ইপেপার । আজশুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

ঢেঁকিকে এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা, কঠিন চ্যালেঞ্জে নৌকা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৭৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
আগামীকাল ৭ জানুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে প্রশাসনের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে সকল প্রস্তুতি। গতকাল শুক্রবার আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ১৭৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১০৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ভোটের সমীকরণ জটিল হয়ে উঠছে। নির্বাচনে থাকা ৮ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী আজগার টগর (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু (ঢেঁকি) ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজার (ট্রাক) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ভোটাররা ঢেঁকির প্রার্থী লণ্টুকে এগিয়ে রাখছেন। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসন ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও জেলা জাসদের (ইনু) প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মো. ইয়াছিউল্লাহ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী আজগার টগর (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু (ঢেঁকি), আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজা (ট্রাক), নুর হাকিম (ঈগল), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলাম মল্লিক (ফ্রিজ), জেলা জাকের পার্টির সভাপতি আব্দুল লতিফ খান (গোলাপ ফুল) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী (আম)।

সরেজমিনে ভোটের মাঠে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মীর্জা সুলতান রাজার ভাই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু। নৌকার শিবিরেও চলছে ঢেঁকিকে নিয়ে আলোচনা। নৌকার কর্মী-সমর্থকেরাও তাঁকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছেন। এদিকে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আওয়ামী লীগের নেতা প্রকাশ্যে নৌকার পোস্টার নিয়ে ঘুরলেও তলে তলে ঢেঁকির জন্য প্রচারণা করছেন।

মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু ও আবু হাশেম রেজার কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, আলী আজগার টগর টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তিনি দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে ভাইয়ের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগরে সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে স্ত্রতন্ত্র প্রার্থীর জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়ায় তাঁরা অবমূল্যায়নের প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

নৌকার কর্মী রহেদ শেখ বলেন, আলী আজগার টগর ৫ ভোটে হলেও পাশ করবে। তবে তিনি ঢেঁকির সঙ্গে নৌকার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে স্বীকার করেন। তবে কামরুজ্জামান নামের লণ্টুর এক কর্মী বলেন, এবার ভোট মূলত লড়াই হবে ঢেঁকি আর হাসেম রেজার ট্রাকের মধ্যে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নৌকা এবার তিন নম্বরে থাকবে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসনের পদক্ষেপের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে এবার ১৭৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৫৮টি স্থায়ী ও ৩৭টি অস্থায়ী কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজর ৪০৩ জন। ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৯১ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, জেলায় ৩৫৪টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ২০৫টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে কেন্দ্র আছে ১৭৩টি। এর মধ্যে ১০৫ ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তারা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো আছে। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস

ঢেঁকিকে এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা, কঠিন চ্যালেঞ্জে নৌকা

আপলোড টাইম : ০৪:১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

সমীকরণ প্রতিবেদক:
আগামীকাল ৭ জানুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে প্রশাসনের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে সকল প্রস্তুতি। গতকাল শুক্রবার আসন্ন জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের ১৭৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১০৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে ভোটের সমীকরণ জটিল হয়ে উঠছে। নির্বাচনে থাকা ৮ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী আজগার টগর (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু (ঢেঁকি) ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজার (ট্রাক) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যদিও ভোটাররা ঢেঁকির প্রার্থী লণ্টুকে এগিয়ে রাখছেন। তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকেরা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ আসন ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও জেলা জাসদের (ইনু) প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মো. ইয়াছিউল্লাহ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলী আজগার টগর (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু (ঢেঁকি), আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু হাশেম রেজা (ট্রাক), নুর হাকিম (ঈগল), জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলাম মল্লিক (ফ্রিজ), জেলা জাকের পার্টির সভাপতি আব্দুল লতিফ খান (গোলাপ ফুল) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মহাসচিব ইদ্রিস চৌধুরী (আম)।

সরেজমিনে ভোটের মাঠে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মীর্জা সুলতান রাজার ভাই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু। নৌকার শিবিরেও চলছে ঢেঁকিকে নিয়ে আলোচনা। নৌকার কর্মী-সমর্থকেরাও তাঁকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছেন। এদিকে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আওয়ামী লীগের নেতা প্রকাশ্যে নৌকার পোস্টার নিয়ে ঘুরলেও তলে তলে ঢেঁকির জন্য প্রচারণা করছেন।

মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লণ্টু ও আবু হাশেম রেজার কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ, আলী আজগার টগর টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তিনি দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে ভাইয়ের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগরে সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনে স্ত্রতন্ত্র প্রার্থীর জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়ায় তাঁরা অবমূল্যায়নের প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

নৌকার কর্মী রহেদ শেখ বলেন, আলী আজগার টগর ৫ ভোটে হলেও পাশ করবে। তবে তিনি ঢেঁকির সঙ্গে নৌকার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে স্বীকার করেন। তবে কামরুজ্জামান নামের লণ্টুর এক কর্মী বলেন, এবার ভোট মূলত লড়াই হবে ঢেঁকি আর হাসেম রেজার ট্রাকের মধ্যে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নৌকা এবার তিন নম্বরে থাকবে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশাসনের পদক্ষেপের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে এবার ১৭৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৫৮টি স্থায়ী ও ৩৭টি অস্থায়ী কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৯৮ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৪ হাজর ৪০৩ জন। ২ লাখ ৩১ হাজার ৬৯১ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, জেলায় ৩৫৪টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ২০৫টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে কেন্দ্র আছে ১৭৩টি। এর মধ্যে ১০৫ ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তারা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো আছে। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।