রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি
চুয়াডাঙ্গায় পৃথক স্থানে বিষপানে নারী-পুরুষের মৃত্যু; অভিযোগ

ছেলের সামনেই স্ত্রীকে জোরপূর্বক বিষ খাওয়ান স্বামী

  • আপলোড তারিখঃ ০৬-০৯-২০২৫ ইং
ছেলের সামনেই স্ত্রীকে জোরপূর্বক বিষ খাওয়ান স্বামী

চুয়াডাঙ্গায় পৃথক স্থানে বিষপানে নারী ও পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের শেখপাড়ার নাসির খানের স্ত্রী আফরোজা খাতুন (৩৭) ও দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের মৃত নবিছউদ্দীনের ছেলে মাহাবুল (৪৫)। পরিবারের অভিযোগ, আফরোজাকে ছোট ছেলের সামনেই জোরপূর্বক বিষ খাওয়ান স্বামী নাসির খান ও মেজ ছেলে ইমন (১৯)। অপরদিকে, ঋণের দায়ে বাড়িতে অবস্থানকালে নিজেই বিষপান করেন মাহাবুল।


আফরোজার পরিবারের সদস্যরা জানান, বিয়ের পর থেকেই নাসিরের সঙ্গে সংসার জীবনে অশান্তি লেগেই ছিলো। নাসির ইটভাটার শ্রমিক হলেও ছয় মাস কাজ করে বাকি ছয় মাস নেশায় ও আড্ডায় সময় কাটাতো। সংসার খরচ কিংবা সন্তানদের দেখাশোনাতেও তার কোনো আগ্রহ ছিল না। প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতো। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার সকালে ঝগড়ার পর আফরোজাকে জোরপূর্বক বিষ খাওয়ানো হয়। পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে সদর হাসপাতালে, পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিলেও কোনো উন্নতি হয়নি। অবশেষে পুনরায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।


আফরোজার খালাতো ভাই সামসুল আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই নাসির আমার বোনকে নির্যাতন করতো। সংসারের বাজার পর্যন্ত করতো না। ছোট ভাগ্নের কাছ থেকে জেনেছি, মঙ্গলবার সকালে নাসির তার আগের ঘরের ছেলে ইমনকে নিয়ে বোনকে জোর করে বিষ খাইয়ে দেয়। হাসপাতালে নিলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।’ তিনি আরও জানান, রাতে আফরোজার মৃত্যুর পর নাসির ও তার বাড়ির লোকজন ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে।’ 


নিহতের ছোট ছেলে সুমন হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে আব্বা-আম্মার মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিলো। আব্বা সবসময় মাকে মারতো। সেদিনও প্রথমে মাকে মারধর করে, পরে মেজ ভাই ইমনকে নিয়ে জোর করে মাকে বিষ খাইয়ে দেয়। আমি বারবার থামাতে চাইলেও কেউ আমার কথা শোনেনি।’


এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, ‘আফরোজা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্ত শেষে বেলা চারটায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবার থেকে থানায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হবে। অভিযোগ সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ 


অন্যদিকে, ইব্রাহিমপুর গ্রামের মাহাবুল ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানায় তার পরিবার। প্রতিবেশী লিপন হোসেন বলেন, ‘মাহাবুলকে সবাই ভালো ছেলে জানতো। কিন্তু গত কয়েক বছরে এনজিওসহ বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়েছিলো। বিদেশে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিলো, কিন্তু সেটা হয়নি। ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষপান করে। ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলো। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খবর পাই, সে বিষ খেয়েছে। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’


স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহফুজুর রহমান রতন বলেন, ‘ঋণের কারণে ভালো ছেলেটি অকালে প্রাণ হারালো। বিদেশ যাওয়ার আশায় বিভিন্ন মাধ্যমে ঋণ করেছিলো, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলো। স্থানীয়ভাবে আমরা যতটুকু জেনেছি, ঋণের দায়ই তার আত্মহত্যার মূল কারণ।’



কমেন্ট বক্স
notebook

আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাবিল উদ্দিনের ইন্তেকাল