ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদা উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে ২০০৫ সালে নির্মিত রশিকপুর অত্যাধুনিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি চালু করার দাবী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩০৭ বার পড়া হয়েছে

Rosik pur -1 (1)

রশিকপুর থেকে ফিরে আওয়াল হোসেন:  দামুড়হুদা উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে ২০০৫ সালে রশিকপুর একটি আধুনিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মান করা হলেও আজ অবধি বিদ্যালয়টি চালু করা হয়নি। তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় সাড়ে ৪বিঘা জমির উপর ১২টি কক্ষ ও ৪টি বাথরুমসহ নির্মিত অত্যাধনিক রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ২০০৩ সালে রশিকপুর গ্রামের সুলতান শেখ এর নিকট থেকে গ্রামবাসী অন্যত্র জমি কিনে দেওয়ার নাম করে সাড়ে ৩বিঘা এবং ঐ একই গ্রামের আমির হোসেনের নিকট থেকে ৬কাঠা জমি নিয়ে এবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে এ বিদ্যালয়টি নির্মান কাজ সম্পুর্ণ করেন। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বিদ্যালয়টি নির্মানের পর থেকে চালু হয়নি। এর কারণ সর্ম্পকে জমি দাতা ও গ্রামবাসী জনান, সুলতান শেখ ও আমির হোসেনের ঐ বিদ্যালয়ের জমির পরিবর্তে অন্যত্র জমি ক্রয় করে দেওয়ার কথা থাকলেও পরে আর ঐ জমি ক্রয় করে দেয়নি। ফলে সুলতান শেখ মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী আম্মাতুন বেগম এর পরিবারের সাথে তৎকালিন বিদ্যালয় কমিটি প্রতারণা করায় কোটে মামলা করেন। এরপর থেকে প্রায় ১৪ বছর ধরে এ জমি নিয়ে মামলা চলছে। এছাড়া ঐ বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকুরী নেওয়ার জন্য রশিকপুর গ্রামের বুলবুল আহম্মেদ, আল আমিন, সাইফুল ইসলামসহ প্রায় ১০/১২ জন বিদ্যালয় কমিটির নিকট কেউ ৩ লাখ কেউ ৪ লাখ টাকা দেন। সেই টাকাও ঐ বিদ্যালয় কমিটির লোকজন আত্মসাত করেছে বলে গ্রামের সুলতান শেখের স্ত্রী আম্মাতুন বেগম, তার নাতি শিরিনা, মাহাবুব হোসেন গ্রামের ওয়াজেদ শেখ, হাশেম খাঁ, হায়তুল শেখ, মোঃ লাল্টু খাঁ, জহুর আলীসহ বেশ কিছু লোকজন জানান। গ্রামের বেকার শিক্ষিত ছেলে ও মেয়েরা স্কুলে চাকুরীর শর্তে ঐ সব টাকা নিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে ঐ টাকা দিয়ে জমি মালিক সুলতান শেখ ও আমির হোসেনকে জমি ক্রয় করে দেওয়ার শর্তে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়ে ছিল। কিন্তু সে সময়ের বিদ্যালয় কমিটি সদস্য মনির হোসেন মেম্বর, রতন, রবিউল ইসলাম ও ফিরোজ আহম্মেদসহ কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টরা জমির মালিকদের সাথে প্রতারণা করলে সুলতান শেখের স্ত্রী মেহেরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়টি পরিত্যাক্ত আবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বিদ্যালয়টির জানালা ও দরজা ভেঙ্গে ১২টি কক্ষের ৪৮টি ফ্যান, পানি উঠানো মটর, পানির ট্যাংক, শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। রশিকপুর পরিত্যাক্ত মাঠে বেশ কয়েকজন যুবক শফিক, আশিক, সামিউল, মেহেদী, সম্্রাট ও বাদশা ক্রিকেট খেলছিলেন বিদ্যালয়ের ছবি তুলতে দেখে ছুটে আসে এবং এসময় তারা বলে আমাদের এ স্কুলটি কি চালু হবে ভাই। আমরা খুব কষ্ট করে ভৈরব নদী পার হয়ে বাগোয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বর্ষ মৌসুমে আমাদের নৌকা করে নদী পার হয়ে স্কুলে যেদে হয়। গত বছর এ নদী পার হতে গিয়ে আমাদের সাথী ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী তানিয়া ও ববিতা নৌকা ডুবিতে মারা যায়। আমাদের এ রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি যদি সে সময় চালু হতো তাহলে তানিয়া ও ববিতা প্রাণ হারাতে হতো না। আমাদের দাবী গ্রামের অসহায় মৃত. সুলতান শেখের স্ত্রীর দেনা পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে এই সুন্দর বিদ্যালয়টি চালু করা হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দামুড়হুদা উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে ২০০৫ সালে নির্মিত রশিকপুর অত্যাধুনিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি চালু করার দাবী

আপলোড টাইম : ১২:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৭

Rosik pur -1 (1)

রশিকপুর থেকে ফিরে আওয়াল হোসেন:  দামুড়হুদা উপজেলা ও মুজিবনগর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে ২০০৫ সালে রশিকপুর একটি আধুনিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মান করা হলেও আজ অবধি বিদ্যালয়টি চালু করা হয়নি। তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় সাড়ে ৪বিঘা জমির উপর ১২টি কক্ষ ও ৪টি বাথরুমসহ নির্মিত অত্যাধনিক রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ২০০৩ সালে রশিকপুর গ্রামের সুলতান শেখ এর নিকট থেকে গ্রামবাসী অন্যত্র জমি কিনে দেওয়ার নাম করে সাড়ে ৩বিঘা এবং ঐ একই গ্রামের আমির হোসেনের নিকট থেকে ৬কাঠা জমি নিয়ে এবিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে এ বিদ্যালয়টি নির্মান কাজ সম্পুর্ণ করেন। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ বিদ্যালয়টি নির্মানের পর থেকে চালু হয়নি। এর কারণ সর্ম্পকে জমি দাতা ও গ্রামবাসী জনান, সুলতান শেখ ও আমির হোসেনের ঐ বিদ্যালয়ের জমির পরিবর্তে অন্যত্র জমি ক্রয় করে দেওয়ার কথা থাকলেও পরে আর ঐ জমি ক্রয় করে দেয়নি। ফলে সুলতান শেখ মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী আম্মাতুন বেগম এর পরিবারের সাথে তৎকালিন বিদ্যালয় কমিটি প্রতারণা করায় কোটে মামলা করেন। এরপর থেকে প্রায় ১৪ বছর ধরে এ জমি নিয়ে মামলা চলছে। এছাড়া ঐ বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকুরী নেওয়ার জন্য রশিকপুর গ্রামের বুলবুল আহম্মেদ, আল আমিন, সাইফুল ইসলামসহ প্রায় ১০/১২ জন বিদ্যালয় কমিটির নিকট কেউ ৩ লাখ কেউ ৪ লাখ টাকা দেন। সেই টাকাও ঐ বিদ্যালয় কমিটির লোকজন আত্মসাত করেছে বলে গ্রামের সুলতান শেখের স্ত্রী আম্মাতুন বেগম, তার নাতি শিরিনা, মাহাবুব হোসেন গ্রামের ওয়াজেদ শেখ, হাশেম খাঁ, হায়তুল শেখ, মোঃ লাল্টু খাঁ, জহুর আলীসহ বেশ কিছু লোকজন জানান। গ্রামের বেকার শিক্ষিত ছেলে ও মেয়েরা স্কুলে চাকুরীর শর্তে ঐ সব টাকা নিয়ে ছিলেন। পরবর্তীতে ঐ টাকা দিয়ে জমি মালিক সুলতান শেখ ও আমির হোসেনকে জমি ক্রয় করে দেওয়ার শর্তে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়ে ছিল। কিন্তু সে সময়ের বিদ্যালয় কমিটি সদস্য মনির হোসেন মেম্বর, রতন, রবিউল ইসলাম ও ফিরোজ আহম্মেদসহ কমিটির সাথে সংশ্লিষ্টরা জমির মালিকদের সাথে প্রতারণা করলে সুলতান শেখের স্ত্রী মেহেরপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়টি পরিত্যাক্ত আবস্থায় পড়ে আছে। ফলে বিদ্যালয়টির জানালা ও দরজা ভেঙ্গে ১২টি কক্ষের ৪৮টি ফ্যান, পানি উঠানো মটর, পানির ট্যাংক, শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। রশিকপুর পরিত্যাক্ত মাঠে বেশ কয়েকজন যুবক শফিক, আশিক, সামিউল, মেহেদী, সম্্রাট ও বাদশা ক্রিকেট খেলছিলেন বিদ্যালয়ের ছবি তুলতে দেখে ছুটে আসে এবং এসময় তারা বলে আমাদের এ স্কুলটি কি চালু হবে ভাই। আমরা খুব কষ্ট করে ভৈরব নদী পার হয়ে বাগোয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়। বর্ষ মৌসুমে আমাদের নৌকা করে নদী পার হয়ে স্কুলে যেদে হয়। গত বছর এ নদী পার হতে গিয়ে আমাদের সাথী ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী তানিয়া ও ববিতা নৌকা ডুবিতে মারা যায়। আমাদের এ রশিকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি যদি সে সময় চালু হতো তাহলে তানিয়া ও ববিতা প্রাণ হারাতে হতো না। আমাদের দাবী গ্রামের অসহায় মৃত. সুলতান শেখের স্ত্রীর দেনা পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে এই সুন্দর বিদ্যালয়টি চালু করা হোক।