ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ-উৎসবে মাতলেন দর্শনার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে


চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের প্রায় ৩০টি বিনোদন কেন্দ্রে প্রতিবারের মতো এবারেও ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছিল সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রচণ্ড গরমের তোয়াক্কা না করেই ঈদ আনন্দে মাততে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। ঈদ ও পহেলা বৈশাখ একসঙ্গে হওয়ায় বিনোদন পিপাসু মানুষের মাঝে দেখা দেয় বাড়তি উন্মাদনা।

ঈদের দিন থেকেই জমে ওঠে বিনোদন কেন্দ্র, এতিহ্যবাহী স্থাপনা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসহ চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের দর্শনীয় সব স্থান। শুধু বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নয়, মোটরসাইকেল, রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িতে ঘুরে ঈদ আনন্দে মাতেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাবা-মায়ের সাথে ঈদ আনন্দ উদ্যাপনে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তে দেখা গেছে ছোট ছোট শিশুদের। চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুপার্ক, ডিসি ইকোপার্ক, তালসারি, কার্পাসডাঙ্গার কবি নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত আটচালা ঘর, ইব্রাহিমপুরের মেহেরুন নেছা পার্ক, বদরগঞ্জের আক্কাস লেক ভিউ পার্ক, জীবননগরের জমিদার বাড়ি, আলমডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমি ও পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ও দেশের প্রথম রাজধানী মুজিবনগর কমপ্লেক্স এরিয়াসহ এ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঈদ আনন্দে মাতেন সবাই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের দিন থেকে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঢল নামে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের। যদিও জেলায় পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা হাতে গোনা, তবুও সেখানে গিয়ে আনন্দের সাথে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তারা। ঈদের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মানুষের ঢল নামে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। চুয়াডাঙ্গা সদরের বদরগঞ্জের আক্কাস লেক ভিউ পার্ক, শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুস্বর্গ পার্ক, বিএডিসি ফার্ম, দামুড়হুদার মেহেরুন পার্ক, ডিসি ইকোপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নিরিবিলি এলাকায় মনোরম পরিবেশে সময় পার করেন অনেকেই। মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, আলমসাধু, নসিমন-করিমনযোগে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন্দের সাথে সময় আনন্দময় মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। তবে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়ের সাথে চোখে পড়ে তাদের সেলফি তোলা। আধুনিক যুগের প্রায় সকলেই আনন্দের মুহূর্তগুলো নিজের মুঠোফোনে ক্যামেরা বন্দি করছে।

পহেলা বৈশাখের দিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থী ও মানুষের ঢল নামে চুয়াডাঙ্গার আক্কাস লেক ভিউ পার্কে। নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন সেখানে। শিশুরা মেতে ওঠে বাধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে। তারা দোলনা, সিøপার, স্পিডবোট, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীসহ প্রায় সকলেই ব্যস্ত ছিল ভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি উঠতে।

পার্কে আসা শিশুরা জানায়, ‘প্রতিদিন স্কুল-কোচিং শেষে বাড়িতে পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে হয়। আব্বু-আম্মু ব্যস্ত থাকায় তাদের বললেও কোথাও নিয়ে যায় না। ঈদে সবার ছুটি থাকায় পার্কে বেড়াতে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে।’ অভিভাবকরা জানান, কর্মব্যস্ত জীবনে শিশুসন্তাদের নিয়ে কোথাও বের হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও হয়ে ওঠে না। ছুটি পেলেও বিনোদন কেন্দ্রের অভাবে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয় না। ছেলে-মেয়ের আবদারে এখানে আসতে হয়েছে।

এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঈদ বিনোদনের জন্য ঘুরতে আসা হাজারও দর্শনার্থীদের ঢল নামে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ বিনোদনের জন্য দর্শনার্থীরা ঘুরতে আছে ঐতিহাসিক মুজিবনগর। ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড় জমছে মুজিবনগরে কমপ্লেক্সে। এ জন্য সড়কগুলোতে মানুষ ও পরিবহনের ভিড়ে দীর্ঘ যানজট হলে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে যাওয়া-আশা করছে দর্শনার্থীরা। এ ক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারী থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়

পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ-উৎসবে মাতলেন দর্শনার্থীরা

আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪


চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের প্রায় ৩০টি বিনোদন কেন্দ্রে প্রতিবারের মতো এবারেও ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছিল সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রচণ্ড গরমের তোয়াক্কা না করেই ঈদ আনন্দে মাততে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। ঈদ ও পহেলা বৈশাখ একসঙ্গে হওয়ায় বিনোদন পিপাসু মানুষের মাঝে দেখা দেয় বাড়তি উন্মাদনা।

ঈদের দিন থেকেই জমে ওঠে বিনোদন কেন্দ্র, এতিহ্যবাহী স্থাপনা, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসহ চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের দর্শনীয় সব স্থান। শুধু বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নয়, মোটরসাইকেল, রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িতে ঘুরে ঈদ আনন্দে মাতেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাবা-মায়ের সাথে ঈদ আনন্দ উদ্যাপনে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তে দেখা গেছে ছোট ছোট শিশুদের। চুয়াডাঙ্গা শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুপার্ক, ডিসি ইকোপার্ক, তালসারি, কার্পাসডাঙ্গার কবি নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত আটচালা ঘর, ইব্রাহিমপুরের মেহেরুন নেছা পার্ক, বদরগঞ্জের আক্কাস লেক ভিউ পার্ক, জীবননগরের জমিদার বাড়ি, আলমডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমি ও পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ও দেশের প্রথম রাজধানী মুজিবনগর কমপ্লেক্স এরিয়াসহ এ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঈদ আনন্দে মাতেন সবাই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের দিন থেকে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ঢল নামে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের। যদিও জেলায় পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা হাতে গোনা, তবুও সেখানে গিয়ে আনন্দের সাথে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তারা। ঈদের দিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই মানুষের ঢল নামে পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। চুয়াডাঙ্গা সদরের বদরগঞ্জের আক্কাস লেক ভিউ পার্ক, শহরের পুলিশ পার্ক, শিশুস্বর্গ পার্ক, বিএডিসি ফার্ম, দামুড়হুদার মেহেরুন পার্ক, ডিসি ইকোপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন নিরিবিলি এলাকায় মনোরম পরিবেশে সময় পার করেন অনেকেই। মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, আলমসাধু, নসিমন-করিমনযোগে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজন্দের সাথে সময় আনন্দময় মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। তবে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড়ের সাথে চোখে পড়ে তাদের সেলফি তোলা। আধুনিক যুগের প্রায় সকলেই আনন্দের মুহূর্তগুলো নিজের মুঠোফোনে ক্যামেরা বন্দি করছে।

পহেলা বৈশাখের দিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শনার্থী ও মানুষের ঢল নামে চুয়াডাঙ্গার আক্কাস লেক ভিউ পার্কে। নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী ও শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষই আনন্দে মেতে ওঠেন সেখানে। শিশুরা মেতে ওঠে বাধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে। তারা দোলনা, সিøপার, স্পিডবোট, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীসহ প্রায় সকলেই ব্যস্ত ছিল ভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি উঠতে।

পার্কে আসা শিশুরা জানায়, ‘প্রতিদিন স্কুল-কোচিং শেষে বাড়িতে পড়াশোনার মধ্যেই থাকতে হয়। আব্বু-আম্মু ব্যস্ত থাকায় তাদের বললেও কোথাও নিয়ে যায় না। ঈদে সবার ছুটি থাকায় পার্কে বেড়াতে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে।’ অভিভাবকরা জানান, কর্মব্যস্ত জীবনে শিশুসন্তাদের নিয়ে কোথাও বের হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও হয়ে ওঠে না। ছুটি পেলেও বিনোদন কেন্দ্রের অভাবে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়া হয় না। ছেলে-মেয়ের আবদারে এখানে আসতে হয়েছে।

এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঈদ বিনোদনের জন্য ঘুরতে আসা হাজারও দর্শনার্থীদের ঢল নামে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ বিনোদনের জন্য দর্শনার্থীরা ঘুরতে আছে ঐতিহাসিক মুজিবনগর। ঈদোত্তর বিনোদনের জন্য মেহেরপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড় জমছে মুজিবনগরে কমপ্লেক্সে। এ জন্য সড়কগুলোতে মানুষ ও পরিবহনের ভিড়ে দীর্ঘ যানজট হলে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে যাওয়া-আশা করছে দর্শনার্থীরা। এ ক্ষেত্রে পুলিশি নজরদারী থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।