বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

ঝিনাইদহে কিশোরের ওপর হামলা, মামলা নেয়নি পুলিশ

ওসির বেফাঁস মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী পরিবার
  • আপলোড তারিখঃ ১৬-০৬-২০২৫ ইং
ঝিনাইদহে কিশোরের ওপর হামলা, মামলা নেয়নি পুলিশ

ফুটবল মাঠে ঝগড়ার জেরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামে আব্দুস সামাদ (১৬) নামের এক কিশোরকে গণপিটুনি দেওয়ার তিন দিনেও মামলা নেয়নি ঝিনাইদহ থানা-পুলিশ। ওই কিশোরের মা সাজেদা খাতুন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও তদন্ত কর্মকর্তা উল্টো স্থানীয়দের মাধ্যমে সমঝোতা ও সালিস বৈঠকের মাধ্যমে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন।  


অপর দিকে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা রেকর্ড না করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ভিকটিমের মাথা ফাটেনি বা কেটেও যায়নি। থ্যাঁতলানো মাইর হয়েছে। মামলা রেকর্ড করলে তো ৩২৪ বা ৩২৬ ধারা আসবে না। মাথা না ফাটলে মামলা নেব কীভাবে? ওসির এমন মন্তব্যে বাদী ও ভিকটিমের পরিবারের হতাশা নেমে এসেছে। গ্রামবাসী বলছে, মানুষ বিপদে পড়ে থানায় যায়। পুলিশ যদি বিপদগ্রস্ত মানুষের কথা আমলে না নেয় তাহলে মানুষ যাবে কোথায়?


জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলী ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি গ্রুপ লাঠিসোঁটা নিয়ে কিশোর আব্দুস সামাদের ওপর হামলা চালায়। হামলা ও গণপিটুনিতে গুরুতর আহত কিশোর ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভিকটিমের ডান চোখ ও মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। গণপিটুনির শিকার কিশোর আব্দুস সামাদ (১৬) কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মালেকের ছেলে। 


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে ফুটবল মাঠে তরুণ কিশোরদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেলেও সন্ধ্যার দিকে কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আলী ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন দলবল নিয়ে কিশোর আব্দুস সামাদকে মারধর করে। হামলায় মিলেমিশে অংশ নেয় স্থানীয় কৃষক দল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জনাব আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি লিটন মিয়া, জাকির হোসেন, নাহিয়ান হোসেন, ইমরান ও রিণ্টু। কিশোর আব্দুস সামাদ অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে ফেলে রেখে হামলাকারীরা চলে যায়। 


এই ঘটনায় রাতেই ঝিনাইদহ সদর থানায় ভিকটিম সামাদের মা সাজেদা খাতুন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নামে অভিযোগ দেন। অভিযোগ দায়েরে পর সদর থানার এসআই সাহাদাত হোসেন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান। বাদীর অভিযোগ মামলা রেকর্ড না করে এসআই সাহাদত সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতার জন্য উভয়পক্ষকে তাগিদ দিচ্ছেন। 


এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। স্থানীয় ভাবে সমঝোতা করলে ভালো হবে। কারণ ভিকটিমের মাথা ফাটেওনি কাটেওনি। থ্যাঁতলানো মাইর হয়েছে। এমন আঘাতে তো ৩২৪ বা ৩২৬ ধারা আসবে না। যে কারণে মামলা রেকর্ড না করে সমঝোতা করার জন্য বলেছি।



কমেন্ট বক্স
notebook

নৈশপ্রহরী না থাকায় নিরাপত্তাহীন দত্তনগর হাইস্কুল