ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যালট যাবে সকালে, সেনা নামছে ২৯ ডিসেম্বর

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:৩০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহানগর, জেলা ও উপজেলা সদরসহ অধিকাংশ এলাকায় ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে দুর্গম পার্বত্য এলাকা, হাওর, চরাঞ্চলসহ যেসব কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব না, সেসব কেন্দ্রের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এতে ভোটে স্বচ্ছতা বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বলেছেন, এটা অনেকের দাবি ছিল। ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাওয়ায় স্বচ্ছতা বাড়াবে। অন্যদিকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে ২৯শে ডিসেম্বর থেকে সেনা মোতায়েনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে ব্যালট পেপার সকালে পাঠানোর বিষয়ে ইসি’র উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পরিপত্রটি ইতিমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, ব্যালট পেপার ভোটগ্রহণের দিন সকালে নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য যাচাই-বাছাই ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে ব্যালট পেপারও ভোটের আগের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। এরপর ভোটের আগের রাতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ভরেন বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যালট পেপার সকালে পাঠানো নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গতকাল বলেছেন, নির্বাচনের ফেয়ারনেস নিয়ে কোনো সংশয় থাকলে সকালে ব্যালট যাওয়ার ফলে তা কিছুটা হ্রাস পাবে। আর প্রত্যন্ত এলাকার বিষয়ে সিইসি বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা আমাদের কাছে অনুমোদন গ্রহণ করবেন। আমরা বিচার বিবেচনা করেই তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করে দেবো।
তাছাড়া যতদূর সম্ভব ব্যালট পেপারগুলো ভোটের দিন সকালে যাবে। পোলিং এজেন্টদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যালট বক্সগুলো দুই থেকে চারদিন আগেই যাবে। ব্যালট বক্স স্বচ্ছ কিনা (ভোটের সকালে) দেখে নিতে হবে। পোলিং এজেন্ট থাকতেই হবে। দেখে নিয়ে পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর করতে হবে। ব্যালট পেপার খালি ছিল ও সকালে ব্যালট গেছে- এটা সবাইকে দেখে নিতে হবে।
এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার ইসি’র উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করার নিমিত্তে নির্বাচন কমিশন সম্ভব সব আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ভোটগ্রহণের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের আওতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ২৯শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী টিম পাঠানো যেতে পারে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার-এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচন কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিম্নরূপ সহায়তা করবে:-সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক ডেপ্লোয়মেন্ট প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ এবং মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা ইসিকে অবহিত করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ব্যালট যাবে সকালে, সেনা নামছে ২৯ ডিসেম্বর

আপলোড টাইম : ১২:৩০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহানগর, জেলা ও উপজেলা সদরসহ অধিকাংশ এলাকায় ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে দুর্গম পার্বত্য এলাকা, হাওর, চরাঞ্চলসহ যেসব কেন্দ্রে সকালে ব্যালট পেপার পাঠানো সম্ভব না, সেসব কেন্দ্রের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এতে ভোটে স্বচ্ছতা বাড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। বলেছেন, এটা অনেকের দাবি ছিল। ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাওয়ায় স্বচ্ছতা বাড়াবে। অন্যদিকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে ২৯শে ডিসেম্বর থেকে সেনা মোতায়েনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে ব্যালট পেপার সকালে পাঠানোর বিষয়ে ইসি’র উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পরিপত্রটি ইতিমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, ব্যালট পেপার ভোটগ্রহণের দিন সকালে নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য যাচাই-বাছাই ও তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারকে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে ব্যালট পেপারও ভোটের আগের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। এরপর ভোটের আগের রাতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ভরেন বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যালট পেপার সকালে পাঠানো নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গতকাল বলেছেন, নির্বাচনের ফেয়ারনেস নিয়ে কোনো সংশয় থাকলে সকালে ব্যালট যাওয়ার ফলে তা কিছুটা হ্রাস পাবে। আর প্রত্যন্ত এলাকার বিষয়ে সিইসি বলেন, এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা আমাদের কাছে অনুমোদন গ্রহণ করবেন। আমরা বিচার বিবেচনা করেই তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করে দেবো।
তাছাড়া যতদূর সম্ভব ব্যালট পেপারগুলো ভোটের দিন সকালে যাবে। পোলিং এজেন্টদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যালট বক্সগুলো দুই থেকে চারদিন আগেই যাবে। ব্যালট বক্স স্বচ্ছ কিনা (ভোটের সকালে) দেখে নিতে হবে। পোলিং এজেন্ট থাকতেই হবে। দেখে নিয়ে পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর করতে হবে। ব্যালট পেপার খালি ছিল ও সকালে ব্যালট গেছে- এটা সবাইকে দেখে নিতে হবে।
এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এবং বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার ইসি’র উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করার নিমিত্তে নির্বাচন কমিশন সম্ভব সব আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ভোটগ্রহণের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের আওতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ২৯শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী টিম পাঠানো যেতে পারে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার-এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচন কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিম্নরূপ সহায়তা করবে:-সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক ডেপ্লোয়মেন্ট প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ এবং মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা ইসিকে অবহিত করতে হবে।