দর্শনার ঝাঁঝাঁডাঙ্গা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে। ওই যুবকের নাম মো. ইব্রাহিম বাবু (৩০)। তিনি দর্শনা থানার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ঝাঁঝাঁডাঙ্গা গ্রামের মো. নূর ইসলামের ছেলে।
নূর ইসলাম বলেন, ‘বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমার ছেলে বাবুসহ ৪-৫ জন গরুর জন্য ঘাস কাটতে সীমান্তসংলগ্ন গালার মাঠে যায়। এসময় ভারতের নদীয়া জেলার গেদে ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা ৭৯ নম্বর পিলারের কাছাকাছি গুলি ছোড়ে। গুলিতে বাবু ঘটনাস্থলেই নিহত হয় বলে গুঞ্জন চলছে।’
ইব্রাহিম বাবুর স্ত্রী জেসমিন আক্তার জানায়, ‘বাবু মারা গিয়েছে কি না এখনও আমরা নিশ্চিত না।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ইব্রাহিম বাবু দোকান বন্ধ করে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপারে ৭৯ নম্বর পিলার বরাবর গরুর জন্য ঘাস কাটতে যায়। এসময় ভারতীয় বিএসএফ ২ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করার শব্দ শুনতে পায় পার্শ্ববর্তী লোকজন। কেউ কেউ বলছেন, তার স্বামী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে। আসলে কী ঘটনা ঘটেছে, জানি না।’
এ বিষয়ে বাবুর খালু আক্তারুজ্জান জানান, ‘ইব্রাহীম ঘাস কাটতে গেলে বিএসএফ ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে ইব্রাহিম নিহত হয়। এরপর ইব্রাহিমের লাশ টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গেছে ভারতীয় বিএসএফ।’ এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধীনস্ত সুলতানপুর ক্যাম্প ইনচার্জ সাইফুজ্জামান জানান, ‘এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তবে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে পারেন।’
নিহতের পরিবার দাবি করেছে, ইব্রাহিম বাবু একজন কৃষক। তিনি কোনো চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। শুধু ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘আমরা নিহতের গ্রামে গিয়ে তার পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পর ভারতের ৩২ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা জানান, একটি স্বর্ণ চোরাকারবারি দলের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তবুও আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।