সমীকরণ প্রতিবেদন:
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ‘একতরফা’ তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আজ রোববার ভোর থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল। হরতালে সবাইকে রাজপথ নামার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল শনিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই আহ্বান জানান। রিজভী বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর মুক্তিসহ চলমান আন্দোলনের একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং নির্বাচন কমিশনের একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে আজ ভোর ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী হরতাল চলবে। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় হরতাল শেষ হবে। এটি হবে শান্তিপূর্ণ হরতাল।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমি এই হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য, এই হরতালকে বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বমহলে, সর্বস্তরের জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছি। দলের নেতাকর্মী ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলের প্রতিও উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সবাই সাহসের ওপর ভর করে রাজপথে উপস্থিত হবেন। রিজভী বলেন, ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল হচ্ছে অধিকার আদায়ের হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতন করে ফরমায়েশি রায়ে শাস্তি যে ভয়ঙ্কর এবং পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হরতাল। অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এই হরতাল। তিনি বলেন, এই দাবি জনগণের দাবি। সারা দেশের মানুষ বহুদিন ধরে অধিকার বঞ্চিত, তাদের মালিকানা বঞ্চিত। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দিতেই এই দুর্বার আন্দোলন।
তফসিল স্থগিত করুন :
রিজভী বলেন, দেশের কারাগারগুলো ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কারণে উপচে পড়েছে। মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ, নেতাকর্মীদের না পেয়ে তার স্বজন-আত্মীয়দের আটক করে মারধর করছে পুলিশ। তাদের গ্রেফতার বাণিজ্যের লাইসেন্স দিয়েছে শেখ হাসিনা। কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। গায়েবি মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির নেতাকর্মীরা দুঃসহ জীবন অতিবাহিত করছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেয়া হচ্ছে না। তবে এত সব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের দুর্বার আন্দোলনে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন, নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় এই ফরমায়েশি এক তরফা নির্বাচন জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে। প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩০২ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এই পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় পুলিশ ১৩ হাজার ২১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।