ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মিথ্যা প্রতিবেদনের অভিযোগ

শৈলকুপায় শিক্ষক জাহাঙ্গীরের নিয়োগের বৈধতা দিতে সাবেক শিক্ষকের তথ্য গোপন

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদে নিয়োগ দেওয়া গণিতের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের ওপর ওঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে সাবেক শিক্ষকের তথ্য গোপন করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী। বিভিন্ন সময়ে এলাকার লোকজন জাহাঙ্গীর হোসেনের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ বলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু বারবারই পার পেয়ে যান তিনি। ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর তৎকালীন জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান জেশিঅঝি-১৩৪৬ নম্বর স্মারকে এমপিওভুক্তির জন্য মাউশিতে তথ্য প্রেরণ করেন। সেই তথ্য অনুযায়ী গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মো. আনসার উদ্দিন (ইনডেক্স নম্বর- ১৮৮৭১৮) গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মো. আনসার উদ্দিনের অবসরজনিত শূন্যপদে মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীর হোসেনের যোগদানের তারিখ ২৩-১০-২০১১।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেনের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদ ছিল জাল। তার দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদের রেজি-নম্বর- ৯০০১০৭৩২/২০০৯, রোল নম্বর- ৩১২১১৫০৮, সনদের সিরিয়াল নম্বর- ৯০৯৩৫২। তবে এই সনদের সিরিয়াল ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের রেজিস্ট্রারে পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল হলে শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমান মামলা না করে কাগজপত্র জালিয়াতি করে জাহাঙ্গীর হোসেনকে ২০০৪ সালে নিয়োগ দেখান। যখন কোনো নিবন্ধনের দরকার হতো না।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ডিগ্রি পাস করেছেন ২০০৫ সালে। এদিকে সাবেক শিক্ষক আনসার উদ্দিনের তথ্য গোপন করে জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তদন্তের সত্যতা নিয়ে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শামিম হোসেন মোল্লা তদন্তের শুনানিতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন নিয়োগ পেয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, এই অভিযোগ সত্য নয়।

প্রধান শিক্ষক মখলেচুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে নিয়োগ পেয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদানের সাথে কর্মরত আছে। লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগটি সত্য নয় মর্মে উল্লেখ করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। তারা দাবি তুলেছেন, ২০০৪ সাল থেকে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা যাচাই করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন পুনরায় অভিযোগটির তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করা হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মিথ্যা প্রতিবেদনের অভিযোগ

শৈলকুপায় শিক্ষক জাহাঙ্গীরের নিয়োগের বৈধতা দিতে সাবেক শিক্ষকের তথ্য গোপন

আপলোড টাইম : ০৯:২৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জাল সনদে নিয়োগ দেওয়া গণিতের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের ওপর ওঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে সাবেক শিক্ষকের তথ্য গোপন করে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী। বিভিন্ন সময়ে এলাকার লোকজন জাহাঙ্গীর হোসেনের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ বলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু বারবারই পার পেয়ে যান তিনি। ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর তৎকালীন জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান জেশিঅঝি-১৩৪৬ নম্বর স্মারকে এমপিওভুক্তির জন্য মাউশিতে তথ্য প্রেরণ করেন। সেই তথ্য অনুযায়ী গাড়াগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মো. আনসার উদ্দিন (ইনডেক্স নম্বর- ১৮৮৭১৮) গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মো. আনসার উদ্দিনের অবসরজনিত শূন্যপদে মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীর হোসেনের যোগদানের তারিখ ২৩-১০-২০১১।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেনের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদ ছিল জাল। তার দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদের রেজি-নম্বর- ৯০০১০৭৩২/২০০৯, রোল নম্বর- ৩১২১১৫০৮, সনদের সিরিয়াল নম্বর- ৯০৯৩৫২। তবে এই সনদের সিরিয়াল ঝিনাইদহ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের রেজিস্ট্রারে পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল হলে শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মোকলেছুর রহমান মামলা না করে কাগজপত্র জালিয়াতি করে জাহাঙ্গীর হোসেনকে ২০০৪ সালে নিয়োগ দেখান। যখন কোনো নিবন্ধনের দরকার হতো না।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ডিগ্রি পাস করেছেন ২০০৫ সালে। এদিকে সাবেক শিক্ষক আনসার উদ্দিনের তথ্য গোপন করে জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তদন্তের সত্যতা নিয়ে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি শামিম হোসেন মোল্লা তদন্তের শুনানিতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন নিয়োগ পেয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, এই অভিযোগ সত্য নয়।

প্রধান শিক্ষক মখলেচুর রহমান বলেন, ২০০৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে নিয়োগ পেয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদানের সাথে কর্মরত আছে। লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগটি সত্য নয় মর্মে উল্লেখ করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন। তারা দাবি তুলেছেন, ২০০৪ সাল থেকে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা যাচাই করলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন পুনরায় অভিযোগটির তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করা হোক।