ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই যেন রোগী, জনবল ও চিকিৎসক সংকট

কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ

মাহাবুল ইসলাম, গাংনী:
  • আপলোড টাইম : ১০:১৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৭৪ বার পড়া হয়েছে

Exif_JPEG_420

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না রোগীরা। জনবল ও চিকিৎসক সংকটে ধুঁকছে হাসপাতালটি। প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা পাচ্ছেন না কাঙ্খিত চিকিৎসকের। রোগীদের এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে ভিন্ন রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হতে হচ্ছে কিংবা অন্য হাসপাতালে রোগীদের রেফার্ড করা হচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় হাসপাতালটি। কিন্তু সে মোতাবেক জনবল ও চিকিৎসক দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্টসহ মোট ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এ হাসপাতালে রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যদিও খাতা-কলমে দায়িত্ব পালন করছেন ১২ জন। জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) একজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ডেপুটিশনে রয়েছেন।

১৯৬৮ সালে নির্মিত হয় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি সেবার মান। দেয়া হয়নি চাহিদা অনুযায়ী জনবল ও চিকিৎসক। হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসকের পদ থাকলেও খাতা-কলমে রয়েছেন মাত্র ৪ জন। একজন অ্যানেসথেসিয়া থাকলেও হাসপাতালে তার দেখা পাওয়া ভার। সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় বন্ধ অপারেশন।

হাসপাতালে গাইনি, চক্ষু, অর্থপেডিক্স, কার্ডিওলজি, নাক-কান-গলা এবং চর্ম ও যৌন রোগের জন্য হাসপাতালে কনসালটেন্ট চিকিৎসকের পদ থাকলেও পদগুলি দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটিতে অফিস সহকারী, ওয়ার্ড বয়, নৈশপ্রহরী ও ইলেকট্রিশিয়ান পদের সকল পদই বর্তমানে শূন্য। এছাড়া ৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র একজন।

এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এক প্রকার জোড়াতালি দিয়ে চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়েও হাঁপিয়ে উঠছেন চিকিৎসকরা। অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ডাক্তারের অভাবে তা বন্ধ। ফলে কোনো কাজে আসছে না কোটি টাকা মূল্যের অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, দীর্ঘদিনের এ সমস্যা লাঘব হচ্ছে না। ফলে অনেক কষ্ট করেই চালাতে হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এছাড়াও হাসপাতালে গড়ে ৬০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় এবং চিকিৎসক সংকটের কারণে বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯ হাজার ৩১৯ জন। এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৫০ জন রোগী।

এদিকে, হাসপাতালটির একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও ফিল্ম থাকে না। দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে অবহেলায় পড়ে থাকে বছরের পর বছর। প্যাথলজি বিভাগ থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। এছাড়া হাসপাতালের ৩টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটিই অবহেলায় অচল হয়ে পড়ে আছে।

গতকাল বুধবার ও আগের দিন মঙ্গলবার সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। অধিকাংশ রোগীর মুখে হতাশার ছাপ। কেউ কেউ দীর্ঘক্ষণ বসে আছেন বিদ্যুতের অপেক্ষায় বিদ্যুৎ আসলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন। কেউ আবার আছেন পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার আশায়। হাসপাতালে দুটি উচ্চ ক্ষমতার জেনারেটর থাকলেও তা বিকল থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের অধিকাংশ কাজই ব্যাহত হয়।

উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন জানান, ‘সকালে বাবার চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার দেখানোর পর রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন। সে মোতাবেক হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করিয়েছি, তবে রিপোর্টের জন্য বসে আছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারণ হিসেবে তিনি এদিন দীর্ঘক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ না আসায় রিপোর্ট পাচ্ছেন না বলে জানান।’

অসুস্থ বাঁচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা বেতবাড়ীয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলাম জানান, সকালের দিকে হাসপাতালে এসেছি। এখন দুপুর হতে চলল রোগীদেরও দীর্ঘ লাইন, এখনও আমার বাঁচ্চাকে দেখাতে পারলাম না। সেবা নিতে এসে আমরা খুবই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। জোড়পুকুরিয়া গ্রামের শান্তা খাতুন জানান, নিজের ও বাঁচ্চার চিকিৎসার জন্য এসেছি। এসে দেখি হাসপাতালে দীর্ঘ লাইন। এই ভ্যাপসা গরমে ছোট বাঁচ্চাকে নিয়ে এই লম্বা লাইনে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বাঁচ্চাকে নিয়ে গরমে কাহিল হয়ে পড়েছি। এখন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেই জানটা বাঁচে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুপ্রভা রানী বলেন, বর্তমানে প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই রোগীদের প্রচুর চাপ। তার ওপর প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম হওয়ায় এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা হিমশিম খেয়ে যায়। তবুও এই জনবল দিয়েই আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে জনবলের প্রয়োজন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। আশা করছি, শূন্য পদে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসক পাওয়া যাবে। আর হাসপাতালের নষ্ট হওয়া জেনারেটর দুটি মেরামত করে খুব দ্রুতই চালু করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিজেই যেন রোগী, জনবল ও চিকিৎসক সংকট

কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ

আপলোড টাইম : ১০:১৩:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না রোগীরা। জনবল ও চিকিৎসক সংকটে ধুঁকছে হাসপাতালটি। প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা পাচ্ছেন না কাঙ্খিত চিকিৎসকের। রোগীদের এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে ভিন্ন রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হতে হচ্ছে কিংবা অন্য হাসপাতালে রোগীদের রেফার্ড করা হচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় হাসপাতালটি। কিন্তু সে মোতাবেক জনবল ও চিকিৎসক দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্টসহ মোট ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এ হাসপাতালে রয়েছেন মাত্র ১১ জন। যদিও খাতা-কলমে দায়িত্ব পালন করছেন ১২ জন। জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) একজন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ডেপুটিশনে রয়েছেন।

১৯৬৮ সালে নির্মিত হয় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি সেবার মান। দেয়া হয়নি চাহিদা অনুযায়ী জনবল ও চিকিৎসক। হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট চিকিৎসকের পদ থাকলেও খাতা-কলমে রয়েছেন মাত্র ৪ জন। একজন অ্যানেসথেসিয়া থাকলেও হাসপাতালে তার দেখা পাওয়া ভার। সার্জারি কনসালটেন্ট না থাকায় বন্ধ অপারেশন।

হাসপাতালে গাইনি, চক্ষু, অর্থপেডিক্স, কার্ডিওলজি, নাক-কান-গলা এবং চর্ম ও যৌন রোগের জন্য হাসপাতালে কনসালটেন্ট চিকিৎসকের পদ থাকলেও পদগুলি দীর্ঘদিন শূন্য থাকায় এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালটিতে অফিস সহকারী, ওয়ার্ড বয়, নৈশপ্রহরী ও ইলেকট্রিশিয়ান পদের সকল পদই বর্তমানে শূন্য। এছাড়া ৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র একজন।

এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এক প্রকার জোড়াতালি দিয়ে চলছে। চিকিৎসা দিতে গিয়েও হাঁপিয়ে উঠছেন চিকিৎসকরা। অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ডাক্তারের অভাবে তা বন্ধ। ফলে কোনো কাজে আসছে না কোটি টাকা মূল্যের অপারেশন থিয়েটার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, দীর্ঘদিনের এ সমস্যা লাঘব হচ্ছে না। ফলে অনেক কষ্ট করেই চালাতে হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এছাড়াও হাসপাতালে গড়ে ৬০ জনের বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় এবং চিকিৎসক সংকটের কারণে বেশিরভাগ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৯ হাজার ৩১৯ জন। এবং বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৫০ জন রোগী।

এদিকে, হাসপাতালটির একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি মাঝে মধ্যে ঠিক হলেও ফিল্ম থাকে না। দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে অবহেলায় পড়ে থাকে বছরের পর বছর। প্যাথলজি বিভাগ থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের বাইরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়। এছাড়া হাসপাতালের ৩টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটিই অবহেলায় অচল হয়ে পড়ে আছে।

গতকাল বুধবার ও আগের দিন মঙ্গলবার সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। অধিকাংশ রোগীর মুখে হতাশার ছাপ। কেউ কেউ দীর্ঘক্ষণ বসে আছেন বিদ্যুতের অপেক্ষায় বিদ্যুৎ আসলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন। কেউ আবার আছেন পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার আশায়। হাসপাতালে দুটি উচ্চ ক্ষমতার জেনারেটর থাকলেও তা বিকল থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালের অধিকাংশ কাজই ব্যাহত হয়।

উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন জানান, ‘সকালে বাবার চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার দেখানোর পর রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন। সে মোতাবেক হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করিয়েছি, তবে রিপোর্টের জন্য বসে আছি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কারণ হিসেবে তিনি এদিন দীর্ঘক্ষণ ধরে বিদ্যুৎ না আসায় রিপোর্ট পাচ্ছেন না বলে জানান।’

অসুস্থ বাঁচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা বেতবাড়ীয়া গ্রামের মাজেদুল ইসলাম জানান, সকালের দিকে হাসপাতালে এসেছি। এখন দুপুর হতে চলল রোগীদেরও দীর্ঘ লাইন, এখনও আমার বাঁচ্চাকে দেখাতে পারলাম না। সেবা নিতে এসে আমরা খুবই ভোগান্তি পোহাচ্ছি। জোড়পুকুরিয়া গ্রামের শান্তা খাতুন জানান, নিজের ও বাঁচ্চার চিকিৎসার জন্য এসেছি। এসে দেখি হাসপাতালে দীর্ঘ লাইন। এই ভ্যাপসা গরমে ছোট বাঁচ্চাকে নিয়ে এই লম্বা লাইনে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় বাঁচ্চাকে নিয়ে গরমে কাহিল হয়ে পড়েছি। এখন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেই জানটা বাঁচে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুপ্রভা রানী বলেন, বর্তমানে প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই রোগীদের প্রচুর চাপ। তার ওপর প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম হওয়ায় এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকরা হিমশিম খেয়ে যায়। তবুও এই জনবল দিয়েই আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে জনবলের প্রয়োজন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। আশা করছি, শূন্য পদে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় জনবল ও চিকিৎসক পাওয়া যাবে। আর হাসপাতালের নষ্ট হওয়া জেনারেটর দুটি মেরামত করে খুব দ্রুতই চালু করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।