ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে আ.লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর গুঞ্জন!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৬৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই কি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হচ্ছে এবার? গুঞ্জন উঠেছে তেমনই। থাকতে পারে ‘বিদ্রোহী’ বা ডামি প্রার্থী। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানের সাথে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মতবিনিময় সভার পরই চুয়াডাঙ্গায় এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য এবার হয়ত থাকতে পারে ছাড়। এমন তথ্যই পাওয়া গেছে মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর কাছ থেকে। একই সাথে মতবিনিময় সভার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গুঞ্জনে উঠছে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কথা। শোনা যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই দু-একজন বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারে।

জানা গেছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিরোধী দল না আসা সাপেক্ষে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করতে প্রয়োজনে আসন উন্মুক্ত করা হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পরে। সেক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান।

সূত্র মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্যান্য দলের কেউ প্রার্থী হলে তাকেও সহযোগী ও উৎসাহ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যদি কোনো আসনে জয়ী হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় প্রধান জানিয়েছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন। আরেক প্রার্থী জানান, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে প্রয়োজনে ডামি প্রার্থী রাখতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতেও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

সভায় উপস্থিত একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেন, ‘নেত্রী বলেছেন, আপনারা সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রার্থী। এর মধ্যে থেকে আপনারাই আমাকে ৩০০ নাম দেন। পরে উপস্থিত সবাই নেত্রীকে দায়িত্ব দেন। আরেকটা হচ্ছে, নেত্রী ডামি প্রার্থী রাখতে বলছেন। আবার যে কেউ চাইলে নির্বাচন করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন।’

এদিকে, এই মতবিনিমিয় সভার পরই চুয়াডাঙ্গায় কারো কারো মুখে গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নাম। অনেক নামই আসছে ভেসে। তবে ঠিক করে এখনি বলা মুশকিল কী হবে এবারের নির্বাচনে। দলীয় ছাড়ে কি সত্যিই কেউ কেউ মাথা খাড়া করে দাঁড়াবে। নাকি কয়েকজন প্রত্যাশীর হয়ে একজন দুজন বিদ্রোহী মাঠে থাকবেন। তবে গতকাল রোববার দুপুরের দিকে জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের পক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার নিকট থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতা-কর্মীরা কিছু না বললেও গুঞ্জনে আছে তিনি স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।

এছাড়াও, চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন ১৬ জন। বাকি ১৫ জনের মধ্যে থেকে আরও দু-একজন প্রার্থী থাকতে পারে বলেও গুঞ্জন উঠেছে। বিশেষ করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর নামও শোনা যাচ্ছে। গুঞ্জনে রয়েছে তিনি হয়ত হতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

অপর দিকে, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদের নাম শোনা যাচ্ছে। গুঞ্জনে রয়েছে তার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার খবর। তবে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন, সেটাও মানতে নারাজ অনেক দলীয় নেতা-কর্মী। চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরও কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে নিশ্চিত করে বলা যাবে না, আদৌও কি কোনো গুঞ্জন সত্যি হবে?

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে আ.লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর গুঞ্জন!

আপলোড টাইম : ০৮:১১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই কি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হচ্ছে এবার? গুঞ্জন উঠেছে তেমনই। থাকতে পারে ‘বিদ্রোহী’ বা ডামি প্রার্থী। ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানের সাথে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মতবিনিময় সভার পরই চুয়াডাঙ্গায় এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য এবার হয়ত থাকতে পারে ছাড়। এমন তথ্যই পাওয়া গেছে মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর কাছ থেকে। একই সাথে মতবিনিময় সভার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গুঞ্জনে উঠছে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কথা। শোনা যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই দু-একজন বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারে।

জানা গেছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিরোধী দল না আসা সাপেক্ষে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করতে প্রয়োজনে আসন উন্মুক্ত করা হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যেন নির্বাচিত হতে না পরে। সেক্ষেত্রে একাধিক ডামি প্রার্থী রাখতে মত দেন দলীয় প্রধান।

সূত্র মতে, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে উৎসব ও প্রতিযোগিতামূলক করতে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্যান্য দলের কেউ প্রার্থী হলে তাকেও সহযোগী ও উৎসাহ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রার্থী জানান, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ যদি কোনো আসনে জয়ী হয়, তাহলে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলীয় প্রধান জানিয়েছেন। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা যে কোনো ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন বলেও নির্দেশনা দিয়েছেন। আরেক প্রার্থী জানান, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে প্রয়োজনে ডামি প্রার্থী রাখতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতেও নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

সভায় উপস্থিত একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেন, ‘নেত্রী বলেছেন, আপনারা সাড়ে তিন হাজারের মতো প্রার্থী। এর মধ্যে থেকে আপনারাই আমাকে ৩০০ নাম দেন। পরে উপস্থিত সবাই নেত্রীকে দায়িত্ব দেন। আরেকটা হচ্ছে, নেত্রী ডামি প্রার্থী রাখতে বলছেন। আবার যে কেউ চাইলে নির্বাচন করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন।’

এদিকে, এই মতবিনিমিয় সভার পরই চুয়াডাঙ্গায় কারো কারো মুখে গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নাম। অনেক নামই আসছে ভেসে। তবে ঠিক করে এখনি বলা মুশকিল কী হবে এবারের নির্বাচনে। দলীয় ছাড়ে কি সত্যিই কেউ কেউ মাথা খাড়া করে দাঁড়াবে। নাকি কয়েকজন প্রত্যাশীর হয়ে একজন দুজন বিদ্রোহী মাঠে থাকবেন। তবে গতকাল রোববার দুপুরের দিকে জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের পক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার নিকট থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। নঈম হাসান জোয়ার্দ্দারের নেতা-কর্মীরা কিছু না বললেও গুঞ্জনে আছে তিনি স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।

এছাড়াও, চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন ১৬ জন। বাকি ১৫ জনের মধ্যে থেকে আরও দু-একজন প্রার্থী থাকতে পারে বলেও গুঞ্জন উঠেছে। বিশেষ করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর নামও শোনা যাচ্ছে। গুঞ্জনে রয়েছে তিনি হয়ত হতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

অপর দিকে, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদের নাম শোনা যাচ্ছে। গুঞ্জনে রয়েছে তার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার খবর। তবে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন, সেটাও মানতে নারাজ অনেক দলীয় নেতা-কর্মী। চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরও কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে নিশ্চিত করে বলা যাবে না, আদৌও কি কোনো গুঞ্জন সত্যি হবে?