চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও দামুড়হুদা থানা পরিদর্শন করেছেন জেলার নবাগত পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বিপিএম-সেবা। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটটা ও সন্ধ্যা সাতটায় পৃথক সময়ে দুটি থানা পরিদর্শন করেন তিনি। পরিদর্শনকালে পৃথক থানায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
দর্শনা থানা চত্বরে মতবিনিময় সভাড পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, ‘আমরা এখন থেকে যতটুকু সময় ব্যয় করব, জনগণের স্বার্থে। পুলিশ আজ থেকে মানবতার সেবায় কাজ করবে। যে পুলিশ যেখানে আছে, যতটুকু সময় আছে, তাদের নির্ভুলভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। যদি পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসে, সাথে সাথে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমার জেলায় কোনো মাদক কারবারির জায়গা হবে না, সে যে দলেরই হোক। এখন থেকে সাধারণ ডায়েরি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, মামলা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো হয়রানির অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ওই থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার অফিস আপনাদের সেবায় সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। যখন প্রয়োজন আমার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করবেন।’

এসময় দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের দিন থানা পাহারা দিয়েছি। পুলিশ আমাদের ভাই। আপনাদের সুরক্ষা দিয়েছি। আমরা মাদকমুক্ত সমাজ চাই। আমরা অতীতে ১৭ বছর যে অত্যাচার সহ্য করেছি, সে কথা ভুলে যেতে চাই। আমরা চাই আপনারা জনগণের সেবক হন। আজ যদি এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ থাকতো, তাহলে সবচাইতে কথা বলতে ভালো হতো। সামনে হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় শারদীয়া দুর্গা উৎসব যাতে নিরাপদে নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে, আমরা সেদিকে খেয়াল রাখব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা, ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম, ওসি (অপারেশন) নীরব হোসেন, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহম্মেদ আলী, দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট, দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক সদস্য নাহারুল ইসলাম, দর্শনা থানা জামায়াতের আমির মাহাবুবুর রহমান টুকু, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি আব্দুল কাদের, দর্শনা পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুল হক, সাহিকুল ইসলাম অপু, মাসুদ রানা, দবির উদ্দীন, জহিরুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন ও শিমুল বিশ্বাস।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক মাহাবুর রহমান খোকন, শরীফ উদ্দীন, নাসিরুদ্দিন খেদু, মহিউদ্দিন মহি, জালাল উদ্দীন লিটন, জালাল উদ্দীন, লুৎফর রহমান, হাবিবুর রহমান বিপ্লব, রেজাউল হক, গড়াইটুপি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন। আর সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়াল হোসেন, মনিরুজ্জামান ধীরু, জাহিদুল ইসলাম, এফ এ আলমগীর, হানিফ মন্ডল, আহসান হাবীব মামুন, মনিরুজ্জামান সুমন, হাসমত, ইমতিয়াজ রয়েল প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা।

এদিকে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবিরের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পুলিশকে অবশ্যই জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আস্থা অর্জন করতে হবে সাধারণ মানুষের। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার্থে জেলা পুলিশ বদ্ধপরিকর। বিগত দিনের কথা সবাই ভুলে যান। নতুন উদ্যোগে কাজ করার মন-মানসিকতা তৈরি করতে হবে।’

তিনি বলেন, পুলিশে চাকরি করতে হলে অবশ্যই নিজের কর্তব্য এবং সাহসিকতার পরিচয় দিতে হবে। খারাপ আচরণ করে নয়, ভালোবেসে পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাধারণ জনগণের জন্য পুলিশের দরজা সব সময় উন্মুক্ত থাকবে। মাদক ব্যবসায়ীদের শিকড় উপড়ে ফেলা হবে, এতে কোনরকম ছাড় দেওয়া হবে না। যদি জনগণ পুলিশকে সহযোগিতা করেন তবেই এটা সম্ভব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) হিমেল, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান।

এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি জিতু, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের আহবায়ক শামসুজ্জোহা পলাশ, যুগ্ম আহবায়ক মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, সদস্যসচিব তানজির ফয়সাল, দৈনিক সময়ের সমীকরণের দামুড়হুদা উপজেলা প্রতিনিধি মোজাম্মেল শিশির, সাংবাদিক জাহজালাল বাবু, আরিফুল ইসলাম মিলন, রকিবুল হাসান তোতা, জাহাঙ্গীর আলম মানিক, এসএম সুজন, বিল্লাল হোসেন, মেহেদী হাসান মিলনসহ জনপ্রতিনিধি ও মডেল থানার পুলিশের সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।