ইপেপার । আজ রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন

চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১২:২৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও তিনজন সাপের কামড়ে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নিহতরা হলো- সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের জয়দেব পালের ছেলে দেবাশীষ (১২) ও সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের বুলা মিয়ার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী রাজন (১৬)। এছাড়া সদর উপজেলার পীতম্বরপুর গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে মোছা. কনিকা (১৭) ও জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে মোছা. ইভা খাতুন সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তারা সকলেই গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এদিকে, গতকাল বেলা একটার দিকে সাপের কামড়ের শিকার হন মকবুল হোসেন (৪৫)। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে তিনিও চুয়াডাঙ্গা সদর হপিসাতালে ভর্তি হন। মকবুল হোসেন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের সিংহাট গ্রামের বাসিন্দা।
দেবাশীষের পিতা জয়দেব পাল জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে দেবাশীষ মেজ। রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার হাতে সাপে কামড় দেয়। কিছুক্ষণ পর সে বমি করতে শুরু করলে সাপে কামড়ের বিষয়টি জানতে পারি। এসময় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নেয়া হয়। পরে সেখান ভোর সাড়ে চারটার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির পর হাসপাতাল থেকে তার শরীরে অ্যান্টিভেমান ইনজেকশন দেয়া হলেও ছয়টার দিকে দেবাশীষের মৃত্যু হয়। এদিক, গতকাল বেলা ১টার দিকে খেজুরা শ্মশানে দেবাশীষের সৎকার করা হয়।
অপরদিকে, রাজনের পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে একটি বিষধর সাপ রাজনের হাতে কামড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে রাজন সাপেটির মাথা চেপে ধরে। একপর্যায়ে সাপটি মারা যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা রাজনকে স্থানীয় একজন ওঝা কবিরাজের কাছে নেয়। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা কবিরাজের চিকিৎসায় রাজনের অবস্থার আরো অবনতি হলে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাজমুস সাকিব বলেন, সাপে কামড়ের প্রায় চার ঘণ্টা পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজনকে জরুরি বিভাগে আসে। বিষধর সাপের কামড়ের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তার শরীরে ১০টি সাপের বিষেশর প্রতিশেধক ‘অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন’ দেয়া হয়। এর ৩০ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়। সাপে কামড়ের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে হয়তো তার মৃত্যু হতো না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, দেবাশীষ ও রাজনকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই তারা মারা যান। তিনি আরও বলেন, সাপে কামড়ানো রোগী হাসপাতালে আসার পরপরই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনতে দেরি হলে মৃত্যুর শঙ্কা থেকেই যায়। তাই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন

চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু

আপলোড টাইম : ১২:২৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও তিনজন সাপের কামড়ে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নিহতরা হলো- সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের জয়দেব পালের ছেলে দেবাশীষ (১২) ও সদর উপজেলার ভুলটিয়া গ্রামের বুলা মিয়ার ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী রাজন (১৬)। এছাড়া সদর উপজেলার পীতম্বরপুর গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে মোছা. কনিকা (১৭) ও জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে মোছা. ইভা খাতুন সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তারা সকলেই গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এদিকে, গতকাল বেলা একটার দিকে সাপের কামড়ের শিকার হন মকবুল হোসেন (৪৫)। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে তিনিও চুয়াডাঙ্গা সদর হপিসাতালে ভর্তি হন। মকবুল হোসেন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের সিংহাট গ্রামের বাসিন্দা।
দেবাশীষের পিতা জয়দেব পাল জানান, তিন ভাইয়ের মধ্যে দেবাশীষ মেজ। রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার হাতে সাপে কামড় দেয়। কিছুক্ষণ পর সে বমি করতে শুরু করলে সাপে কামড়ের বিষয়টি জানতে পারি। এসময় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নেয়া হয়। পরে সেখান ভোর সাড়ে চারটার দিকে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। ভর্তির পর হাসপাতাল থেকে তার শরীরে অ্যান্টিভেমান ইনজেকশন দেয়া হলেও ছয়টার দিকে দেবাশীষের মৃত্যু হয়। এদিক, গতকাল বেলা ১টার দিকে খেজুরা শ্মশানে দেবাশীষের সৎকার করা হয়।
অপরদিকে, রাজনের পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে একটি বিষধর সাপ রাজনের হাতে কামড় দেয়। সঙ্গে সঙ্গে রাজন সাপেটির মাথা চেপে ধরে। একপর্যায়ে সাপটি মারা যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা রাজনকে স্থানীয় একজন ওঝা কবিরাজের কাছে নেয়। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা কবিরাজের চিকিৎসায় রাজনের অবস্থার আরো অবনতি হলে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাজমুস সাকিব বলেন, সাপে কামড়ের প্রায় চার ঘণ্টা পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজনকে জরুরি বিভাগে আসে। বিষধর সাপের কামড়ের বিষয়টি নিশ্চিত হলে তার শরীরে ১০টি সাপের বিষেশর প্রতিশেধক ‘অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন’ দেয়া হয়। এর ৩০ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়। সাপে কামড়ের পর দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে হয়তো তার মৃত্যু হতো না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, দেবাশীষ ও রাজনকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই তারা মারা যান। তিনি আরও বলেন, সাপে কামড়ানো রোগী হাসপাতালে আসার পরপরই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনতে দেরি হলে মৃত্যুর শঙ্কা থেকেই যায়। তাই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।