যায়নি। ফলে এর প্রভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী দম্পতির মধ্যে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। ওই কর্মকর্তা মনে করেন, দ্রুত উপকরণের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে মারাত্মকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে।
ঝিনাইদহ জেলার সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, এখন মানুষ অনেক সচেতন। তিনি মনে করেন পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের কর্মীরা যদি সঠিকভাবে পদ্ধতি ব্যবহারকারী নিম্নআয়ের মানুষদের বোঝাতে সক্ষম হন, তাহলে এই অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ঝিনাইদহে সরকারিভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সরবরাহে ঘাটতি

আপলোড টাইম : ১১:১৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঝিনাইদহ জেলার প্রতি ইউনিয়নে জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এসব উপকরণ না থাকায় পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণে গ্রামের মানুষের মাঝে অনীহা দেখা দিয়েছে। বাজারেও জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় মানুষ ইচ্ছা থাকলেও তা কিনতে পারছেন না। ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে এ খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ মাস ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী উপকরণের সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এর মজুদ খুবই সীমিত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষ করে দীর্ঘ মেয়াদী পদ্ধতি ইনজেকশন ও চলমান পদ্ধতির উপকরণ কনডম ও মেয়েদের খাবার বড়ির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। যার প্রভাবে দরিদ্র শ্রেণির দম্পতিদের মাঝে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে তারা পাচ্ছে না সরকারি সরবরাহ, অন্যদিকে বাজার থেকে কিনতে গেলেও দাম চড়া।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় জন্মনিয়ন্ত্রণে একজন করে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও তিনজন করে পরিবার কল্যাণ সহকারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। তারা সপ্তাহের চার দিন বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে দম্পতিদের সাথে কথা বলেন ও জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ করেন। উপকরণ ঘাটতির কারণে কর্মীরা ব্যবহারকারী দম্পতিদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ঘাটতি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বাজার থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সংগ্রহের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফলসী ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক পারবতী বালা জানান, তার ইউনিয়নে দুই হাজার ৮৫৭ জন দম্পতি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ঘাটতি থাকায় এই মুহূর্তে তাদের চাহিদা মোতাবেক সামগ্রী সরবরাহ করতে পারছেন না। একই কথা জানালেন জোড়াদাহ ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ইমরুল কায়েস।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানিয়া আক্তার তৃপ্তি জানান, এই মুহূর্তে উপকরণ সামগ্রীর স্বল্পতা থাকলেও মানুষ এখন খুবই সচেতন। ঘাটতির সময়কাল ওই সব দম্পতি বাইরে থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে পদ্ধতি চলমান রাখবেন বলে তার বিশ^াস।
ঝিনাইদহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপ-পরিচালক মোজাম্মেল করিম জানান, ঘাটতি হলেও সেটা সাময়িক। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, টেন্ডার জটিলতার কারণে এই ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে। আর সেই ঘাটতি এতই বেশি যে গত ১৫ বছরেও দেখা যায়নি। ফলে এর প্রভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণকারী দম্পতির মধ্যে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। ওই কর্মকর্তা মনে করেন, দ্রুত উপকরণের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে ব্যবহারকারীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে মারাত্মকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হতে পারে।
ঝিনাইদহ জেলার সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, এখন মানুষ অনেক সচেতন। তিনি মনে করেন পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের কর্মীরা যদি সঠিকভাবে পদ্ধতি ব্যবহারকারী নিম্নআয়ের মানুষদের বোঝাতে সক্ষম হন, তাহলে এই অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ ঘটবে।