দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা এখন মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহের কবলে। কয়েকদিন ধরেই তীব্র রোদে ঝলসে উঠছে চারপাশ। এতে জেলার জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিকেল ৬টায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রিতে, যা ছিল সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল মাত্র ৫১ শতাংশ, যা পরিস্থিতিকে আরও বেশি ভোগান্তিকর করে তোলে।

তীব্র গরমে জেলা শহর ও আশপাশের এলাকার রাজপথে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মানুষের চলাচল কিছুটা দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড রোদের তাপে মানুষ ছায়া খুঁজে ফিরছে। বিশেষ করে রিকশা-ভ্যানচালক, নির্মাণ শ্রমিক ও দিনমজুররা রোদে পুড়ে কাজ করছেন জীবন-জীবিকার তাগিদে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের শ্রমজীবী সালাউদ্দিন বলেন, ‘এ সপ্তাহ ধরেই তীব্র গরম পড়ছে। আজ (গতকাল) রোদের তীব্রতা আরও বেশি। বেলা বাড়লে শরীর চলতে চায় না। কাজ করাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ক্লান্তিতে দুপুরের আগেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’ একই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ভ্যানচালক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টার পর ভ্যানে চড়তে লোকই মেলে না। রাস্তায় মানুষও কমে যায়। তবে বসে থাকলে তো চলবে না, সংসার তো চালাতে হবে। তাই রোদের মধ্যেও ভ্যান নিয়ে ঘুড়তে হচ্ছে যদি দু-একটা ভাড়া পাওয়া যায়।’

এদিকে, গরমে কিছুটা স্বস্তি মিলছে আখের রস ও ডাব বিক্রেতাদের। চুয়াডাঙ্গা কোর্ট মোড় এলাকার ডাব বিক্রেতা মোস্তফা জানান, ‘গত তিন দিনে ডাবের চাহিদা বেড়েছে। গরম যত বাড়বে, বিক্রিও তত বাড়বে। তবে দুপুরের পর থেকে লোকজন বাজারে কম আসে। ডাবের বিক্রি বাড়লেও গরম সহ্য করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার (আজ) তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে ১৩ মে পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে। তবে ১৪ মে’ থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করতে পারে।’ আবহাওয়ার এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন চুয়াডাঙ্গার বাসিন্দাদের গরমের তীব্রতা সহ্য করে চলতে হবে। তবে বৃষ্টির আশার খবরে কিছুটা স্বস্তি খুঁজছেন অনেকেই।