ইপেপার । আজ শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় উচ্চ তাপমাত্রায় কদর বাড়ছে শরবতের

মোজাম্মেল শিশির, দামুড়হুদা:
  • আপলোড টাইম : ০৫:১৭:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদায় বৈশাখ মাসের তাপমাত্রা বেড়েছে। প্রতিদিনই চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তবু মানুষকে জীবন-জীবিকার টানে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে। তাই এই অসহ্য গরমে সামান্য প্রশান্তির খোঁজে মানুষ ছুটে চলেছেন ভ্রাম্যমাণ লেবুর বিভিন্ন শরবতের দোকানে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বসেছে লেবু শরবতের দোকান।

দামুড়হুদা উপজেলা সদরে বাসস্ট্যান্ডে, কার্পাসডাঙ্গা কাঁচাবাজারে সামনে কাঁঠালতলা বাজারে, জুড়ানপুর বাজারে দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন, বাইপাস মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ লেবু ও বেলের শরবতের দোকানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় চলে বেচাকেনার। লেবু ও বেলের শরবত বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেবু, ট্যাং, লবণ মিশ্রিত লেবু ও বেলের শরবত বিক্রি হচ্ছে বেশি। এক টুকরো লেবুর রস, লবণ, ট্যাং আর ঠান্ডা পানি মিশ্রিত এক গ্লাস লেবুর শরবত বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকায়। বেল, গুড় আর ঠান্ডা পানি মিশ্রিত এক গ্লাস শরবত বিক্রি ১০ টাকা।

রাজমিস্ত্রি আজাদুল ইসলাম বলেন, তাপমাত্রা খুবই বেশি। কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই গরমে মিস্ত্রি কাজ করলে অনেক পিপাসা পায়। শরীর অনেক ঘেমে যায়। তাই বেলের শরবত খেতে কাঁঠালতলা বাজারে এসেছি। চায়ের দোকানদার কালু বলেন, সারাদিন চায়ের পানি গরম করতে চুলার পাশে থাকতে হয়। আবার দোকানের টিনের গরম সহ্য করে দোকান চালাতে হয়। এ তীব্র গরমে লেবু বা বেলের শরবত শরীরে অন্য রকম আমেজ নিয়ে আসে। এক গ্লাস পান করলে কিছুটা হলেও প্রশান্তি পাই।

ভ্যানচালক সুমন বলেন, এই গরমে ভ্যান চালাতে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। এই সময় লেবু বা বেলের শরবত খেতে অনেক ভালো লাগে। এ শরবত খেলে শরীরটাও ভালো লাগে। তাই এই শরবত খাই। দামুড়হুদা উপজেলার কাঁঠালতলা বাজারে শরবত বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমে লেবু ও বেলের শরবতের চাহিদা আগের থেকে বেড়েছে। আগে আমার সারা দিন বিক্রি হতো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকা।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৫ শতাংশ। এ সপ্তাহজুড়ে এভাবেই তাপমাত্রা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা কম আছে।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, গরমে পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আপনারা প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। লেবুর শরবত, স্যালাইনের পানি পান করুন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বা খোলা পরিবেশে যে শরবত বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এই অস্বাস্থ্যকর পানি পান করলে আমাদের শরীরে নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলুন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা বলেন, তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকলে সাবধানে থাকবেন, প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করবেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা শরবত এড়িয়ে চলুন। কোথাও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করে বিক্রয় করার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

দামুড়হুদায় উচ্চ তাপমাত্রায় কদর বাড়ছে শরবতের

আপলোড টাইম : ০৫:১৭:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

দামুড়হুদায় বৈশাখ মাসের তাপমাত্রা বেড়েছে। প্রতিদিনই চলছে তীব্র দাবদাহ। এতে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তবু মানুষকে জীবন-জীবিকার টানে ঘরের বাইরে বের হতে হচ্ছে। তাই এই অসহ্য গরমে সামান্য প্রশান্তির খোঁজে মানুষ ছুটে চলেছেন ভ্রাম্যমাণ লেবুর বিভিন্ন শরবতের দোকানে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বসেছে লেবু শরবতের দোকান।

দামুড়হুদা উপজেলা সদরে বাসস্ট্যান্ডে, কার্পাসডাঙ্গা কাঁচাবাজারে সামনে কাঁঠালতলা বাজারে, জুড়ানপুর বাজারে দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন, বাইপাস মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ লেবু ও বেলের শরবতের দোকানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় চলে বেচাকেনার। লেবু ও বেলের শরবত বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেবু, ট্যাং, লবণ মিশ্রিত লেবু ও বেলের শরবত বিক্রি হচ্ছে বেশি। এক টুকরো লেবুর রস, লবণ, ট্যাং আর ঠান্ডা পানি মিশ্রিত এক গ্লাস লেবুর শরবত বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকায়। বেল, গুড় আর ঠান্ডা পানি মিশ্রিত এক গ্লাস শরবত বিক্রি ১০ টাকা।

রাজমিস্ত্রি আজাদুল ইসলাম বলেন, তাপমাত্রা খুবই বেশি। কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই গরমে মিস্ত্রি কাজ করলে অনেক পিপাসা পায়। শরীর অনেক ঘেমে যায়। তাই বেলের শরবত খেতে কাঁঠালতলা বাজারে এসেছি। চায়ের দোকানদার কালু বলেন, সারাদিন চায়ের পানি গরম করতে চুলার পাশে থাকতে হয়। আবার দোকানের টিনের গরম সহ্য করে দোকান চালাতে হয়। এ তীব্র গরমে লেবু বা বেলের শরবত শরীরে অন্য রকম আমেজ নিয়ে আসে। এক গ্লাস পান করলে কিছুটা হলেও প্রশান্তি পাই।

ভ্যানচালক সুমন বলেন, এই গরমে ভ্যান চালাতে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। এই সময় লেবু বা বেলের শরবত খেতে অনেক ভালো লাগে। এ শরবত খেলে শরীরটাও ভালো লাগে। তাই এই শরবত খাই। দামুড়হুদা উপজেলার কাঁঠালতলা বাজারে শরবত বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমে লেবু ও বেলের শরবতের চাহিদা আগের থেকে বেড়েছে। আগে আমার সারা দিন বিক্রি হতো এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে চার হাজার টাকা।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৫ শতাংশ। এ সপ্তাহজুড়ে এভাবেই তাপমাত্রা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা কম আছে।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, গরমে পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আপনারা প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। লেবুর শরবত, স্যালাইনের পানি পান করুন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বা খোলা পরিবেশে যে শরবত বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এই অস্বাস্থ্যকর পানি পান করলে আমাদের শরীরে নানা রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলুন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা বলেন, তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকলে সাবধানে থাকবেন, প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করবেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা শরবত এড়িয়ে চলুন। কোথাও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করে বিক্রয় করার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।