ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেটলাইন ৫ জানুয়ারি : রাজধানীতে আজ আ.লীগের দুই সমাবেশ রাজধানী ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৫৮:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে

xcfgbসমীকরণ ডেস্ক: আজ ৫ জানুয়ারি। একদলীয় ও একতরফা জাতীয় নির্বাচনের তিন বছরপূর্তি দিবস। আলোচিত-সমালোচিত এ দিনটিকে ঘিরে এবার রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের ঝড় থাকলেও সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা একেবারেই ক্ষীণ। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যাদানকারী আওয়ামী লীগ এদিন রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয় উৎসব পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনকারী বিএনপি তাদের কর্মসূচি দুদিন পিছিয়ে দিয়েছে। যদিও দিনটিতে রাজধানী ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে। স্বভাবতই একতরফা জাতীয় নির্বাচনের তৃতীয় বছরে এসে সহিংসতামুক্ত বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের রাজনীতিতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বয়কটের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপির দাবি ভোটারবিহীন এ নির্বাচন দেশসহ বহির্বিশ্বে কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি এ নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে। মূলত রাজনীতিতে সমালোচিত ওই নির্বাচনের পর থেকেই দিনটিকে আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ ও বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
সূত্র জানায়, একতরফা এ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। যেটাকে প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। মূলত আওয়ামী লীগের ওই সিদ্ধান্ত ও বিএনপির পাল্টা অবস্থানের কারণে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে অনেকটাই অচল হয়ে পড়ে দেশ। ওইদিন বিএনপিকে মাঠে নামতে না দেয়ায় টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে তারা। সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ গোটা দেশে। নিহত হয় শতাধিক মানুষ। অবশেষে সরকারের কঠোর অবস্থান ও বিএনপির পিছু হটার কারণে প্রায় তিন মাস পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
একই অবস্থা তৈরি হয় নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি দিবস ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারিতে। দিনটিতে উভয় দলের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে রাজনীতিতে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উদ্বেগ ছড়ায় রাজধানীসহ সারাদেশে। যদিও শেষ পর্যন্ত দুদলই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে। তবে এ বছর বিএনপি তাদের কর্মসূচি পিছিয়ে নেয়ায় আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে মনে করছেন দলটির সংশ্লিষ্ট নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর রাসেল স্কয়ার প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সমাবেশ ও বিজয় র‌্যালির আয়োজন করেছে। সমাবেশ ও বিজয় র‌্যালিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। একইভাবে জেলা-উপজেলায় এমপিদের নেতৃত্বে ৩০০ নির্বাচনী এলাকায় বিকাল সাড়ে ৩টায় একযোগে আনন্দ মিছিল, বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা ও সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। দিবসটির কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন ও রাজপথে থাকতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দুদিন আগে কঠোর বার্তা পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, নির্বাচনের বর্ষপূর্তির এই কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে বিরোধী জোট কোনো নাশকতা করতে না পারে- সে লক্ষ্যে সতর্ক সৃষ্টি রাখা হবে। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল নারকীয় সহিংসতা ও মানুষ হত্যার ঘটনা তুলে ধরা হবে ভিডিও প্রদর্শন, পোস্টার-লিফলেটের মাধ্যমে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। ওইদিন নির্বাচন না হলে মার্শাল ‘ল হতো বাংলাদেশে। দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়ত। এই দিন নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না। বাংলাদেশের অবস্থা থাইল্যান্ডের মতো হতো। এ জন্যই দিনটিতে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে উৎসব করা হবে।
আর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ৫ জানুয়ারির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে। এজন্যই এদিন উৎসবের। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই দেশ পরিচালনা করবে- এ পদ্ধতি নিশ্চিত হয়েছে। হানিফ বলেন, জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিএনপি অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায়। জনগণ তাদের আর ওই সুযোগ দেবে না ।
অন্যদিকে ৫ জানুয়ারির এ দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনে বিএনপি অনড় থাকলেও খালেদা জিয়ার মামলা শুনানির কারণে তা পিছিয়ে ৭ জানুয়ারি করা হয়েছে। তবে আজ দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল করার কর্মসূচি তাদের রয়েছে। বিএনপি সূত্র জানায়, কর্মসূচি পালনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের কর্মসূচি পালনের দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। সবাইকে কালো পতাকা নিয়ে ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি পালনের বার্তা পাঠানো হয় কেন্দ্র থেকে। আর ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে ঢাকা মহানগর বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনুমতি পেলে বড় ধরনের সমাবেশ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। দেশে ৫ ভাগ মানুষও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। পুনরুদ্ধার হওয়া গণতন্ত্র ওইদিন হত্যা করা হয়। তাই এ দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। বুধবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি সব ধরনের হুমকি উপেক্ষা করে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। এ উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি পূর্বঘোষিত সমাবেশের জন্য বিএনপি অনুমতি পাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। এদিনে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে করা হয়েছে পরাধীন। স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার ও ইচ্ছাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আর এটি করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের যে সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র সেটিকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় ৫ জানুয়ারি সারাদেশের মহানগর ও জেলায় কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ এবং ৭ জানুয়ারি ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ডেটলাইন ৫ জানুয়ারি : রাজধানীতে আজ আ.লীগের দুই সমাবেশ রাজধানী ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি

আপলোড টাইম : ১১:৫৮:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৭

xcfgbসমীকরণ ডেস্ক: আজ ৫ জানুয়ারি। একদলীয় ও একতরফা জাতীয় নির্বাচনের তিন বছরপূর্তি দিবস। আলোচিত-সমালোচিত এ দিনটিকে ঘিরে এবার রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের ঝড় থাকলেও সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা একেবারেই ক্ষীণ। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যাদানকারী আওয়ামী লীগ এদিন রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয় উৎসব পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনকারী বিএনপি তাদের কর্মসূচি দুদিন পিছিয়ে দিয়েছে। যদিও দিনটিতে রাজধানী ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে বিএনপি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে। স্বভাবতই একতরফা জাতীয় নির্বাচনের তৃতীয় বছরে এসে সহিংসতামুক্ত বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের রাজনীতিতে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলেও বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বয়কটের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপির দাবি ভোটারবিহীন এ নির্বাচন দেশসহ বহির্বিশ্বে কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের দাবি এ নির্বাচনের মাধ্যমে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে। মূলত রাজনীতিতে সমালোচিত ওই নির্বাচনের পর থেকেই দিনটিকে আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ ও বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
সূত্র জানায়, একতরফা এ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। যেটাকে প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। মূলত আওয়ামী লীগের ওই সিদ্ধান্ত ও বিএনপির পাল্টা অবস্থানের কারণে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে অনেকটাই অচল হয়ে পড়ে দেশ। ওইদিন বিএনপিকে মাঠে নামতে না দেয়ায় টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে তারা। সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীসহ গোটা দেশে। নিহত হয় শতাধিক মানুষ। অবশেষে সরকারের কঠোর অবস্থান ও বিএনপির পিছু হটার কারণে প্রায় তিন মাস পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
একই অবস্থা তৈরি হয় নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি দিবস ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারিতে। দিনটিতে উভয় দলের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে রাজনীতিতে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উদ্বেগ ছড়ায় রাজধানীসহ সারাদেশে। যদিও শেষ পর্যন্ত দুদলই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে। তবে এ বছর বিএনপি তাদের কর্মসূচি পিছিয়ে নেয়ায় আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে মনে করছেন দলটির সংশ্লিষ্ট নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর রাসেল স্কয়ার প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সমাবেশ ও বিজয় র‌্যালির আয়োজন করেছে। সমাবেশ ও বিজয় র‌্যালিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। একইভাবে জেলা-উপজেলায় এমপিদের নেতৃত্বে ৩০০ নির্বাচনী এলাকায় বিকাল সাড়ে ৩টায় একযোগে আনন্দ মিছিল, বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা ও সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। দিবসটির কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন ও রাজপথে থাকতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দুদিন আগে কঠোর বার্তা পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, নির্বাচনের বর্ষপূর্তির এই কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে বিরোধী জোট কোনো নাশকতা করতে না পারে- সে লক্ষ্যে সতর্ক সৃষ্টি রাখা হবে। আর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল নারকীয় সহিংসতা ও মানুষ হত্যার ঘটনা তুলে ধরা হবে ভিডিও প্রদর্শন, পোস্টার-লিফলেটের মাধ্যমে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। ওইদিন নির্বাচন না হলে মার্শাল ‘ল হতো বাংলাদেশে। দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়ত। এই দিন নির্বাচন না হলে দেশে গণতন্ত্র থাকত না। বাংলাদেশের অবস্থা থাইল্যান্ডের মতো হতো। এ জন্যই দিনটিতে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে উৎসব করা হবে।
আর দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ৫ জানুয়ারির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়েছে। এজন্যই এদিন উৎসবের। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছে। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই দেশ পরিচালনা করবে- এ পদ্ধতি নিশ্চিত হয়েছে। হানিফ বলেন, জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত বিএনপি অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায়। জনগণ তাদের আর ওই সুযোগ দেবে না ।
অন্যদিকে ৫ জানুয়ারির এ দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনে বিএনপি অনড় থাকলেও খালেদা জিয়ার মামলা শুনানির কারণে তা পিছিয়ে ৭ জানুয়ারি করা হয়েছে। তবে আজ দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল করার কর্মসূচি তাদের রয়েছে। বিএনপি সূত্র জানায়, কর্মসূচি পালনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের কর্মসূচি পালনের দিকনির্দেশনাও দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। সবাইকে কালো পতাকা নিয়ে ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি পালনের বার্তা পাঠানো হয় কেন্দ্র থেকে। আর ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে ঢাকা মহানগর বিএনপি প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনুমতি পেলে বড় ধরনের সমাবেশ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। দেশে ৫ ভাগ মানুষও ভোট কেন্দ্রে যায়নি। পুনরুদ্ধার হওয়া গণতন্ত্র ওইদিন হত্যা করা হয়। তাই এ দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে। বুধবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি সব ধরনের হুমকি উপেক্ষা করে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। এ উপলক্ষে ৭ জানুয়ারি পূর্বঘোষিত সমাবেশের জন্য বিএনপি অনুমতি পাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। এদিনে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে করা হয়েছে পরাধীন। স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের অধিকার ও ইচ্ছাকে ধ্বংস করা হয়েছে। আর এটি করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের যে সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র সেটিকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় ৫ জানুয়ারি সারাদেশের মহানগর ও জেলায় কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণ এবং ৭ জানুয়ারি ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন।