রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

জামায়াত নাকি বিএনপি, হিসাব মেলাচ্ছে এনসিপি

  • আপলোড তারিখঃ ২৩-১০-২০২৫ ইং
জামায়াত নাকি বিএনপি, হিসাব মেলাচ্ছে এনসিপি

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা। এর মধ্যে বিশেষ নজর এখন গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক শক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দিকে। বিএনপি নাকি জামায়াত-কোন দলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত জোট বা আসন সমঝোতায় যাবে এনসিপি? নাকি এককভাবে নির্বাচন করবে- তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে হিসাব-নিকাশ। এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলের সঙ্গেই অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ চলছে। তবে এর মধ্যে দলের একাংশ মনে করছে, জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি জোট না করে কৌশলগত সমঝোতা করা যেতে পারে। অপর একটি পক্ষ বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি বা জোটে যাওয়ার পক্ষে। আবার আরেকটি পক্ষের অবস্থান- বড় কোনো দলের সঙ্গে জোটে না গিয়ে একক নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা।


আবার কেউ বলছেন- জুলাই সনদের বিষয়টি মীমাংসিত না হওয়া পর্যন্ত, নির্বাচন নিয়ে আপাতত কোনো ভাবনা নেই এনসিপির। বিষয়টি (জুলাই সনদ) মীমাংসিত হলেই; নির্বাচন নিয়ে তারা ভাববেন। এছাড়া দলটির একটি সূত্র জানিয়েছে, যদি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়, তাহলে এনসিপি জোট ছাড়াই এককভাবে ভোটে নামতে পারে। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, এনসিপির ভেতরে জোট গঠন নিয়ে রয়েছে দুই ধরনের মত। একটি পক্ষ বলছে, বিএনপি যদি অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি আসনে ছাড় দেয়, তবে তারা জোটে যেতে রাজি। অন্য পক্ষের যুক্তি- বিএনপি আসন দিলেও স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়ালে এনসিপি বড় চ্যালেঞ্জে পড়বে।


এ বিষয়ে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা কারো সাথে জোটে যাচ্ছি নাকি বা এককভাবে নির্বাচন করব সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো হয়নি। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করছি।’ সারজিস আলম আরো বলেন, ‘এমনও হতে পারে আমরা এককভাবে বা স্বতন্ত্র জোট করে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারি। অনেকেই এনসিপির সঙ্গে নতুন করে রাজনীতি করতে আগ্রহী।’


এদিকে দল গঠনের পর থেকেই জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির রাজনৈতিক সখ্য থাকলেও জুলাই সনদ ঘিরে সম্প্রতি দুদলের সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টে এ বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ‘পিআর বা আনুপাতিক নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনকে সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা’ বলে মন্তব্য করে নাহিদ ইসলাম। তার পাল্টা জবাবও দিতে দেখা যায় জামায়াত নেতাদের। এমন পরিস্থিতির মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা কিংবা জোট গঠনের সম্ভাবনা কতটুকু তা নিয়েও রয়েছে নানা আলোচনা। 


অন্যদিকে সংস্কার ইস্যুতে গত কয়েক মাসে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। সভা-সমাবেশে উভয়পক্ষের নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন। কোথাও কোথাও এনসিপির কর্মসূচিতে বাধা বা হামলার অভিযোগও উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ সম্পর্কের টানাপড়েন চললেও পর্দার আড়ালে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে নির্বাচনি সমঝোতার আলোচনা চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন দলের কয়েকজন নেতা। বিএনপির দিক থেকেও জোটের সম্ভাবনার দরজা খোলা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই। নির্বাচনের আগে মাঠের পরিস্থিতি দেখেই তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


এ প্রসঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, ‘আমার ধারণা, আরেকটু সময় গেলে স্পষ্ট হবে কে কোন জোটে বা কার সঙ্গে সমঝোতায় যাবে। এনসিপির সঙ্গে সমঝোতা বা জোট গঠনের সুযোগ তো আছেই।’ তবে জামায়াতের সঙ্গে জোটে গেলে ‘রাজনৈতিক ট্যাগ’ দলটিকে পিছিয়ে দিতে পারে- এমন আশঙ্কাও আছে এনসিপির ভেতরে। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন ছাত্র উপদেষ্টাও জামায়াতের সঙ্গে জোট না করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দলটির একটি সূত্র। পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত যদি দ্রুত আসে, তাহলে এনসিপি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সেক্ষেত্রে বিএনপি বা জামায়াতের বিদ্রোহী অংশকেও এনসিপি থেকে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা রয়েছে বলে জানা গেছে।


এ বিষয়ে কথা হলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংগঠক ও অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম আইনি বলেন, জোটের বিষয়ে এনসিপি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা বর্তমানে জুলাই সনদ নিয়েই কাজ করছি। এটি মীমাংসিত না হওয়া পর্যন্ত আপাতত নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো পরিকল্পনা নেই। এ বিষয়টি সমাধান হলে এনসিপি জোটগত সমঝোতা করবে নাকি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে—তখন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।



কমেন্ট বক্স
notebook

জীবননগর উপজেলা ও পৌর শ্রমিকদলের কমিটি অনুমোদন