দর্শনায় নঈম উদ্দীন আহমেদ পল্টুর ৫ম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ আসর দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে এই দোয়ার আয়োজন করে ঈশ্বরচন্দ্রপুর ও দর্শনাবাসী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন পল্টুর বড় ছেলে মো. শাহারিয়ার হক বাঁধন। মো. আমির হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মো. আজিজুল হক, মো. বেল্টু, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মনজুর ও ইমতিয়াজ আহমেদ রয়েল।
এসময় বক্তারা বলেন, এ দেশের বিচার বিভাগের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আমরা পল্টু হত্যার সঠিক বিচার চাই। ওই খুনিদের ফাঁসি চাই। আমরা দীর্ঘ ৫ বছর আইনের প্রতি ভরসা করে দেখেছি কোনো বিচার পাইনি। তাই আবারও রাজপথে নেমে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় দ্রুততম সময়ে সঠিক বিচার চাই। আর এই খুনিদের যারা মদদদাতা, বিশেষ করে এই সংসদীয় আসনের তথা চুয়াডাঙ্গা—২ আসনের সাবেক এমপি টগর ও তার ছোট ভাই দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবুর প্রতি ঘৃণা ধিক্কার জানাই। যারা জনপ্রতিনিধির নামে এই দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার সাধারণ মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শোষক হয়ে অসংখ্য মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছে।
তারা আরও বলেন, এইতো সেদিনের কথা, গত ৪ আগস্ট সারা দেশের ন্যায় দর্শনাতেও শান্তিপূর্ণভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ওই শোষক এমপি ও তার ভাইয়ের হুকুমে তাদের সেই কুখ্যাত সন্ত্রাস ক্যাডার বাহিনীর প্রধান তোতা ও মান্নানের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য উপস্থিত সাংবাদিকদেরও হুমকি দেয়, সেখানে কোনো ভিডিও ধারণ করা যাবে না বলে। এমনকি সেই সংবাদ প্রকাশ না করার জন্যেও মোবাইলে হুমকি দেয় এই খুনি তোতা।
আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাইফুল ইসলাম হুকুম, মঈন উদ্দিন আহমেদ মণ্টু, খালিদ হাসান মিঠু, মনিরুজ্জামান টুটুল, ইসতিয়াক আহমেদ রানা, অভি, শান্ত, ইমন, রনি, শুভসহ অনেকে। দোয়া পরিচালনা করেন ইসলাম বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন হাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা রেল ইয়ার্ডে যুবলীগের মান্নান, তোতা, দিপু, বাংলা, আলম, সোহেল ও আশিকের নেতৃত্বে ১০—১২ জন প্রকাশ্যে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ দলবল নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে নির্মমভাবে ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে নঈম উদ্দিন আহম্মেদ পল্টুকে (৩৫) হত্যা করেন। এসময় একই গ্রামের মৃত ফরজ আলীর ছেলে সাংবাদিক মঞ্জুর আহম্মেদ আহত হন।