ইপেপার । আজশনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শঙ্কা নিয়েই নতুন যাত্রা শুরু হলো মোদির

মমতার বর্জন, গেলেন কংগ্রেস সভাপতি, উপস্থিত ছিলেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রনায়করা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে


ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার শঙ্কা নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে উন্মুক্ত ময়দানে প্রায় ১০ হাজার দেশি-বিদেশি অতিথির সামনে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। তবে সব আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল মোদির নতুন জোটের মন্ত্রিসভায় কে কোন মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন তা নিয়ে। সবার চোখ ছিল মঞ্চে নতুন মন্ত্রীদের দিকে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি ভবনে বসেছে চাঁদের হাট। উপস্থিত হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শাখরুখ খান, অক্ষয় কুমারসহ বলিউড নায়ক থেকে ভারতের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা।
জওহরলাল নেহরুর পরে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে বেশ কিছু চাপের মধ্যে ছিলেন মোদি। টানা দুই দিন জোটের শরিকদের সঙ্গে চলেছে মন্ত্রণালয় নিয়ে দরকষাকষি। শেষ পর্যন্ত সকালে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নিয়ে মোদি চা চক্রের আয়োজন করেছিলেন নিজ বাসভবনে। পরে সকালে তিনি প্রথমে যান রাজঘাটে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে তিনি যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির স্মৃতিসৌধ ‘সদৈব অটল’-এ। তারপর জাতীয় যুদ্ধ স্মারক। প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন প্রধানকে পাশে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর সেনানীদের।
বিজেপি সূত্রের খবর- স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ত্রণালয় নিজেদের হাতেই রাখছে তারা। অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে বেশ কিছু বণ্টন করা হতে পারে শরিক দল চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি, নীতীশ কুমারের জেডিইউ, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (আর), একনাথ শিন্ডের শিবসেনা, এইচডি দেবগৌড়ার জেডিএস এবং জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মধ্যে। গতকাল সকালে নিজের সাত, লোককল্যাণ মার্গের বাড়িতে এনডিএর বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যকে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি। মনে করা হচ্ছে, মোদির ডাক পাওয়া সংসদ সদস্যদের প্রায় প্রত্যেকেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় মোদির শপথের পরপরই ৭২ সদস্যের মন্ত্রিসভার সদস্যরা পৃথকভাবে শপথ নেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভার মতোই নতুন মন্ত্রিসভায়ও ঠাঁই পেয়েছেন বিজেপির রাজনাথ সিংহ, অমিত শাহ, নির্মলা সীতারমন, পীযুষ গয়াল, এস জয়শঙ্কর। চা-চক্রে হাজির ছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে ফের তাকে মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে।
মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান, হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টর চন্দ্রবাবুর দল থেকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তার ছেলে কে রামমোহন নাইডু। শপথ নিয়েছেন অরুণাচল পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য কিরেন রিজিজু, ঝাড়খন্ডের কোডারমা কেন্দ্র থেকে জয়ী বিজেপির এমপি অন্নপূর্ণা দেবী। রাজস্থানের জোধপুরের বিজেপি এমপি গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। রাজস্থানের অলওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। মধ্যপ্রদেশের গুনা কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী মন্ত্রিসভায় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। শপথ নিলেন বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি সংসদ সদস্য গিরিরাজ সিংহ। ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সংসদ সদস্য জুয়েল ওরাওঁ। শপথ নিলেন কর্ণাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি প্রহ্লাদ জোশী। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি এমপি বীরেন্দ্র কুমার। আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। এনডিএর শরিক দল জেডিইউর রাজীবরঞ্জন সিংহ ওরফে লাল্লন। নীতীশের দলের এই নেতা বিহারের মুঙ্গের আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। শপথ নিলেন গয়ার এমপি তথা এনডিএর শরিক দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার (হাম) নেতা জিতনরাম মাঝিঁ। কিছু দিনের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। শপথ নিলেন বিজেপির রাজ্যসভার এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। কুমারস্বামীর পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বিজেপির রাজ্যসভার এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য এবং সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী পীযুষ গয়াল।
মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার ছেলে তথা জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী। এবার কর্ণাটকের মান্ড্য কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। এর আগেও দুবার ওই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন তিনি। এই লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে জোট গড়ে লড়েছিল বিজেপি এবং জেডিএস। শপথ নিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের জম্মু কেন্দ্রের বিজেপি এমপি জিতেন্দ্র সিংহ। হরিয়ানার বিজেপি নেতা রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ। শপথ নিলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি এমপি সিআর পাতিল। শপথ নিলেন বিহারের হাজিপুরের এমপি তথা এনডিএর শরিক দল লোক জনশক্তি পার্টির (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ান। তেলেঙ্গানার সেকেন্দরাবাদ কেন্দ্রের বিজেপি এমপি জি কিসান রেড্ডি। গুজরাটের পোরবন্দর কেন্দ্রের বিজেপি এমপি মনসুখ মান্ডবীয়। বিজেপির রাজ্যসভার এমপি হরদীপ সিংহ পুরী। অরুণাচল পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য কিরেন রিজিজু। শপথ নিলেন রাজস্থানের জোধপুরের বিজেপি এমপি গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। রাজস্থানের অলওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি ভূপেন্দ্র যাদব। মধ্যপ্রদেশের গুনা কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী মন্ত্রিসভায় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্যসভার এমপি অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি এমপি গিরিরাজ সিংহ শপথ নিয়েছেন। এ ছাড়া ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি এমপি জুয়েল ওরাওঁ, কর্ণাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি প্রহ্লাদ জোশীও শপথ নিয়েছেন।
শপথ গ্রহণ শেষে ছিল জমজমাট ভোজের আয়োজন। রাজস্থানের বিশেষ সবজি, দম বিরিয়ানি, কুলফি, পাঁচ রকমের রুটি, পরোটা। এছাড়া পাঞ্জাবি খাবারদাবারও ছিল তালিকায়। সেই সঙ্গে বাজরার খিচুড়িও। শেষে আট রকমের মিষ্টি। রসমালাই, ছানার মিষ্টি, রাজস্থানের বিখ্যাত ঘেওয়ার। শপথ গ্রহণের পর এসব পদ দিয়েই নৈশভোজ সেরেছেন নরেন্দ্র মোদি, তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ এনডিএর নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। তাদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। সেখানেই হয় এসব খাওয়া-দাওয়া।
মমতা বললেন, সরকার টিকবে না ১৫ দিনও :
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গতকাল পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাটে সংবাদ সম্মেলন করে মন্তব্য করেছেন, নতুন ইন্ডিয়া জোট শেষমেশ সরকার তৈরি করবে। মমতা বলেন, যারা ৪০০ পারের কথা বলতেন, তারা একার ক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতাই অর্জন করতে পারেনি। এটা ভাববেন না যে, ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠনের দাবি জানায়নি বলে কিছু অঘটন ঘটে যাবে না। আমরা এখন শুধু দেখছি। শেষমেশ নতুন ‘ইন্ডিয়া জোট’ সরকার তৈরি করবে। তার আগে কদিন না হয় ওরা সরকার চালিয়ে নিক’। খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, কখনো কখনো সরকার এক দিন স্থায়ী হয়। কে বলতে পারে এ সরকার ১৫ দিন টিকবে কি না? মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে মমতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমন্ত্রণ পাইনি। পেলেও আমরা যেতাম না। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ সরকার অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিকভাবে গঠন হচ্ছে। আমরা এ সরকারকে আমাদের শুভকামনা দিতে পারছি না। তবে দেশ ও দেশের মানুষকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

শঙ্কা নিয়েই নতুন যাত্রা শুরু হলো মোদির

মমতার বর্জন, গেলেন কংগ্রেস সভাপতি, উপস্থিত ছিলেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রনায়করা

আপলোড টাইম : ০৮:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪


ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার শঙ্কা নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে উন্মুক্ত ময়দানে প্রায় ১০ হাজার দেশি-বিদেশি অতিথির সামনে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। তবে সব আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল মোদির নতুন জোটের মন্ত্রিসভায় কে কোন মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন তা নিয়ে। সবার চোখ ছিল মঞ্চে নতুন মন্ত্রীদের দিকে। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি ভবনে বসেছে চাঁদের হাট। উপস্থিত হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শাখরুখ খান, অক্ষয় কুমারসহ বলিউড নায়ক থেকে ভারতের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা।
জওহরলাল নেহরুর পরে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে বেশ কিছু চাপের মধ্যে ছিলেন মোদি। টানা দুই দিন জোটের শরিকদের সঙ্গে চলেছে মন্ত্রণালয় নিয়ে দরকষাকষি। শেষ পর্যন্ত সকালে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নিয়ে মোদি চা চক্রের আয়োজন করেছিলেন নিজ বাসভবনে। পরে সকালে তিনি প্রথমে যান রাজঘাটে ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে তিনি যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির স্মৃতিসৌধ ‘সদৈব অটল’-এ। তারপর জাতীয় যুদ্ধ স্মারক। প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন প্রধানকে পাশে নিয়ে শ্রদ্ধা জানান দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর সেনানীদের।
বিজেপি সূত্রের খবর- স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, শিক্ষা এবং সংস্কৃতির মতো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মন্ত্রণালয় নিজেদের হাতেই রাখছে তারা। অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে বেশ কিছু বণ্টন করা হতে পারে শরিক দল চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি, নীতীশ কুমারের জেডিইউ, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি (আর), একনাথ শিন্ডের শিবসেনা, এইচডি দেবগৌড়ার জেডিএস এবং জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মধ্যে। গতকাল সকালে নিজের সাত, লোককল্যাণ মার্গের বাড়িতে এনডিএর বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যকে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি। মনে করা হচ্ছে, মোদির ডাক পাওয়া সংসদ সদস্যদের প্রায় প্রত্যেকেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় মোদির শপথের পরপরই ৭২ সদস্যের মন্ত্রিসভার সদস্যরা পৃথকভাবে শপথ নেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভার মতোই নতুন মন্ত্রিসভায়ও ঠাঁই পেয়েছেন বিজেপির রাজনাথ সিংহ, অমিত শাহ, নির্মলা সীতারমন, পীযুষ গয়াল, এস জয়শঙ্কর। চা-চক্রে হাজির ছিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে ফের তাকে মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে।
মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান, হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টর চন্দ্রবাবুর দল থেকে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন তার ছেলে কে রামমোহন নাইডু। শপথ নিয়েছেন অরুণাচল পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য কিরেন রিজিজু, ঝাড়খন্ডের কোডারমা কেন্দ্র থেকে জয়ী বিজেপির এমপি অন্নপূর্ণা দেবী। রাজস্থানের জোধপুরের বিজেপি এমপি গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। রাজস্থানের অলওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। মধ্যপ্রদেশের গুনা কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী মন্ত্রিসভায় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। শপথ নিলেন বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি সংসদ সদস্য গিরিরাজ সিংহ। ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি সংসদ সদস্য জুয়েল ওরাওঁ। শপথ নিলেন কর্ণাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি প্রহ্লাদ জোশী। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি এমপি বীরেন্দ্র কুমার। আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। এনডিএর শরিক দল জেডিইউর রাজীবরঞ্জন সিংহ ওরফে লাল্লন। নীতীশের দলের এই নেতা বিহারের মুঙ্গের আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। শপথ নিলেন গয়ার এমপি তথা এনডিএর শরিক দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চার (হাম) নেতা জিতনরাম মাঝিঁ। কিছু দিনের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি। শপথ নিলেন বিজেপির রাজ্যসভার এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। কুমারস্বামীর পর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বিজেপির রাজ্যসভার এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ক্রেতাসুরক্ষা, খাদ্য এবং সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী পীযুষ গয়াল।
মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার ছেলে তথা জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী। এবার কর্ণাটকের মান্ড্য কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। এর আগেও দুবার ওই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন তিনি। এই লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে জোট গড়ে লড়েছিল বিজেপি এবং জেডিএস। শপথ নিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের জম্মু কেন্দ্রের বিজেপি এমপি জিতেন্দ্র সিংহ। হরিয়ানার বিজেপি নেতা রাও ইন্দ্রজিৎ সিংহ। শপথ নিলেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি এমপি সিআর পাতিল। শপথ নিলেন বিহারের হাজিপুরের এমপি তথা এনডিএর শরিক দল লোক জনশক্তি পার্টির (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ান। তেলেঙ্গানার সেকেন্দরাবাদ কেন্দ্রের বিজেপি এমপি জি কিসান রেড্ডি। গুজরাটের পোরবন্দর কেন্দ্রের বিজেপি এমপি মনসুখ মান্ডবীয়। বিজেপির রাজ্যসভার এমপি হরদীপ সিংহ পুরী। অরুণাচল পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য কিরেন রিজিজু। শপথ নিলেন রাজস্থানের জোধপুরের বিজেপি এমপি গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। রাজস্থানের অলওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি ভূপেন্দ্র যাদব। মধ্যপ্রদেশের গুনা কেন্দ্রের বিজেপি এমপি তথা বিদায়ী মন্ত্রিসভায় অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্যসভার এমপি অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী তথা বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্রের বিজেপি এমপি গিরিরাজ সিংহ শপথ নিয়েছেন। এ ছাড়া ওড়িশার সুন্দরগড়ের বিজেপি এমপি জুয়েল ওরাওঁ, কর্ণাটকের ধারওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি এমপি প্রহ্লাদ জোশীও শপথ নিয়েছেন।
শপথ গ্রহণ শেষে ছিল জমজমাট ভোজের আয়োজন। রাজস্থানের বিশেষ সবজি, দম বিরিয়ানি, কুলফি, পাঁচ রকমের রুটি, পরোটা। এছাড়া পাঞ্জাবি খাবারদাবারও ছিল তালিকায়। সেই সঙ্গে বাজরার খিচুড়িও। শেষে আট রকমের মিষ্টি। রসমালাই, ছানার মিষ্টি, রাজস্থানের বিখ্যাত ঘেওয়ার। শপথ গ্রহণের পর এসব পদ দিয়েই নৈশভোজ সেরেছেন নরেন্দ্র মোদি, তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যসহ এনডিএর নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। তাদের জন্য ভোজসভার আয়োজন করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। সেখানেই হয় এসব খাওয়া-দাওয়া।
মমতা বললেন, সরকার টিকবে না ১৫ দিনও :
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গতকাল পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাটে সংবাদ সম্মেলন করে মন্তব্য করেছেন, নতুন ইন্ডিয়া জোট শেষমেশ সরকার তৈরি করবে। মমতা বলেন, যারা ৪০০ পারের কথা বলতেন, তারা একার ক্ষমতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতাই অর্জন করতে পারেনি। এটা ভাববেন না যে, ইন্ডিয়া জোট সরকার গঠনের দাবি জানায়নি বলে কিছু অঘটন ঘটে যাবে না। আমরা এখন শুধু দেখছি। শেষমেশ নতুন ‘ইন্ডিয়া জোট’ সরকার তৈরি করবে। তার আগে কদিন না হয় ওরা সরকার চালিয়ে নিক’। খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, কখনো কখনো সরকার এক দিন স্থায়ী হয়। কে বলতে পারে এ সরকার ১৫ দিন টিকবে কি না? মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে মমতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমন্ত্রণ পাইনি। পেলেও আমরা যেতাম না। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ সরকার অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিকভাবে গঠন হচ্ছে। আমরা এ সরকারকে আমাদের শুভকামনা দিতে পারছি না। তবে দেশ ও দেশের মানুষকে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।