ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্যাস সংকটে বন্ধের মুখে দেশের সব সার কারখানা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫২:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

দেশে ইউরিয়া সার কারখানা রয়েছে ছয়টি। নিজস্ব চাহিদা পূরণে এগুলোর সক্ষমতার ৭০ শতাংশ ব্যবহারই যথেষ্ট। তবে গ্যাস সংকটে প্রায়ই একাধিক সার কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। এর মধ্যে গত নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানা। যদিও গ্যাস সংকটে শুরু থেকেই ধুঁকছে কারখানাটির উৎপাদন। তবে গ্যাস সংকটে বর্তমানে দেশের সবগুলো সার কারখানাই বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন তথা পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস সরবরাহ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ছয়টি সার কারখানায় দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৩২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে সার কারখানাগুলোয় বর্তমানে সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে ১৯ থেকে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে গ্যাস সংকটে সবগুলোর উৎপাদন প্রায় বন্ধ রয়েছে।
পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, জামালপুরের তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানির প্রতিদিন গ্যাস দরকার ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল সার কারখানাটিতে গ্যাস দেয়া হয়েছে মাত্র দুই দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। দেশের সর্ববৃহৎ ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানা নরসিংদীতে অবস্থিত। এ কারখানায় পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনে গ্যাস প্রয়োজন হয় ৭২ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে গতকাল কেন্দ্রটিতে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র আট দশমিক ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট। আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল এ কারখানাটিতে কোনো গ্যাসই সরবরাহ করা হয়নি। শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে গতকাল এ কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। এদিকে চিটাগং ফার্টিলাইজার কোম্পানির দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে এ কেন্দ্রটিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র চার মিলিয়ন ঘনফুট। আর কাফকোতে গ্যাস দরকার দৈনিক ৬৩ মিলিয়ন ঘনফুট। এ সার কারখানায় গ্যাস দেয়া হয়েছে মাত্র চার দশমিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট।
সূত্রমতে, দেশে প্রতিবছর ২৬ থেকে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। চলতি অর্থবছরের জন্য এ চাহিদা ২৭ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাহিদার বিপরীতে দেশের কারখানাগুলোয় গত অর্থবছর উৎপাদিত হয় প্রায় ১০ লাখ টন। এতে আমদানি করতে হয় ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন। তবে চলতি অর্থবছর গ্যাস সংকটে উৎপাদন আরও কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ইউরিয়া আমদানি বাড়াতে হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) দেশের গ্যাস কারখানাগুলো পরিচালনা করে। বিসিআইসির তথ্যমতে, চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন, যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানির পাঁচ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির পাঁচ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন ও শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানির পাঁচ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন।
নরসিংদীতে গত নভেম্বরে উদ্বোধন করা ঘোড়াশাল-পলাশ ফার্টিলাইজার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা ৯ লাখ ২৪ হাজার টন। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) স্থাপিত চট্টগ্রামে অবস্থিত কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি তথা কাফকোর সার উৎপাদন সক্ষমতা ছয় লাখ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ছয় সার কারখানার সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়ায় ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় ইউরিয়া সার কারখানাগুলোয় চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে ইউরিয়া সার আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে আমদানি করা সারের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তা নিয়ন্ত্রণে সারে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এরপরও বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের, যার প্রভাবে কৃষিপণ্যে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ২৭ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে। অথচ দেশের যেসব কারখানা রয়েছে, সেগুলো যদি পুরো সক্ষমতায় ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে পারে, তাহলে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে প্রায় ২০ টাকা। কিন্তু নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস না পাওয়ার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বিদেশ থেকে ইউরিয়া সার আমদানির অনুমতি দেয়, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া আমদানি করছে সরকার। এর মোট দাম ২৫২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। এই হিসাবে প্রতি মেট্রিক টন সারের আমদানি খরচ ৪২ হাজার ১০৫ টাকা। প্রতি কেজি সারের দাম পড়ে ৪২ টাকা। কিন্তু সরকার কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার বিক্রি করে ২৭ টাকা। এতে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারে ভর্তুকি দিতে হয় প্রায় ১৫ টাকা।
সার উৎপাদনের পাশাপাশি আমদানির ব্যবস্থাপনায়ও রয়েছে বিসিআইসি। দেশের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে তারা ইউরিয়া সারের জোগান দিয়ে থাকে। বিসিআইসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উৎপাদনের বাইরে প্রয়োজনীয় যে ইউরিয়া সার লাগে, তা আমরা বিদেশ থেকে আমদানি করে কৃষি মন্ত্রণালয়কে দিই। তবে নিজস্ব কারখানার সক্ষমতা অনুযায়ী যদি ইউরিয়া উৎপাদন করা যায়, তাহলে সরকারকে অন্তত ইউরিয়ায় কোনো ভর্তুকি দিতে হবে না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গ্যাস সংকটে বন্ধের মুখে দেশের সব সার কারখানা

আপলোড টাইম : ০৮:৫২:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

দেশে ইউরিয়া সার কারখানা রয়েছে ছয়টি। নিজস্ব চাহিদা পূরণে এগুলোর সক্ষমতার ৭০ শতাংশ ব্যবহারই যথেষ্ট। তবে গ্যাস সংকটে প্রায়ই একাধিক সার কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। এর মধ্যে গত নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সার কারখানা। যদিও গ্যাস সংকটে শুরু থেকেই ধুঁকছে কারখানাটির উৎপাদন। তবে গ্যাস সংকটে বর্তমানে দেশের সবগুলো সার কারখানাই বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন তথা পেট্রোবাংলার দৈনিক গ্যাস সরবরাহ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, ছয়টি সার কারখানায় দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৩২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে সার কারখানাগুলোয় বর্তমানে সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে ১৯ থেকে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে গ্যাস সংকটে সবগুলোর উৎপাদন প্রায় বন্ধ রয়েছে।
পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, জামালপুরের তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানির প্রতিদিন গ্যাস দরকার ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল সার কারখানাটিতে গ্যাস দেয়া হয়েছে মাত্র দুই দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। দেশের সর্ববৃহৎ ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানা নরসিংদীতে অবস্থিত। এ কারখানায় পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনে গ্যাস প্রয়োজন হয় ৭২ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে গতকাল কেন্দ্রটিতে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র আট দশমিক ৯০ মিলিয়ন ঘনফুট। আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল এ কারখানাটিতে কোনো গ্যাসই সরবরাহ করা হয়নি। শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে গতকাল এ কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। এদিকে চিটাগং ফার্টিলাইজার কোম্পানির দৈনিক গ্যাস প্রয়োজন ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে এ কেন্দ্রটিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র চার মিলিয়ন ঘনফুট। আর কাফকোতে গ্যাস দরকার দৈনিক ৬৩ মিলিয়ন ঘনফুট। এ সার কারখানায় গ্যাস দেয়া হয়েছে মাত্র চার দশমিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট।
সূত্রমতে, দেশে প্রতিবছর ২৬ থেকে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। চলতি অর্থবছরের জন্য এ চাহিদা ২৭ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাহিদার বিপরীতে দেশের কারখানাগুলোয় গত অর্থবছর উৎপাদিত হয় প্রায় ১০ লাখ টন। এতে আমদানি করতে হয় ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন। তবে চলতি অর্থবছর গ্যাস সংকটে উৎপাদন আরও কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ইউরিয়া আমদানি বাড়াতে হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) দেশের গ্যাস কারখানাগুলো পরিচালনা করে। বিসিআইসির তথ্যমতে, চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন, যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানির পাঁচ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানির পাঁচ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন ও শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানির পাঁচ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন।
নরসিংদীতে গত নভেম্বরে উদ্বোধন করা ঘোড়াশাল-পলাশ ফার্টিলাইজার পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা ৯ লাখ ২৪ হাজার টন। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) স্থাপিত চট্টগ্রামে অবস্থিত কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি তথা কাফকোর সার উৎপাদন সক্ষমতা ছয় লাখ মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ছয় সার কারখানার সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়ায় ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় ইউরিয়া সার কারখানাগুলোয় চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এতে চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে প্রায় দ্বিগুণ দামে ইউরিয়া সার আমদানি করতে হচ্ছে। ফলে আমদানি করা সারের দাম অনেক বেড়ে গেছে। তা নিয়ন্ত্রণে সারে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এরপরও বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের, যার প্রভাবে কৃষিপণ্যে বাড়ছে উৎপাদন খরচ।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ২৭ টাকা নির্ধারণ করে সরকার। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে। অথচ দেশের যেসব কারখানা রয়েছে, সেগুলো যদি পুরো সক্ষমতায় ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে পারে, তাহলে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে প্রায় ২০ টাকা। কিন্তু নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস না পাওয়ার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বিদেশ থেকে ইউরিয়া সার আমদানির অনুমতি দেয়, যেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া আমদানি করছে সরকার। এর মোট দাম ২৫২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। এই হিসাবে প্রতি মেট্রিক টন সারের আমদানি খরচ ৪২ হাজার ১০৫ টাকা। প্রতি কেজি সারের দাম পড়ে ৪২ টাকা। কিন্তু সরকার কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার বিক্রি করে ২৭ টাকা। এতে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারে ভর্তুকি দিতে হয় প্রায় ১৫ টাকা।
সার উৎপাদনের পাশাপাশি আমদানির ব্যবস্থাপনায়ও রয়েছে বিসিআইসি। দেশের চাহিদা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে তারা ইউরিয়া সারের জোগান দিয়ে থাকে। বিসিআইসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘উৎপাদনের বাইরে প্রয়োজনীয় যে ইউরিয়া সার লাগে, তা আমরা বিদেশ থেকে আমদানি করে কৃষি মন্ত্রণালয়কে দিই। তবে নিজস্ব কারখানার সক্ষমতা অনুযায়ী যদি ইউরিয়া উৎপাদন করা যায়, তাহলে সরকারকে অন্তত ইউরিয়ায় কোনো ভর্তুকি দিতে হবে না।’