ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র বিরিয়ানি হাউজ, নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ

বাসি, পচা খাবার খেয়ে পেটের পীড়ায় ভুগছে মানুষ

জীবননগর অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৮:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে


চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে পচা, বাসি ও নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জীবননগর শহরে রাতারাতি নামি দামি সব হোটেলের নাম ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবার হোটেল। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ, হাজী বিরিয়ানি হাউজসহ বিভিন্ন নামের খাবারের হোটেল। এসব খাবার হোটেলগুলোর মালিক কেউ জীবননগরের স্থায়ী বাসিন্দা নয়। বেশির ভাগ হোটেল মালিকের বাড়ি রাজধানী ঢাকাসহ, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও রাজবাড়ীতে। অস্থায়ী এসব খাবার হোটেল মালিকরা এ এলাকায় এসে বাসি, পচা ও নিম্নমানের খাবার-সামগ্রী বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তাদের খাবার খেয়ে পেটের পিড়ায় ভুগতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে খাবার খেতে আসা জীবননগর পৌর শহরের সোহরাব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি বন্ধুদের সাথে বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে গেলে তারা আমাদের মোরগ পোলাও দেয়। খাবার মুখে দিতেই কেমন একটা এলানো ভাব লাগে। আমি হোটেল মালিককে বললে তিনি বলেন, খাবারে একটু তেল বেশি হয়েছে, এ জন্য এমন লাগছে। পরে মুরগীর মাংস খেয়ে দেখলে সেটাও বাসি মনে হওয়ায় আমরা খাবার না খেয়েই খাবারের বিল দিয়ে চলে আসি।’
একই অভিযোগ করেন হাসান নামের অপর এক তরুণ। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজের সাইনবোর্ড দেখে আমি খেতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে যে খাবার দেয়া হয়েছিল, তা একবাইরেই নষ্ট ও খাবার অনুপযোগী। তারা বাসি খাবার গরম করে সাধারণ ক্রেতাদের খাওয়াচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষের সাথে রীতিমতো প্রতারণা করছে।’
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জীবননগর বাজারের এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারের হোটেল ব্যবসায়ীদের একটা সুনাম ছিল। কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে অস্থায়ী হোটেল ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করায় হোটেল ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ এলাকার কসাই, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাকি জিনিসপত্র নিয়ে টাকা না দিয়েই তারা অনেকে উধাও হয়ে গেছে।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা বিরিয়ানি হাউজসহ বেশ কিছু বিরিয়ানি হাউজের মালিকরা জীবননগর বাজারের বেশ কিছু কসাইদের নিকট থেকে অল্প দামে অসুস্থ ছাগলের মাংস কিনে বিরিয়ানি হাউজে ব্যবহার করছেন। এবং সোনালী মুরগীর নামে অসুস্থ ছোট পোল্ট্রি মুরগীর মাংস দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ বলেন, যদি কোনো হোটেল ব্যবসায়ী পচা, বাসি খাবার বিক্রি করেন এবং এমন অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত পূর্বক সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র বিরিয়ানি হাউজ, নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ

বাসি, পচা খাবার খেয়ে পেটের পীড়ায় ভুগছে মানুষ

আপলোড টাইম : ০৫:৩৮:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪


চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে পচা, বাসি ও নিম্নমানের খাবার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জীবননগর শহরে রাতারাতি নামি দামি সব হোটেলের নাম ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবার হোটেল। যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিরিয়ানি হাউজ, হাজী বিরিয়ানি হাউজসহ বিভিন্ন নামের খাবারের হোটেল। এসব খাবার হোটেলগুলোর মালিক কেউ জীবননগরের স্থায়ী বাসিন্দা নয়। বেশির ভাগ হোটেল মালিকের বাড়ি রাজধানী ঢাকাসহ, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও রাজবাড়ীতে। অস্থায়ী এসব খাবার হোটেল মালিকরা এ এলাকায় এসে বাসি, পচা ও নিম্নমানের খাবার-সামগ্রী বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তাদের খাবার খেয়ে পেটের পিড়ায় ভুগতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে খাবার খেতে আসা জীবননগর পৌর শহরের সোহরাব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি বন্ধুদের সাথে বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে গেলে তারা আমাদের মোরগ পোলাও দেয়। খাবার মুখে দিতেই কেমন একটা এলানো ভাব লাগে। আমি হোটেল মালিককে বললে তিনি বলেন, খাবারে একটু তেল বেশি হয়েছে, এ জন্য এমন লাগছে। পরে মুরগীর মাংস খেয়ে দেখলে সেটাও বাসি মনে হওয়ায় আমরা খাবার না খেয়েই খাবারের বিল দিয়ে চলে আসি।’
একই অভিযোগ করেন হাসান নামের অপর এক তরুণ। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিরিয়ানি হাউজের সাইনবোর্ড দেখে আমি খেতে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে যে খাবার দেয়া হয়েছিল, তা একবাইরেই নষ্ট ও খাবার অনুপযোগী। তারা বাসি খাবার গরম করে সাধারণ ক্রেতাদের খাওয়াচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষের সাথে রীতিমতো প্রতারণা করছে।’
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জীবননগর বাজারের এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারের হোটেল ব্যবসায়ীদের একটা সুনাম ছিল। কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে অস্থায়ী হোটেল ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করায় হোটেল ব্যবসায়ীদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ এলাকার কসাই, মুদি দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাকি জিনিসপত্র নিয়ে টাকা না দিয়েই তারা অনেকে উধাও হয়ে গেছে।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা বিরিয়ানি হাউজসহ বেশ কিছু বিরিয়ানি হাউজের মালিকরা জীবননগর বাজারের বেশ কিছু কসাইদের নিকট থেকে অল্প দামে অসুস্থ ছাগলের মাংস কিনে বিরিয়ানি হাউজে ব্যবহার করছেন। এবং সোনালী মুরগীর নামে অসুস্থ ছোট পোল্ট্রি মুরগীর মাংস দেওয়া হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসিনা মমতাজ বলেন, যদি কোনো হোটেল ব্যবসায়ী পচা, বাসি খাবার বিক্রি করেন এবং এমন অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত পূর্বক সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।