ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড

তীব্র দাবদাহে প্রাণ-প্রকৃতিতে স্থবিরতা, নেই সুখবর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

দেশের দক্ষিণের জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। গতকাল মঙ্গলবার এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ এই এলাকার জনজীবন। গতকাল বেলা তিনটায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ১২ এপ্রিল শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর থেকে ক্রমেই ওপরে উঠতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার (১৪ এপ্রিল) ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও সোমবার (১৫ এপ্রিল) এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বেলা তিনটায় জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১২ টায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এর আগে গত ৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে তীব্র গরমে প্রকৃতিতে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসতে শুরু করে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েন শ্রমজীবী মানুষেরা। তীব্র গরমের কারণে খুব জরুরি কাজ ছাড়া সারাদিন সাধারণ মানুষও খুব একটা বের হননি। বাইরের কড়া রোদ থেকে বাঁচতে খেটে খাওয়া মানুষসহ অনেকেই গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন। কেউ বা ঠাণ্ডা লেবুর শরবত খেয়ে স্বস্তি পেতে চেয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ এলাকার চালের গোডাউনের (চাতাল) কর্মী রোজিনা খাতুন বলেন, ‘গরিবের আবার গরম! পেটে ভাত জোটানোর চিন্তা করলে, ওসব রোদ-গরম সব হাওয়ায় উড়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে এই গরমে কাজ করতে কষ্ট হয়। বারবার পানি পিপাসা লাগে। কিছুই করার নেই, কাজ তো করতে হবে।’

ভাড়ায় ইজিবাইক চালক আশানুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদ-গরমে মানুষ খুব একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই ভাড়া খুবই কম। একে তো গরম, তার ওপর তেমন ভাড়া না হওয়ায় খুব কষ্টে আছি। ইজিবাইকের ভাড়াই দিতে হয় ৪০০ টাকা।’ তবে ডাব বিক্রেতা ইউনূস ফকির বলেন, ‘ডাব ভালোই বিক্রি হচ্ছে। দেশের অন্য জেলার তুলনায় চুয়াডাঙ্গায় ডাবের দাম স্বাভাবিক। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ ডাব বিক্রি করি।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে শরবত বিক্রেতা তরুণ উদ্যোক্তা আশিক জামান বলেন, ‘গরম বাড়ায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। মানুষ পিপাসা মেটাতে ও একটু স্বস্তি পেতে লেবুর ঠাণ্ডা শরবত পান করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি শরবত পান করছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া পরিস্থিতি একই রকম থাকবে। এসময় তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে, তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড

তীব্র দাবদাহে প্রাণ-প্রকৃতিতে স্থবিরতা, নেই সুখবর

আপলোড টাইম : ০৭:৫১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

দেশের দক্ষিণের জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। গতকাল মঙ্গলবার এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ এই এলাকার জনজীবন। গতকাল বেলা তিনটায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ১২ এপ্রিল শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর থেকে ক্রমেই ওপরে উঠতে থাকে তাপমাত্রার পারদ। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রোববার (১৪ এপ্রিল) ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও সোমবার (১৫ এপ্রিল) এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বেলা তিনটায় জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১২ টায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এর আগে গত ৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে তীব্র গরমে প্রকৃতিতে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে আসতে শুরু করে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েন শ্রমজীবী মানুষেরা। তীব্র গরমের কারণে খুব জরুরি কাজ ছাড়া সারাদিন সাধারণ মানুষও খুব একটা বের হননি। বাইরের কড়া রোদ থেকে বাঁচতে খেটে খাওয়া মানুষসহ অনেকেই গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন। কেউ বা ঠাণ্ডা লেবুর শরবত খেয়ে স্বস্তি পেতে চেয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ এলাকার চালের গোডাউনের (চাতাল) কর্মী রোজিনা খাতুন বলেন, ‘গরিবের আবার গরম! পেটে ভাত জোটানোর চিন্তা করলে, ওসব রোদ-গরম সব হাওয়ায় উড়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে এই গরমে কাজ করতে কষ্ট হয়। বারবার পানি পিপাসা লাগে। কিছুই করার নেই, কাজ তো করতে হবে।’

ভাড়ায় ইজিবাইক চালক আশানুর রহমান বলেন, ‘প্রচণ্ড রোদ-গরমে মানুষ খুব একটা বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই ভাড়া খুবই কম। একে তো গরম, তার ওপর তেমন ভাড়া না হওয়ায় খুব কষ্টে আছি। ইজিবাইকের ভাড়াই দিতে হয় ৪০০ টাকা।’ তবে ডাব বিক্রেতা ইউনূস ফকির বলেন, ‘ডাব ভালোই বিক্রি হচ্ছে। দেশের অন্য জেলার তুলনায় চুয়াডাঙ্গায় ডাবের দাম স্বাভাবিক। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ ডাব বিক্রি করি।’

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে শরবত বিক্রেতা তরুণ উদ্যোক্তা আশিক জামান বলেন, ‘গরম বাড়ায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। মানুষ পিপাসা মেটাতে ও একটু স্বস্তি পেতে লেবুর ঠাণ্ডা শরবত পান করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি শরবত পান করছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া পরিস্থিতি একই রকম থাকবে। এসময় তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে, তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।’