কুষ্টিয়ার হালসায় তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত, যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে!
- আপলোড টাইম : ০৭:৩৬:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ জুলাই ২০২২
- / ৪৬ বার পড়া হয়েছে
আল হাকিম: কলকাতা–ঢাকা, খুলনা–ঢাকা, খুলনা–রাজশাহী, খুলনা–চিলহাটিগামী রেলপথে চুয়াডাঙ্গা দিয়ে চলাচল করা চার ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হালসায় লুপ লাইনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন ও ইঞ্জিন সংলগ্ন তিনটি বগি লাইনচ্যুতের ঘটনা ঘটে। এতে পৌনে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলাচল করে ট্রেন। পরে আউটডোরে চলাচলা করে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে ট্রেনের যাত্রীরা।
চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার সূত্রে জানা গেছে, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস টেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে প্রবেশ করে। এরপর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে অনুমতি পেলে আপলাইনে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান। অপর দিকে, ঢাকা–কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকালে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন প্রবেশ করার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। অনুমতি পেলে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে তথা ১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট লেটে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় মৈত্রী এক্সপ্রেস। এছাড়াও সময়সূচি অনুযায়ী খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস বেলা ১১টা ৪৯ ও চিলহাটিগামী রুপসা এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ৪৮ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই দুই ট্রেন চুয়াডাঙ্গা স্টেশন প্রবেশ করেনি।
কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী মাসুদ নামের একজন বলেন, ‘সকাল পৌনে ৯টার দিকে স্টেশন এসেছি। রাজশাহীতে যাব আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য। আমরা স্টেশনে এসে দেখছি এই নাজেহাল। আমার সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কয়েজন রয়েছে। ট্রেনটি স্টেশনে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে। এতে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক যুবক বলেন, ‘নাটোরে যাওয়ার জন্য স্টেশনে এসে শুনতে পাই কুষ্টিয়া একটি মালবাহী ট্রেনের বগি পড়ে গেছে। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসার কথা থাকলেও ১২টা পর্যন্ত আসেনি। বড় ধরণের ভোগান্তিতে আছি আমরা।’ জালানার পাশে বসে থাকা এক ট্রেনযাত্রী বলেন, ‘প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে। ট্রেনের মধ্যে প্রচুর গরম। আমাদের নাজেহাল অবস্থা।’
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের উপ–পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা বলেন, ঢাকা–কলকাতা চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছালে নিরাপত্তার চাঁদরে ঘিরে রাখা হয়। কোনো যাত্রী বের হতে যেন না পারে সেদিকে কঠোর নজরদারি ছিল। যাতে ট্রেনের ভেতর থেকে কেউ না বেরাতে না পারে আবার কেউ যাতে ট্রেন না উঠতে পারে, সেদিকে কঠোর নজারদারি করছি।’
চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, কুষ্টিয়ার হালসায় তেলবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তিনি আরও জানান, কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিট পর রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকা–কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে প্রবেশের পর ১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট পর ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায়।