ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় গাড়ল ভেড়া পালনে দূর হচ্ছে বেকারত্ব

আওয়াল হোসেন:
  • আপলোড টাইম : ১২:০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা উপজেলায় গাড়ল ভেড়া পালন করে বেকার সমস্যার অভিশাপ থেকে মুক্ত হচ্ছে যুবকরা। চলার পথে হঠাৎ সদাবরী মাঠে দেখা হলো এমনই এক যুবকের সাথে। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ওই যুবকের নাম আব্দুল গাফফার। তিনি ৬৫টি গাড়ল ভেড়া নিয়ে মাঠে চরাতে এসেছেন।
আব্দুল গাফফার বলেন, ‘আমি বাস্তুপুরে নানা আনছার আলীর বাড়িতে প্রায় ২০ বছর ধরে মামার সাথে মাঠের কাজ করেছি। আর নানার বাড়িতে আমার মামা ইমদাদুল হকের সাথে গাড়ল ভেড়া পালনে সহযোগিতা করেছি। বর্তমানে আমার মামা ১০০টি গাড়ল ভেড়া পালন করছে। সেখান থেকে আমি এ গাড়ল ভেড়া পালনের শিক্ষা নিয়ে প্রথমে ৬০টি গাড়ল ভেড়া কিনে পালন শুরু করি। বর্তমানে আমার পালে ৬৫টি ভেড়া আছে। এর মধ্যে গত ৩ মাসে ১৫টি গাড়ল ভেড়ার বাঁচ্চা ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খাশি গাড়লের বাঁচ্চাগুলো সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। পাটি গাড়লের বাঁচ্চাগুলো ৭ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়। মামার বাড়ি থেকে এসে আমি গত ৩ মাস ধরে এ গাড়ল পালন শুরু করেছি। তিন মাস আগে আমি নানার কাছ থেকে আমার মায়ের ১০ কাঠা জমি পেয়েছিলাম। সেই জমি সাড়ে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে সাথে আরও কিছু টাকা দিয়ে ৬০টি গাড়ল ভেড়া ক্রয় করে পালন করছি। আগে থেকে মামার বাড়িতে গাড়ল ভেড়া পালনের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে।’
এ বিষয় দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপী জানান, ‘দামুড়হুদা উপজেলায় ৯১টি ছোট খামার করে গাড়ল ভেড়া পালন করছেন ৯১ জন খামারী। এছাড়া কেউ কেউ বাড়িতে ৫-৬টি করে দেশী ও গাড়ল ভেড়া পালন করছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দামুড়হুদা উপজেলা ১৮ হাজার ৪৬০টি দেশী ও গাড়ল ভোড়া রয়েছে। বর্তমানে সংখ্যাটা আরও বেশিও হতে পারে। তবে এ বছরের ২০২৪ সালে তথ্য এখনো আমরা আপডেট করিনি।’
গাড়ল ভেড়ার কোন রোগ বেশি হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পিপিআর রোগটা বেশি হয়। তবে এক বছর বয়সে ছাগল, দেশী ভেড়া ও গাড়লের বাঁচ্চার পিপিআর ভ্যাকসিন দিতে হয়। এবং প্রতি ৬ মাসে একবার এবং বছরে একবার বুস্টার ডোজ দিলে এ রোগ থেকে ভালো থাকবে। গত ২০২৩ অর্থবছরে আমরা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯০০টি ছাগল, দেশী ভেড়া ও গাড়লের বিনামূল্যে আমরা পিপিআর ভ্যাকসিন দিয়েছি। গাড়ল ভেড়া পালন একটি লাভজনক চাষ। যদি ঠিকমতো পিপিআর, গুটি পক্সের ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, তাহলে রোগবালাই কম হয়। এতে ছাগল ও ভেড়ার মৃত্যুর ঝুকিও কম থাকে। ফলে এসব ছাগল-ভেড়া পালনকারী কৃষকরা লাভবান হয়।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দামুড়হুদায় গাড়ল ভেড়া পালনে দূর হচ্ছে বেকারত্ব

আপলোড টাইম : ১২:০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪

দামুড়হুদা উপজেলায় গাড়ল ভেড়া পালন করে বেকার সমস্যার অভিশাপ থেকে মুক্ত হচ্ছে যুবকরা। চলার পথে হঠাৎ সদাবরী মাঠে দেখা হলো এমনই এক যুবকের সাথে। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ওই যুবকের নাম আব্দুল গাফফার। তিনি ৬৫টি গাড়ল ভেড়া নিয়ে মাঠে চরাতে এসেছেন।
আব্দুল গাফফার বলেন, ‘আমি বাস্তুপুরে নানা আনছার আলীর বাড়িতে প্রায় ২০ বছর ধরে মামার সাথে মাঠের কাজ করেছি। আর নানার বাড়িতে আমার মামা ইমদাদুল হকের সাথে গাড়ল ভেড়া পালনে সহযোগিতা করেছি। বর্তমানে আমার মামা ১০০টি গাড়ল ভেড়া পালন করছে। সেখান থেকে আমি এ গাড়ল ভেড়া পালনের শিক্ষা নিয়ে প্রথমে ৬০টি গাড়ল ভেড়া কিনে পালন শুরু করি। বর্তমানে আমার পালে ৬৫টি ভেড়া আছে। এর মধ্যে গত ৩ মাসে ১৫টি গাড়ল ভেড়ার বাঁচ্চা ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। খাশি গাড়লের বাঁচ্চাগুলো সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। পাটি গাড়লের বাঁচ্চাগুলো ৭ হাজার টাকা করে বিক্রি হয়। মামার বাড়ি থেকে এসে আমি গত ৩ মাস ধরে এ গাড়ল পালন শুরু করেছি। তিন মাস আগে আমি নানার কাছ থেকে আমার মায়ের ১০ কাঠা জমি পেয়েছিলাম। সেই জমি সাড়ে ৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে সাথে আরও কিছু টাকা দিয়ে ৬০টি গাড়ল ভেড়া ক্রয় করে পালন করছি। আগে থেকে মামার বাড়িতে গাড়ল ভেড়া পালনের অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে।’
এ বিষয় দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপী জানান, ‘দামুড়হুদা উপজেলায় ৯১টি ছোট খামার করে গাড়ল ভেড়া পালন করছেন ৯১ জন খামারী। এছাড়া কেউ কেউ বাড়িতে ৫-৬টি করে দেশী ও গাড়ল ভেড়া পালন করছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দামুড়হুদা উপজেলা ১৮ হাজার ৪৬০টি দেশী ও গাড়ল ভোড়া রয়েছে। বর্তমানে সংখ্যাটা আরও বেশিও হতে পারে। তবে এ বছরের ২০২৪ সালে তথ্য এখনো আমরা আপডেট করিনি।’
গাড়ল ভেড়ার কোন রোগ বেশি হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পিপিআর রোগটা বেশি হয়। তবে এক বছর বয়সে ছাগল, দেশী ভেড়া ও গাড়লের বাঁচ্চার পিপিআর ভ্যাকসিন দিতে হয়। এবং প্রতি ৬ মাসে একবার এবং বছরে একবার বুস্টার ডোজ দিলে এ রোগ থেকে ভালো থাকবে। গত ২০২৩ অর্থবছরে আমরা ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯০০টি ছাগল, দেশী ভেড়া ও গাড়লের বিনামূল্যে আমরা পিপিআর ভ্যাকসিন দিয়েছি। গাড়ল ভেড়া পালন একটি লাভজনক চাষ। যদি ঠিকমতো পিপিআর, গুটি পক্সের ভ্যাকসিন দেওয়া যায়, তাহলে রোগবালাই কম হয়। এতে ছাগল ও ভেড়ার মৃত্যুর ঝুকিও কম থাকে। ফলে এসব ছাগল-ভেড়া পালনকারী কৃষকরা লাভবান হয়।’