ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় ফেসবুকে ছবি ও টিকটকে ভিডিও ছাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৬৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুশি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় পরিবারের সদস্যরা খুশিকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত খুশি দৌলতদিয়াড় স্কুলপাড়ার ওবায়দুল ইসলামের স্ত্রী ও জীবননগর উপজেলার আনসারবাড়ীয়া গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের মেয়ে। ওবাইদুলের দাবি, ফেসবুকে ছবি ও টিকটক ভিডিও ছাড়া নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে খুশির মনোমালিন্য চলছিল। এর জেরেই খুশি আত্মহত্যা করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওবায়দুলের বড় ভাই মাসিদুল বাড়ির পিছন দিকের আগাছা পরিষ্কারের সময় ঘরের মধ্যে খুশিকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রথম দেখেন। তিনি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। এসময় দ্রুত ঘরের দরজা কেটে খুশিকে নিচে নামিয়ে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত খুশি মা মোমেনা খাতুন বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সুখের সংসারে ফুটফুটে একটি মেয়ে সন্তানও আছে। দুপুরে খবর পাই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

খুশির স্বামী ওবায়দুল বলেন, ‘আমি পাড়ার সব থেকে সুখী ছিলাম। পাঁচ মাস আগে খুশিকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দিই ও বাড়িতে ইন্টারনেট লাইন নিই। এরপর থেকে আমার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। খুশি বিভিন্ন সময় ফেসবুকে নিজের ছবি ও ভিডিও ছাড়তো। যা আমি ও আমার মা পছন্দ করতাম না। এ নিয়ে খুশির সঙ্গে আমার ও মায়ের মনোমালিন্য হয়। গত শনিবার খুশিকে নিয়ে আমঝুপি সূর্যমুখী ফুল বাগানে যাওয়ার কথা থাকলেও নিয়ে যেতে পারিনি। এরপর থেকে সে আমার সঙ্গে ঠিক মতো কথাও বলছিল না। আজ (গতকাল) সকালে আমি কাজে চলে যায়, তখন সবকিছু ঠিকই ছিল। দোকানে কাজ করার সময় আমার এক বন্ধু জানায়, খুশি হাসপাতালে ভর্তি। ওই আমাকে দোকান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আনে। এসে দেখি খুশি মারা গেছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাপলা খাতুন বলেন, ‘জরুরি বিভাগে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। দুপুর ১২টার পর খুশিকে জরুরি বিভাগে আনে স্বজনরা। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে খুশির গলায় ফাঁস জাতীয় চিহ্ন পাওয়া গেছে। অপমৃত্যু হওয়ায় বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে খুশি খাতুন আত্মহত্যা করেছে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সদর হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় ফেসবুকে ছবি ও টিকটকে ভিডিও ছাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব

আপলোড টাইম : ১১:৩৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলতদিয়াড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুশি খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় পরিবারের সদস্যরা খুশিকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত খুশি দৌলতদিয়াড় স্কুলপাড়ার ওবায়দুল ইসলামের স্ত্রী ও জীবননগর উপজেলার আনসারবাড়ীয়া গ্রামের সিদ্দিক হোসেনের মেয়ে। ওবাইদুলের দাবি, ফেসবুকে ছবি ও টিকটক ভিডিও ছাড়া নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে খুশির মনোমালিন্য চলছিল। এর জেরেই খুশি আত্মহত্যা করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওবায়দুলের বড় ভাই মাসিদুল বাড়ির পিছন দিকের আগাছা পরিষ্কারের সময় ঘরের মধ্যে খুশিকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রথম দেখেন। তিনি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। এসময় দ্রুত ঘরের দরজা কেটে খুশিকে নিচে নামিয়ে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত খুশি মা মোমেনা খাতুন বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সুখের সংসারে ফুটফুটে একটি মেয়ে সন্তানও আছে। দুপুরে খবর পাই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

খুশির স্বামী ওবায়দুল বলেন, ‘আমি পাড়ার সব থেকে সুখী ছিলাম। পাঁচ মাস আগে খুশিকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দিই ও বাড়িতে ইন্টারনেট লাইন নিই। এরপর থেকে আমার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। খুশি বিভিন্ন সময় ফেসবুকে নিজের ছবি ও ভিডিও ছাড়তো। যা আমি ও আমার মা পছন্দ করতাম না। এ নিয়ে খুশির সঙ্গে আমার ও মায়ের মনোমালিন্য হয়। গত শনিবার খুশিকে নিয়ে আমঝুপি সূর্যমুখী ফুল বাগানে যাওয়ার কথা থাকলেও নিয়ে যেতে পারিনি। এরপর থেকে সে আমার সঙ্গে ঠিক মতো কথাও বলছিল না। আজ (গতকাল) সকালে আমি কাজে চলে যায়, তখন সবকিছু ঠিকই ছিল। দোকানে কাজ করার সময় আমার এক বন্ধু জানায়, খুশি হাসপাতালে ভর্তি। ওই আমাকে দোকান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আনে। এসে দেখি খুশি মারা গেছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাপলা খাতুন বলেন, ‘জরুরি বিভাগে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। দুপুর ১২টার পর খুশিকে জরুরি বিভাগে আনে স্বজনরা। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে খুশির গলায় ফাঁস জাতীয় চিহ্ন পাওয়া গেছে। অপমৃত্যু হওয়ায় বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে।’

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে খুশি খাতুন আত্মহত্যা করেছে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সদর হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।