বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক, ঐকমত্য প্রত্যাশিত

  • আপলোড তারিখঃ ২৫-০৮-২০২৫ ইং
জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক, ঐকমত্য প্রত্যাশিত

প্রস্তাবিত জুলাই সনদ তথা সংস্কার প্রস্তাবের কিছু বিষয় নিয়ে যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে, তা অবশ্যই ইতিবাচক। গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যই হলো, জাতির সামনে উপস্থিত যেকোনো সমস্যার সমাধানে জাতীয় পর্যায়ে তর্ক-বিতর্ক হবে, আলোচনা হবে এবং সর্বসম্মত না হলেও অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তারাও সে সিদ্ধান্ত অকাতরে মেনে নেবেন। এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এর ব্যত্যয় ঘটলে তা সবার জন্য ক্ষতিকর। সালিসে যাই হোক, তালগাছ আমার- এমন মানসিকতা স্বৈরতান্ত্রিক। এই বিপজ্জনক মানসিকতার চর্চা জাতি গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেখেছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন নতুন আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জাতি এগোতে চায়। সেই জন-অভিপ্রায় হলো সব অনিয়ম-দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে পুরোদস্তুর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে সুশাসন ও অগ্রগতি অর্জন। সংস্কারের মূল লক্ষ্য সেটি। সে জন্য সংস্কার নিয়ে তর্ক-বিতর্ক স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। এর মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কারের অনেক প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করেছে।


রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দুই দফা আলোচনায় ৮৪টি প্রস্তাব সম্পর্কে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। এটি অনেক বড় অর্জন। সব শেষে জুলাই সনদের সংবিধান সংস্কারবিষয়ক কিছু প্রস্তাবের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। বিএনপি সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন করতে চায় আগামী জাতীয় সংসদে। জামায়াতে ইসলামী চায় গণভোট বা রাষ্ট্রপতির প্রক্লেমেশনের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন। এনসিপি চায় গণপরিষদ গঠন করে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে। গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই সাথে করার পক্ষে নবগঠিত এই দলটি।


ঐকমত্য কমিশন এখন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামত জানছে। সেখানে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোটের সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা উঠেছে। আবার কিছু বিকল্প পদ্ধতিও আলোচনায় আছে। বিশেষজ্ঞদের মত জেনে কমিশন এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসবে। সেখানে একটি বৃহত্তর সমঝোতা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। কারণ এখন যেসব দল জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করে কেউ স্বৈরাচারী মানসিকতার নয়। তালগাছ আমার বলে একগুঁয়ে মনোভাব দেখাবে না বলে আমাদের বিশ্বাস।


তবে দলগুলোর মনে রাখা জরুরি, জুলাই সনদের সাথে একটি পুরো প্রজন্মের জীবন-মরণ জড়িত। জুলাই গণ-অভুত্থানকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া না হলে জেন-জি নামের যে তরুণ প্রজন্ম বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশ ও জাতিকে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের নরকযন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করেছে, তাদের জীবনের ওপর হুমকি থেকে যাবে। সেটি কোনোভাবে হতে দেয়া যাবে না। সঙ্গত কারণে বিষয়টিকে একগুঁয়েমি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। এটি অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা। যেখানে জীবনের প্রশ্ন জড়িত সেখানে অঙ্গহানি নিয়ে ভাবার সুযোগ কই! এখানে ব্যক্তিবিশেষের জীবন নয়, লাখো মানুষের জীবন জড়িত। তাই অঙ্গ কেটে ফেলে হলেও জীবন বাঁচানো কাণ্ডজ্ঞানের বিষয়। সুতরাং জুলাই সনদ সংবিধানের ঊর্ধ্বে স্থান পাচ্ছে কি না সে বিতর্ক যারা তোলেন তাদের জ্ঞানপাপী ছাড়া আর কিছু বলা যায় কি? আমরা বিষয়টি এ দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনায় নিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।



কমেন্ট বক্স
notebook

আলমডাঙ্গা বণিক সমিতির বিশেষ বর্ধিত সভা