ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুজিবনগরে চাঁদাবাজি ও ফল লুটপাটের ঘটনায় মামলা

চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ আসামি ১৫৩

প্রতিবেদক, মেহেরপুর সদর:
  • আপলোড টাইম : ০৮:০১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে

১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় ও ৪০ লাখ টাকার ফল লুটপাটের অভিযোগে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগ নেতা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষসহ ১৫৩ জনের নামের মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম (মুজিবনগর) আদালতে আসাদুল হক নামের এক ফল ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা করেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অলোক কুমার দাস, মুজিবনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওমর খৈয়াম উষা, আশরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহাজ উদ্দিন, দারিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম রবি, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, সদরের কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন, মুজিবনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, অনলাইন জুয়ার এজেন্ট নুুরুল ইসলাম লালন, মাদার মাস্টারের ছেলে অনিক, লিপু, বিজয় ও মুজিবনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তকলিমা খাতুন তকলি।

মামলার বাদী পক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, আসামিরা পরস্পর চাঁদাবাজ ও তৎকালীন ক্ষমতাধর ব্যক্তি। বাদী একজন মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী। তিনি তার এলাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ফল তথা আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ক্রয় করিয়া বিভিন্ন পাইকার ফড়িয়াদের নিকট বাগানে বাগানে বিক্রয় করে থাকেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের পর আসামিরা বাদীকে বলেন যে, তাদের সরকারের আমলে ব্যবসা করতে হলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। ওই সময় বাদীর নিজের ও বিভিন্ন পার্টনারদের সাথে প্রায় ১ কোটি টাকার ফল কর নেয়া ছিল। আসামিদের হুমকিতে বাদী থানায় গেলেও পুলিশ প্রভাবশালী আসামিদের চাপে বাদীর কোনোরূপ অভিযোগ এমনকি জিডি এন্ট্রি পর্যন্ত করেনি।

বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের আসামিদের মাধ্যমে খুন-গুম, অপহরণ ও লুটপাটের হুমকি আসতে থাকলে ও আসামিরা স্বয়ং অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে চাঁদা দাবি করলে বাদী ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল ১ নম্বর আসামি আমাম হোসেন মিলুর বাড়ি গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যবসা করেন। তারপর পুনরায় আসামিরা বাদীর নিকট হতে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে বাদী আসামিদের বুঝান যে, সমস্ত বছরে ওই পরিমাণ লাভ হয় না যেখান থেকে তাদের চাঁদা দিবে। কিন্তু আসামিরা বাদীর কোনো কথায় আমলে নেয়নি। ২০২১-২০২২ মৌসুমে আসামিরা বাদীর ১৭টি বাগানের আম-লিচু (মূল্য অনুমান ৪০ লাখ টাকা) লুট করে নিয়ে যায়।

বাদী বাঁধা দিতে গেলে তাকে এলোপাতাড়িভাবে লাথি, কিল, ঘুষি মারে গুরুতর জখম করেন। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকায় বাদীকে আসামিরা আদালত চত্বরে পর্যন্ত আসতে দেয়নি। পুলিশের ভূমিকাও ছিল নীরব দর্শকের। আসামিরা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হওয়ায় এবং তাদের দল দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকায় ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মুজিবনগরে চাঁদাবাজি ও ফল লুটপাটের ঘটনায় মামলা

চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ আসামি ১৫৩

আপলোড টাইম : ০৮:০১:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় ও ৪০ লাখ টাকার ফল লুটপাটের অভিযোগে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগ নেতা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষসহ ১৫৩ জনের নামের মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম (মুজিবনগর) আদালতে আসাদুল হক নামের এক ফল ব্যবসায়ী বাদী হয়ে এই মামলা করেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অলোক কুমার দাস, মুজিবনগর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওমর খৈয়াম উষা, আশরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহাজ উদ্দিন, দারিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম রবি, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, সদরের কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন, মুজিবনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, অনলাইন জুয়ার এজেন্ট নুুরুল ইসলাম লালন, মাদার মাস্টারের ছেলে অনিক, লিপু, বিজয় ও মুজিবনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তকলিমা খাতুন তকলি।

মামলার বাদী পক্ষে আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, আসামিরা পরস্পর চাঁদাবাজ ও তৎকালীন ক্ষমতাধর ব্যক্তি। বাদী একজন মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী। তিনি তার এলাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ফল তথা আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা ইত্যাদি ফল ক্রয় করিয়া বিভিন্ন পাইকার ফড়িয়াদের নিকট বাগানে বাগানে বিক্রয় করে থাকেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের পর আসামিরা বাদীকে বলেন যে, তাদের সরকারের আমলে ব্যবসা করতে হলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। ওই সময় বাদীর নিজের ও বিভিন্ন পার্টনারদের সাথে প্রায় ১ কোটি টাকার ফল কর নেয়া ছিল। আসামিদের হুমকিতে বাদী থানায় গেলেও পুলিশ প্রভাবশালী আসামিদের চাপে বাদীর কোনোরূপ অভিযোগ এমনকি জিডি এন্ট্রি পর্যন্ত করেনি।

বাদী ও তার পরিবারের লোকজনদের আসামিদের মাধ্যমে খুন-গুম, অপহরণ ও লুটপাটের হুমকি আসতে থাকলে ও আসামিরা স্বয়ং অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে চাঁদা দাবি করলে বাদী ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল ১ নম্বর আসামি আমাম হোসেন মিলুর বাড়ি গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত ব্যবসা করেন। তারপর পুনরায় আসামিরা বাদীর নিকট হতে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে বাদী আসামিদের বুঝান যে, সমস্ত বছরে ওই পরিমাণ লাভ হয় না যেখান থেকে তাদের চাঁদা দিবে। কিন্তু আসামিরা বাদীর কোনো কথায় আমলে নেয়নি। ২০২১-২০২২ মৌসুমে আসামিরা বাদীর ১৭টি বাগানের আম-লিচু (মূল্য অনুমান ৪০ লাখ টাকা) লুট করে নিয়ে যায়।

বাদী বাঁধা দিতে গেলে তাকে এলোপাতাড়িভাবে লাথি, কিল, ঘুষি মারে গুরুতর জখম করেন। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকায় বাদীকে আসামিরা আদালত চত্বরে পর্যন্ত আসতে দেয়নি। পুলিশের ভূমিকাও ছিল নীরব দর্শকের। আসামিরা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হওয়ায় এবং তাদের দল দীর্ঘদিন ক্ষমতা থাকায় ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।