ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোলন কার্নিভালের ড্যান্সার ৯১ বছরের বৃদ্ধা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • / ৪৮ বার পড়া হয়েছে

বিস্ময় প্রতিবেদন:
জার্মানির কোলন শহরের একটি উল্লেখযোগ্য উৎসব কার্নিভাল। সেই উৎসবের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে থাকা কোরিওগ্রাফার ও ড্যান্সার বিগি ফানেনশ্রাইবার। তার বয়স ৯১। এখনও তিনি বিভিন্ন ড্যান্স গ্রুপকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘ড্যান্স আমার কাছে আত্মার ভাষা। যখন একা থাকি তখনও ড্যান্স আমার সঙ্গে থাকে। অনেক ছোট বয়স থেকে এটা আমি করছি।” কোলন কার্নিভালেরঅবিচ্ছেদ্য অংশ ড্যান্স, আর ‘ফুঙ্কেনমারিশেন’। আর ফুঙ্কেনমারিশেন মানেই অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। এক্ষেত্রে বিগি ফানেনশ্রাইবারের অবদান সবচেয়ে বেশি। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ১৯৭০ এর দশকে তিনি ফুঙ্কেনমারিশেনের বিখ্যাত ‘উপরে তুলে ধরা ও ছুঁড়ে মারার’ বিষয়টি চালু করেন। এরপর থেকে তাকে মারিশেনের জননী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘সমারসল্ট থ্রো, একার্টে থ্রো-ড্যান্সের প্রতি আমার উৎসাহ আমি কোলন কার্নিভালে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।” তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের নিজে করে দেখান, কীভাবে ঠিকমতো নাচতে হবে। যেমন এখানে লুফটমারিন ড্যান্স গ্রুপকে দেখাচ্ছেন। ধ্রুপদি ব্যালে ড্যান্স থেকে বিগি তার কোরিওগ্রাফির অনুপ্রেরণা পান। ১৯৪০ এর দশকের শেষদিকে তিনি কোলন অপেরায় ড্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে দক্ষিণ জার্মানির ফ্রাইবুর্গের প্রিমা ব্যালেরিনায়ও কাজ করেন বিগি। ১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে ইউরোপ ও আমেরিকা চষে বেড়িয়েছেন। তবে শুরু থেকেই কার্নিভালের প্রতি তার ভালোবাসাটা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোলন শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ওই অবস্থায় বিগি ১৯৪৭ সালে বিধ্বস্ত কোলন অপেরার কাছে প্রতিদিন বিকালে গৃহিনীদের নিয়ে নাচের আয়োজন করেছেন। এখন ওই জায়গায় একটি হোটেল হয়েছে। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘আমাদের মতো কোলনের মানুষের কাছে ওটা সবচেয়ে সুন্দর জিনিস ছিল। কারণ ভয়াবহ সেই যুদ্ধের পর অবশেষে আমরা কার্নিভাল উদযাপন করতে পেরেছিলাম। আবার আনন্দ করতে পেরেছিলাম। গান গাইতে পেরেছিলাম, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছিলাম। আমার মতো কোলনের মেয়ের কাছে কার্নিভাল হচ্ছে জীবনের পরশমণি।” পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর বিগি ফানেনশ্রাইবার পুরোপুরি কার্নিভালের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। কার্নিভালের সব ইভেন্ট এখনও পুরুষরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফানেনশ্রাইবার জানান, ‘‘১৯৭০ ও ৬০ এর দশকে কোলন কার্নিভালে একজন নারী কোনো বড় ভূমিকা রাখতে পারতেন না। কিন্তু সেইসময় পুরুষেরা আবিষ্কার করেছিল-নিজের প্রশংসা নিজে করতে চাই না- আমার গ্রুপ ভালো পারফর্মেন্স করছিল।” শৃঙ্খলা ও শক্ত ইচ্ছা এখনও বিগির চরিত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য। এখনো প্রায় প্রতিদিন সুযোগ পেলে তিনি অনুশীলন করেন। আরেকবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, তার বয়স কিন্তু ৯১! বিগি ফানেনশ্রাইবার প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, বেশি বয়সেও জীবন পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা সম্ভব। সূত্র : ডয়চে ভেলে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কোলন কার্নিভালের ড্যান্সার ৯১ বছরের বৃদ্ধা

আপলোড টাইম : ০৭:৫২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩

বিস্ময় প্রতিবেদন:
জার্মানির কোলন শহরের একটি উল্লেখযোগ্য উৎসব কার্নিভাল। সেই উৎসবের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে থাকা কোরিওগ্রাফার ও ড্যান্সার বিগি ফানেনশ্রাইবার। তার বয়স ৯১। এখনও তিনি বিভিন্ন ড্যান্স গ্রুপকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘ড্যান্স আমার কাছে আত্মার ভাষা। যখন একা থাকি তখনও ড্যান্স আমার সঙ্গে থাকে। অনেক ছোট বয়স থেকে এটা আমি করছি।” কোলন কার্নিভালেরঅবিচ্ছেদ্য অংশ ড্যান্স, আর ‘ফুঙ্কেনমারিশেন’। আর ফুঙ্কেনমারিশেন মানেই অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। এক্ষেত্রে বিগি ফানেনশ্রাইবারের অবদান সবচেয়ে বেশি। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ১৯৭০ এর দশকে তিনি ফুঙ্কেনমারিশেনের বিখ্যাত ‘উপরে তুলে ধরা ও ছুঁড়ে মারার’ বিষয়টি চালু করেন। এরপর থেকে তাকে মারিশেনের জননী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘সমারসল্ট থ্রো, একার্টে থ্রো-ড্যান্সের প্রতি আমার উৎসাহ আমি কোলন কার্নিভালে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি।” তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের নিজে করে দেখান, কীভাবে ঠিকমতো নাচতে হবে। যেমন এখানে লুফটমারিন ড্যান্স গ্রুপকে দেখাচ্ছেন। ধ্রুপদি ব্যালে ড্যান্স থেকে বিগি তার কোরিওগ্রাফির অনুপ্রেরণা পান। ১৯৪০ এর দশকের শেষদিকে তিনি কোলন অপেরায় ড্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে দক্ষিণ জার্মানির ফ্রাইবুর্গের প্রিমা ব্যালেরিনায়ও কাজ করেন বিগি। ১৯৬০ এর দশকের শেষদিকে ইউরোপ ও আমেরিকা চষে বেড়িয়েছেন। তবে শুরু থেকেই কার্নিভালের প্রতি তার ভালোবাসাটা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোলন শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ওই অবস্থায় বিগি ১৯৪৭ সালে বিধ্বস্ত কোলন অপেরার কাছে প্রতিদিন বিকালে গৃহিনীদের নিয়ে নাচের আয়োজন করেছেন। এখন ওই জায়গায় একটি হোটেল হয়েছে। ফানেনশ্রাইবার বলেন, ‘‘আমাদের মতো কোলনের মানুষের কাছে ওটা সবচেয়ে সুন্দর জিনিস ছিল। কারণ ভয়াবহ সেই যুদ্ধের পর অবশেষে আমরা কার্নিভাল উদযাপন করতে পেরেছিলাম। আবার আনন্দ করতে পেরেছিলাম। গান গাইতে পেরেছিলাম, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছিলাম। আমার মতো কোলনের মেয়ের কাছে কার্নিভাল হচ্ছে জীবনের পরশমণি।” পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর বিগি ফানেনশ্রাইবার পুরোপুরি কার্নিভালের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। কার্নিভালের সব ইভেন্ট এখনও পুরুষরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ফানেনশ্রাইবার জানান, ‘‘১৯৭০ ও ৬০ এর দশকে কোলন কার্নিভালে একজন নারী কোনো বড় ভূমিকা রাখতে পারতেন না। কিন্তু সেইসময় পুরুষেরা আবিষ্কার করেছিল-নিজের প্রশংসা নিজে করতে চাই না- আমার গ্রুপ ভালো পারফর্মেন্স করছিল।” শৃঙ্খলা ও শক্ত ইচ্ছা এখনও বিগির চরিত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য। এখনো প্রায় প্রতিদিন সুযোগ পেলে তিনি অনুশীলন করেন। আরেকবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, তার বয়স কিন্তু ৯১! বিগি ফানেনশ্রাইবার প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, বেশি বয়সেও জীবন পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা সম্ভব। সূত্র : ডয়চে ভেলে।