ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষ এখণ ভুট্টার গুদাম!

প্রতিবেদক, মহেশপুর:
  • আপলোড টাইম : ১০:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের মহেশপুর সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাডাঙ্গা মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার বেশকিছু বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠ ভুট্টা ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। ব্যবসয়ীরা শ্রেণিকক্ষ গোডাউন ও খেলার মাঠ ভুট্টা শুকানোর কাজে ব্যবহার করছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে একাধিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠে দেখা গেছে, সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাডাঙ্গা মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটির খেলার মাঠে ভুট্টা শুকানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ মাঠজুড়ে ভুট্টা শুকানো হচ্ছে। এছাড়াও ভুট্টা ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকার শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহারের কারণে জনসাধারণের মাঝে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সলেমানপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে ভুট্টা ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ ও মোবারক বেশ কিছুদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ভুট্টা শুকাচ্ছেন। এতে করে এলাকায় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাপটে কেউ কিছু বলতেও সাহস পায় না। স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ উদ্ধার করে খেলাধুলার উপযোগী করার দাবি জানান। অভিযোগ রয়েছে, মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ ভুট্টা ব্যবসায়ীরা টাকার বিনিময়ে ভাড়া পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম রেজার দাবি করেন, খেলার মাঠটির কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকানা হওয়ায় তারা ভুট্টা ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ভুট্টা ব্যবসায়ী জাহিদ ও আসাদ বিদ্যালের মাঠ ও কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ ভাড়া নিয়ে ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভুট্টা শুকিয়ে বিক্রয় করছেন। এতে করে এলাকার কিশোরদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, বিদ্যালের মাঠ বা শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দেয়া হয়নি। তবে ভুট্টা শুকানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে মাত্র। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল বলেণ, রাজনৈতিক চাপের কারণে খেলার মাঠে ভুট্টা শুকানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। কারণ ভুট্টা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। শুধু তাই নয়, তারা অনেক ক্ষমতাবান। তাই আমরা তাদের কাছে একেবারেই নিরুপায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

স্কুলের শ্রেণিকক্ষ এখণ ভুট্টার গুদাম!

আপলোড টাইম : ১০:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

ঝিনাইদহের মহেশপুর সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাডাঙ্গা মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার বেশকিছু বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠ ভুট্টা ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে। ব্যবসয়ীরা শ্রেণিকক্ষ গোডাউন ও খেলার মাঠ ভুট্টা শুকানোর কাজে ব্যবহার করছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে একাধিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠে দেখা গেছে, সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঘাডাঙ্গা মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটির খেলার মাঠে ভুট্টা শুকানোর চাতালে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণ মাঠজুড়ে ভুট্টা শুকানো হচ্ছে। এছাড়াও ভুট্টা ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকার শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ গুদাম ঘর হিসেবে ব্যবহারের কারণে জনসাধারণের মাঝে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সলেমানপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, টাকার বিনিময়ে ভুট্টা ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ ও মোবারক বেশ কিছুদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ভুট্টা শুকাচ্ছেন। এতে করে এলাকায় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা একেবারেই বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাপটে কেউ কিছু বলতেও সাহস পায় না। স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ উদ্ধার করে খেলাধুলার উপযোগী করার দাবি জানান। অভিযোগ রয়েছে, মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ ভুট্টা ব্যবসায়ীরা টাকার বিনিময়ে ভাড়া পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম রেজার দাবি করেন, খেলার মাঠটির কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকানা হওয়ায় তারা ভুট্টা ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ভুট্টা ব্যবসায়ী জাহিদ ও আসাদ বিদ্যালের মাঠ ও কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ ভাড়া নিয়ে ১ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভুট্টা শুকিয়ে বিক্রয় করছেন। এতে করে এলাকার কিশোরদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

মহিউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান জানান, বিদ্যালের মাঠ বা শ্রেণিকক্ষ ভাড়া দেয়া হয়নি। তবে ভুট্টা শুকানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে মাত্র। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল বলেণ, রাজনৈতিক চাপের কারণে খেলার মাঠে ভুট্টা শুকানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না। কারণ ভুট্টা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় রাজনীতির সাথে জড়িত। শুধু তাই নয়, তারা অনেক ক্ষমতাবান। তাই আমরা তাদের কাছে একেবারেই নিরুপায়।