ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন মানুষের খাদ্য নিয়ে খেলতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৪ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে মানুষের খাদ্য নিয়ে কোনো রকম খেলতে না পারে সেজন্য সরকার যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। মজুত যাতে করতে না পারে সেজন্য কী কী করণীয় আগেই জানিয়েছি। তার পরও যদি কেউ ইচ্ছাকৃত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু সরকারই সব দেখবে তা নয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ে সবাই সহযোগিতা করলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য অসৎ উপায়ে বাড়াতে পারবে না। জনগণকে আহ্বান করব, তারা এ বিষয়ে নজর রাখলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। গতকাল বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আলী আজমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কোনো রকম গুজবে কান দেবেন না। সেই সঙ্গে বলতে চাই, বহু পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। আমরা পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে চাই। নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে চাই।
রমজানে নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে: আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করছি, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে ‘লাগাম টানা’ সম্ভব হবে। পবিত্র রমজান মাসে মূল্যস্ফীতিও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দরিদ্র পরিবার, বয়স্ক, বিধবা ও স্বামীর দ্বারা নিগৃহীত নারীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আসবে বলে মনে করি। ইতিমধ্যে আমরা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি। বিশ্ববাজারে কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে বিভিন্ন শুল্কছাড় দেওয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান জানান, দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটেছে। তাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি জ্বালানি, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। ফলে গ্যাস চাহিদার সরবরাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসময় তিনি জ্বালানি খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
রমজানে তারাবি-সেহিরর সময় বিদ্যুতের সংকট হবে না:
নাটোর-১ আসনের এমপি আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজানে তারাবির নামাজ ও সেহিরর সময় বিদ্যুতের সমস্যা হবে না। বরং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সময় যদি প্রয়োজন হয়, দিনের কোনো এক সময়, যখন চাহিদা কম থাকে তখন দুই-তিন ঘণ্টা লোডশেডিং করা যায়। আমাদের প্রচেষ্টা সেভাবেই থাকবে।
মাঝে মাঝে লোডশেডিং থাকা ভালো:
নাটোরের এমপি আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে সংসদনেতা আরো বলেন, আমরা অনেক অর্থ ব্যয় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। ভর্তুকি অর্থে তা বিতরণ করি। একসময় দেশে ১০/১২ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই। তবে আমার মনে হয়, মাঝে মাঝে এটি (লোডশেডিং) থাকা ভালো। নাহলে মানুষ অতীতকে ভুলে যাবে। অন্তত উপলব্ধি করবে, কোথায় ছিলাম আর কোথায় আছি।
কোনো একটা জিনিস না খেলে রোজা রাখা যাবে না-এই মানসিকতা বদলাতে হবে
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্য ঠিক রাখতে আমরা মোবাইল কোর্টসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তবে একটা কথা বলি, রমজান হচ্ছে কৃচ্ছ সাধনের মাস। রমজানে মানুষ যেন কম খাবার গ্রহণ করে, খাদ্য সংরক্ষণ করে। কিন্তু আমাদের এখানে দেখি খাবার গ্রহণের বিষয়টি একটু বেড়েই যায়। প্রকৃতপক্ষে সেজন্য তো রমজান নয়। রমজান হচ্ছে সংযমের মাস। বিশেষ কোনো একটা জিনিস না খেলে হবে না, রোজা রাখা যাবে না বা ইফতার করা যাবে না—এই মানসিকতাটা বদলাতে হবে। আমাদের দেশে যে খাদ্য পাওয়া যায় সেটা দিয়েই রোজা খুলতে পারি।
দুর্নীতির কারণে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, দুর্নীতি দমনে সরকার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ নিয়েছে। কারণ, দুর্নীতির কারণে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। তবে কেবল আইন প্রয়োগ ও শাস্তির মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি মূলোৎপাটন করা হবে।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার হবে:
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই, সেগুলোতে পর্যায়ক্রমে শহিদ মিনার স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন মানুষের খাদ্য নিয়ে খেলতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী

আপলোড টাইম : ১১:৩৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

সমীকরণ প্রতিবেদন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে মানুষের খাদ্য নিয়ে কোনো রকম খেলতে না পারে সেজন্য সরকার যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। মজুত যাতে করতে না পারে সেজন্য কী কী করণীয় আগেই জানিয়েছি। তার পরও যদি কেউ ইচ্ছাকৃত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু সরকারই সব দেখবে তা নয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ে সবাই সহযোগিতা করলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য অসৎ উপায়ে বাড়াতে পারবে না। জনগণকে আহ্বান করব, তারা এ বিষয়ে নজর রাখলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। গতকাল বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আলী আজমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কোনো রকম গুজবে কান দেবেন না। সেই সঙ্গে বলতে চাই, বহু পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। আমরা পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে চাই। নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে চাই।
রমজানে নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে: আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করছি, রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে ‘লাগাম টানা’ সম্ভব হবে। পবিত্র রমজান মাসে মূল্যস্ফীতিও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দরিদ্র পরিবার, বয়স্ক, বিধবা ও স্বামীর দ্বারা নিগৃহীত নারীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আসবে বলে মনে করি। ইতিমধ্যে আমরা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি। বিশ্ববাজারে কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে বিভিন্ন শুল্কছাড় দেওয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান জানান, দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটেছে। তাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি জ্বালানি, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। ফলে গ্যাস চাহিদার সরবরাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসময় তিনি জ্বালানি খাতের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
রমজানে তারাবি-সেহিরর সময় বিদ্যুতের সংকট হবে না:
নাটোর-১ আসনের এমপি আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজানে তারাবির নামাজ ও সেহিরর সময় বিদ্যুতের সমস্যা হবে না। বরং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সময় যদি প্রয়োজন হয়, দিনের কোনো এক সময়, যখন চাহিদা কম থাকে তখন দুই-তিন ঘণ্টা লোডশেডিং করা যায়। আমাদের প্রচেষ্টা সেভাবেই থাকবে।
মাঝে মাঝে লোডশেডিং থাকা ভালো:
নাটোরের এমপি আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে সংসদনেতা আরো বলেন, আমরা অনেক অর্থ ব্যয় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। ভর্তুকি অর্থে তা বিতরণ করি। একসময় দেশে ১০/১২ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই। তবে আমার মনে হয়, মাঝে মাঝে এটি (লোডশেডিং) থাকা ভালো। নাহলে মানুষ অতীতকে ভুলে যাবে। অন্তত উপলব্ধি করবে, কোথায় ছিলাম আর কোথায় আছি।
কোনো একটা জিনিস না খেলে রোজা রাখা যাবে না-এই মানসিকতা বদলাতে হবে
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপণ্যের মূল্য ঠিক রাখতে আমরা মোবাইল কোর্টসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তবে একটা কথা বলি, রমজান হচ্ছে কৃচ্ছ সাধনের মাস। রমজানে মানুষ যেন কম খাবার গ্রহণ করে, খাদ্য সংরক্ষণ করে। কিন্তু আমাদের এখানে দেখি খাবার গ্রহণের বিষয়টি একটু বেড়েই যায়। প্রকৃতপক্ষে সেজন্য তো রমজান নয়। রমজান হচ্ছে সংযমের মাস। বিশেষ কোনো একটা জিনিস না খেলে হবে না, রোজা রাখা যাবে না বা ইফতার করা যাবে না—এই মানসিকতাটা বদলাতে হবে। আমাদের দেশে যে খাদ্য পাওয়া যায় সেটা দিয়েই রোজা খুলতে পারি।
দুর্নীতির কারণে সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, দুর্নীতি দমনে সরকার ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ নিয়েছে। কারণ, দুর্নীতির কারণে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। তবে কেবল আইন প্রয়োগ ও শাস্তির মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে দুর্নীতি মূলোৎপাটন করা হবে।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার হবে:
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই, সেগুলোতে পর্যায়ক্রমে শহিদ মিনার স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।