ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে পাবলিক প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে মামলা, সহযোগী আসামি ১৮১

ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

প্রতিবেদক, মেহেরপুর সদর:
  • আপলোড টাইম : ০৯:০২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৩ বার পড়া হয়েছে

অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, খুন ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে হাজির হয়ে কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় পিপির সহযোগী হিসেবে ১৮১ জনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনার আবেদন করেছেন বাদী। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা ১৮১ সহযোগী আসামির মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবুল বিশ্বাস, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জামান চৌধুরী, বারাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রুপক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান হিরণ ও ছাত্রলীগ নেতা কুতুব উদ্দিন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেন, মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পিপি পল্লব ভট্টাচার্য প্রভাব খাটিয়ে সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদ দখলে নিয়ে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ বাহিনী তৈরি করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেন এবং নিরীহ লোকদের মামলা, খুন ও গুম এর ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিগত ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৯টি মামলার আসামিদের কাছে থেকে সহযোগী আসামিদের দিয়ে নিরীহ লোকদের তার বাড়িতে অথবা তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে এসে টাকা আদায় করেছেন। যেসব লোকজন আসামিকে টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে তাদের ওপরে উল্লেখিত মামলায় আসামি করে এবং উল্লেখিত মামলায় আসামির সংখ্যা অনুমান দেড় থেকে দুই হাজার হবে। এই আসামিদের সঙ্গে জামিনের মুক্তি বা চার্জ হতে খালাস বা খালাস প্রদানের নামে আসামিকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও সাজা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন কোটি টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদী তাহার দলীয় সংগঠনের পক্ষ হতে মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করার দায়িত্ব থাকায় আসামিকে তাকে তার নিজস্ব বাড়ির ‘ল’ চেম্বারে ডেকে নেন এবং সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ১১ জন আসামির জামিনের জন্য ৪ লাখ টাকা চাঁদা গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, পল্লব ভট্টাচার্য ২০১৪ সাল থেকে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি দুই মাসের ছুটিতে জাপানে অবস্থান করছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরে পাবলিক প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে মামলা, সহযোগী আসামি ১৮১

ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৯:০২:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, খুন ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে হাজির হয়ে কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় পিপির সহযোগী হিসেবে ১৮১ জনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনার আবেদন করেছেন বাদী। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা ১৮১ সহযোগী আসামির মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবুল বিশ্বাস, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জামান চৌধুরী, বারাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রুপক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান হিরণ ও ছাত্রলীগ নেতা কুতুব উদ্দিন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেন, মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পিপি পল্লব ভট্টাচার্য প্রভাব খাটিয়ে সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদ দখলে নিয়ে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ বাহিনী তৈরি করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেন এবং নিরীহ লোকদের মামলা, খুন ও গুম এর ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিগত ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৯টি মামলার আসামিদের কাছে থেকে সহযোগী আসামিদের দিয়ে নিরীহ লোকদের তার বাড়িতে অথবা তার চেম্বারে ডেকে নিয়ে এসে টাকা আদায় করেছেন। যেসব লোকজন আসামিকে টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে তাদের ওপরে উল্লেখিত মামলায় আসামি করে এবং উল্লেখিত মামলায় আসামির সংখ্যা অনুমান দেড় থেকে দুই হাজার হবে। এই আসামিদের সঙ্গে জামিনের মুক্তি বা চার্জ হতে খালাস বা খালাস প্রদানের নামে আসামিকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও সাজা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন কোটি টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদী তাহার দলীয় সংগঠনের পক্ষ হতে মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করার দায়িত্ব থাকায় আসামিকে তাকে তার নিজস্ব বাড়ির ‘ল’ চেম্বারে ডেকে নেন এবং সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ১১ জন আসামির জামিনের জন্য ৪ লাখ টাকা চাঁদা গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, পল্লব ভট্টাচার্য ২০১৪ সাল থেকে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি দুই মাসের ছুটিতে জাপানে অবস্থান করছেন।