ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতি হত্যা মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতিকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে আরও এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪), একই গ্রামের শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুত আলী (২৩)। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাননগর স্কুল পাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজারপাড়ার একটি বাড়ি থেকে হাত পা মুখ বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধ দম্পতি নজির মিয়া (৭০) ও ফরিদা বেগমের (৬০) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর চারদিন পর হত্যাকারী সন্দেহে ওই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বৃদ্ধ নজির আলী ছিলেন একজন বালু ব্যবসায়ী। আর আসামি সাহাবুল হক ছিলেন বালু বহনে ব্যবহৃত যানের চালক। এ সুবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল সাহাবুলের। সে জানতো ওই বাড়িতে কোথায় টাকা পয়সা রাখা হতো। পরিকল্পনা মাফিক আসামিরা ওই দম্পতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা লুট করতে বালু কেনার নাম করে বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বাধা দিলে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধ এবং কুপিয়ে হত্যা করে এবং বৃদ্ধ নজির মিয়াকেও হত্যা করে আসামিরা। পরে লুট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও একটি মোবাইলফোন।
মামলার রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত ৩ জনকেই মৃত্যদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এবং লুট করে নেয়া মোবাইল ফোনের ক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন এবং পরীক্ষা—নিরীক্ষা শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করেই মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং রায় ঘোষণা করা হয়। এ রায়ে বিবাদীরা সন্তুষ্ট নন। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতি হত্যা মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড

আপলোড টাইম : ০৩:৩৭:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতিকে হত্যার দায়ে তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে আরও এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪), একই গ্রামের শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুত আলী (২৩)। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাননগর স্কুল পাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজারপাড়ার একটি বাড়ি থেকে হাত পা মুখ বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধ দম্পতি নজির মিয়া (৭০) ও ফরিদা বেগমের (৬০) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর চারদিন পর হত্যাকারী সন্দেহে ওই চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বৃদ্ধ নজির আলী ছিলেন একজন বালু ব্যবসায়ী। আর আসামি সাহাবুল হক ছিলেন বালু বহনে ব্যবহৃত যানের চালক। এ সুবাদে ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল সাহাবুলের। সে জানতো ওই বাড়িতে কোথায় টাকা পয়সা রাখা হতো। পরিকল্পনা মাফিক আসামিরা ওই দম্পতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা লুট করতে বালু কেনার নাম করে বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বাধা দিলে তাকে প্রথমে শ্বাসরোধ এবং কুপিয়ে হত্যা করে এবং বৃদ্ধ নজির মিয়াকেও হত্যা করে আসামিরা। পরে লুট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও একটি মোবাইলফোন।
মামলার রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত ৩ জনকেই মৃত্যদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এবং লুট করে নেয়া মোবাইল ফোনের ক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন এবং পরীক্ষা—নিরীক্ষা শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট।
মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করেই মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং রায় ঘোষণা করা হয়। এ রায়ে বিবাদীরা সন্তুষ্ট নন। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে।