বহু বিতর্কের পর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নতুন অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। এতে বাদ পড়েছে এলাকার সেই সমালোচিত পূর্বঘোষিত কমিটির সভাপতি মাহাবুব রহমান।
জানা গেছে, গত ৫ মে নিয়ম বহির্ভূতভাবে রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে মাহাবুর রহমানকে সভাপতি করা হয়। এরপরই বিদ্যালয়টিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। তাকে নৈতিক চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিভাবকসহ এলাকার সাধারণ জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সে সময় এলাকাবাসীর দাবি করেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার মত চরিত্রহীন কোন ব্যক্তি সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকাটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়াও বিগত দিনে তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাছাড়াও ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টির সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষ নিজেরা কয়েক দফা সভা সমাবেশ করে।
একপর্যায়ে সভাপতির অপসারণের দাবিতে তারা বিদ্যালয়ে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনসহ প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। লাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বিঅ-৬/৬৯৩৬/৩৭.১১.৪০৪১.৫০১.০১.৬.২০.২২১৩৯ নং স্মারকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেদারুল ইসলামকে বিদ্যালয়টির সভাপতি মোছা তাসলিমা সুলতানা সাধারণ শিক্ষক সদস্য, মো. জাহাঙ্গীর আলমকে অভিভাবক সদস্য ও প্রধান শিক্ষক মো. আতিয়ার রহমানকে সদস্যসচিব করে ৪ সদস্যের ৬ মাসের জন্য অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রকাশ থাকে যে, সম্প্রতি উপজেলার রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো তালিকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রথমে রেখে তিনজনের একটি তালিকা পাঠানো হয়। কিন্তু তালিকার ২য় নম্বরে থাকা ব্যক্তিকে অদৃশ্য শক্তির বলে মাহাবুর রহমানকে সভাপতি করা হয়। তিনি নিজে একজন আওয়ামী লীগের সক্রিয় লোক হয়েও বিগত ৫ আগস্টের পর বিএনপির একটি পক্ষকে ম্যানেজ করেন। তাদের ইশারায় তিনি এই রোস্তম আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতিও হয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রঘুনাথপুর এলাকার এক অভিভাবক বলেন, আগের সভাপতি মাহাবুর একজন চরিত্রহীন ব্যক্তি। তার পক্ষে অবস্থান নেন এলাকার কিছু বখাটে। যাদের বিরুদ্ধে এলাকায় চুরি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। মাহাবুবের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাকে সভাপতি বানানোর চেষ্টা করে ওই বখাটেরা। অবশেষে ইউএনও মহোদয় সভাপতি হওয়ায় এলাকার মানুষ ও অভিভাবকরা খুশি।