গোলাপ ফুল আর কোরআন নিয়ে জেল থেকে বের হলেন লাল্টু
- আপলোড তারিখঃ ১৩-০২-২০১৮ ইং
আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ অর্ধশতাধিক মামলায় হাইকোর্টের জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক সময়ের শীর্ষ অস্ত্রধারী সংগঠন বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান নুরুজ্জামান লাল্টু দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে কারাবাস শেষে হাইকোর্টের দেয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচারাধীন হত্যা মামলা চার মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। নুরুজ্জামান ওরফে লাল্টু চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও চরমপন্থী দলের শীর্ষ নেতা।
জানা যায়, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ গেল বছরের ১৪ ডিসেম্বর এই জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে লাল্টুর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এস এম আরিফুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ। ক্রি: মিস কেস- ৫৯২১৭/১৭ নম্বর মামলায় উচ্চ আদালত হত্যা মামলার আসামী নুরুজ্জামান ওরফে লাল্টুর জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর উচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট বিচারাধীন আদালতকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেন। গতকাল সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন খাঁন ২০ হাজার টাকা বন্ডে সেশন ৪০/৯৮ নস্বর বিচারধীন মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে মুক্তির আদেশ দেন।
এদিকে, ১৯৯৮ সালে লাল্টু তাঁর বাহিনী নিয়ে তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেই থেকে তিনি কারাগারে। তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মানুষ হত্যা করার অভিযোগে একাধিক মামলা ছিল। এর মধ্যে বর্তমানে ১৯৯৩ সালে ১০ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা থানায় দায়েরকৃত একটি হত্যা মামলা নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। এই মামলায় আট বছর ধরে কোনো সাক্ষী হাজির হচ্ছে না। এ অবস্থায় তিনি জামিন আবেদন করলে মহামাণ্য আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
কারাসূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালের ১০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় একটি হত্যা মামলাসহ অর্ধশতাধিক মামলায় কারাগারে বন্দি ছিল সে। গত ১৪/১২/১৭ ইং তারিখে উচ্চ আদালত থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাসপুর স্কুলমাঠে দলীয় জনসভায় সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে কাজী আরেফ আহমেদসহ ৫ জাসদ নেতা খুন মামলারও অন্যতম আসামী সে। বেশ কয়েকটি মামলায় ইতিপূর্বে সে খালাস পেলেও অধিকাংশ মামলায় বিচারাধীন।
কারাগার থেকে মুক্তির পর লাল্টু বলেন, ‘হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় এতদিন কারাগারে বন্দি জীবনে ছিলাম। এরমধ্যে তিনটি মামলায় সাজা হয়েছে আমার। দীর্ঘ ১৯ বছর কারাভোগ শেষে এবার আমি এক আলোর মানুষ। ১৯৯৮ সালে তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পনের সময় প্রতিজ্ঞা করেছিলাম কোনদিন মুক্তি পেলে কৃষি কাজে ফিরে যাবো; এখন আমার পরিকল্পনাও তাই।’
তার হাতে কেউ খুন হয়েছে কি না জানতে চাইলে লাল্টু বলেন, ‘আমি এত অমানুষ নই যে আমার হাতে কোন মানুষ মার্ডার হবে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশমাতৃকার টানে যুদ্ধ করেছিলাম এখনও আমার ভেতর দেশত্ববোধ রয়েছে।’
কমেন্ট বক্স