ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসছে ভারী বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে মানুষ। চলতি মাসের শুরু থেকেই বৃষ্টির দেখা মিলছে না। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে টানা দাবদাহের পর ভারী বৃষ্টিসহ কালবৈশাখীর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যেই ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে হাওড়াঞ্চলে আগাম বন্যার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাকা ধান দ্রম্নত কাটতে মাইকিং করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার থেকে দেশের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। তবে ২৩ এপ্রিল থেকে সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিসহ হাওড়াঞ্চলে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি হাওড়াঞ্চলে আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ১৮ এপ্রিল থেকে সারাদেশে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। ১৯ এপ্রিল থেকে ঢাকার তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। ১৯ থেকে ২০ এপ্রিলের দিকে দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২৩ এপ্রিল থেকে সিলেট সুনামগঞ্জসহ হাওড় এলাকায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২৩ এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর অঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার ওপর দিয়ে বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘ দাবদাহের পর ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, তিন বিভাগের দুই-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে ঢাকার তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আসতে পারে। এছাড়া এখন থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে পারে। তিনি আরও জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

তাপপ্রবাহ সম্পর্কে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা বিভাগসহ ঢাকা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

গতকাল সোমবার বেলা ১০টায় রাজধানীর আফতাবনগরে খেলার মাঠে বৃষ্টির জন্য নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এই নামাজে ইমামতি করেন ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুলস্নাহ। মুসলিস্নরা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে মানুষ প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছে। এই অবস্থায় বৃষ্টি হওয়াটা খুব দরকার। বৃষ্টি হলে গরম কমে যাবে। আলস্নাহ তা’আলা সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানি চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছি।’

প্রসঙ্গত, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে চলে যাওয়ায় প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রাও ৪১ ডিগ্রির ওপরে উঠেছে, যা ৫৮ বছরের রেকর্ড ভাঙে। বৃষ্টির জন্য নগরবাসী হাহাকার করছে। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজধানীতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকা) আদায় করেছেন মসুল্লিরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আসছে ভারী বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী

আপলোড টাইম : ১১:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:

তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। বৃষ্টির জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে মানুষ। চলতি মাসের শুরু থেকেই বৃষ্টির দেখা মিলছে না। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে টানা দাবদাহের পর ভারী বৃষ্টিসহ কালবৈশাখীর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যেই ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে হাওড়াঞ্চলে আগাম বন্যার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাকা ধান দ্রম্নত কাটতে মাইকিং করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার থেকে দেশের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। তবে ২৩ এপ্রিল থেকে সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিসহ হাওড়াঞ্চলে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি হাওড়াঞ্চলে আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে পাকা ধান দ্রুত কাটার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ১৮ এপ্রিল থেকে সারাদেশে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। ১৯ এপ্রিল থেকে ঢাকার তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। ১৯ থেকে ২০ এপ্রিলের দিকে দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২৩ এপ্রিল থেকে সিলেট সুনামগঞ্জসহ হাওড় এলাকায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২৩ এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর অঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার ওপর দিয়ে বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘ দাবদাহের পর ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, তিন বিভাগের দুই-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে ঢাকার তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আসতে পারে। এছাড়া এখন থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে পারে। তিনি আরও জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

তাপপ্রবাহ সম্পর্কে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা বিভাগসহ ঢাকা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

গতকাল সোমবার বেলা ১০টায় রাজধানীর আফতাবনগরে খেলার মাঠে বৃষ্টির জন্য নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এই নামাজে ইমামতি করেন ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুলস্নাহ। মুসলিস্নরা বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে মানুষ প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছে। এই অবস্থায় বৃষ্টি হওয়াটা খুব দরকার। বৃষ্টি হলে গরম কমে যাবে। আলস্নাহ তা’আলা সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানি চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছি।’

প্রসঙ্গত, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে চলে যাওয়ায় প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রাও ৪১ ডিগ্রির ওপরে উঠেছে, যা ৫৮ বছরের রেকর্ড ভাঙে। বৃষ্টির জন্য নগরবাসী হাহাকার করছে। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজধানীতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকা) আদায় করেছেন মসুল্লিরা।