ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুরি হওয়া মালামাল বিক্রি হয় কোথায়?

আরিফ হাসান, হিজলগাড়ী:
  • আপলোড টাইম : ১১:৪৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

৫ বছর পূর্বেও বাবলু মিয়ার পেশা ছিল গ্রামে গ্রামে হকারি করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করা। কখনো বাদাম ভাজা কখনো বা আইসক্রিম বিক্রি করেই টেনেটুনে তার সংসার চলতো। হকারি পেশা ছেড়ে বেগমপুর কলোনী পাড়া বাজারে ভাংড়ী মালামাল ক্রয়-বিক্রির দোকান দিয়ে রাতারাতি আলাদিনের চেরাগ হাতে পান তিনি। ৫ বছর আগে যার সংসার চালানো কষ্টসাধ্য ছিল, সেই বাবলুই এখন লাখোপতি।
অভিযোগ রয়েছে, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চুরি হওয়া মালামাল তার কাছেই বিক্রি করে চোরেরা। বাবলুর মতো রাতারাতি চেরাগপ্রাপ্ত ভাংড়ী ব্যবসায়ীর তালিকাতে রয়েছে হিজলগাড়ী, তিতুদহ, জীবননগর উপজেলার দেহাটি গ্রামের একাধিক দোকানদার ও দামুড়হুদার ডুগডুগি বাজারে গড়ে ওঠা দোকানগুলো। যদিও চোরাই মালামাল ক্রয় করার কথা অপকটে স্বীকার যান তারা।
অন্যদিকে, এলাকায় জনতার হাতে আটক একাধিক চোর চোরাইকৃত মালামাল বিক্রির মোকাম হিসেবে ঘুরেফিরে তাদের নামই বলে থাকে। তবে অদৃশ্য কারণে এসব দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার খবর চোখে পড়ে না। গত ২০ জুলাই বাবলুর দোকানে চোরাই মাল বিক্রি করে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের হাতে আটক হয় ছোটশলুয়া গ্রামের চিহিৃত চোর কিবরিয়া।
স্থানীয় লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে কিবরিয়া জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে সাইকেল, শ্যালোমেশিনসহ লোহা জাতীয় জিনিসপত্র চুরি করে বেগমপুর কলোনীপাড়া বাজারের ভাংড়ী দোকানদার বাবলুর কাছে বিক্রি করেন তিনি। ঘটনার দিন দর্শনা থেকে ট্রাক্টরের ব্রেকসু চুরি করে বিক্রি করতে এসে লোকজনের হাতে ধরা পড়েন কিবরিয়া। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশে দেয়। বাবলুর দোকান থেকেই উদ্ধার হয় চুরিকৃত ট্রাক্টরের ব্রেকসু। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকেন তিনি। চোর কিবরিয়া বর্তমানে জেলহাজতে আছেন বলে জানা গেছে। তবে ঘটনার দিন চোর কিবরিয়ার কাছ থেকে চোরাই মাল ক্রয়ের কথা স্বীকার করলেও বাকি অভিযোগ অস্বীকার করেন ভাংড়ীর দোকানদার বাবলু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রাম, শহর কিংবা ছোট বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ভাংড়ী মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান। বিশেষ করে দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি, জীবননগর উপজেলার দেহাটি, চুয়াডাঙ্গা সদরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা এসব ভাংড়ীর দোকানে অতিগোপনে চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। চোরদের কাছ থেকে সামান্য মূল্যে এসব চোরাই মালামাল ক্রয় করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন ভাংড়ীর দোকানিগুলো। সেই সাথে বেশি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় অনেকেই ঝুকছেন এই ব্যবসার দিকে। চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে চুরি নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম উপায় হতে পারে ভাংড়ীর দোকানগুলোতে নজরদারি এমনইটায় মনে করছেন সচেতন মহল।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুরি হওয়া মালামাল বিক্রি হয় কোথায়?

আপলোড টাইম : ১১:৪৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

৫ বছর পূর্বেও বাবলু মিয়ার পেশা ছিল গ্রামে গ্রামে হকারি করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করা। কখনো বাদাম ভাজা কখনো বা আইসক্রিম বিক্রি করেই টেনেটুনে তার সংসার চলতো। হকারি পেশা ছেড়ে বেগমপুর কলোনী পাড়া বাজারে ভাংড়ী মালামাল ক্রয়-বিক্রির দোকান দিয়ে রাতারাতি আলাদিনের চেরাগ হাতে পান তিনি। ৫ বছর আগে যার সংসার চালানো কষ্টসাধ্য ছিল, সেই বাবলুই এখন লাখোপতি।
অভিযোগ রয়েছে, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চুরি হওয়া মালামাল তার কাছেই বিক্রি করে চোরেরা। বাবলুর মতো রাতারাতি চেরাগপ্রাপ্ত ভাংড়ী ব্যবসায়ীর তালিকাতে রয়েছে হিজলগাড়ী, তিতুদহ, জীবননগর উপজেলার দেহাটি গ্রামের একাধিক দোকানদার ও দামুড়হুদার ডুগডুগি বাজারে গড়ে ওঠা দোকানগুলো। যদিও চোরাই মালামাল ক্রয় করার কথা অপকটে স্বীকার যান তারা।
অন্যদিকে, এলাকায় জনতার হাতে আটক একাধিক চোর চোরাইকৃত মালামাল বিক্রির মোকাম হিসেবে ঘুরেফিরে তাদের নামই বলে থাকে। তবে অদৃশ্য কারণে এসব দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার খবর চোখে পড়ে না। গত ২০ জুলাই বাবলুর দোকানে চোরাই মাল বিক্রি করে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের হাতে আটক হয় ছোটশলুয়া গ্রামের চিহিৃত চোর কিবরিয়া।
স্থানীয় লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে কিবরিয়া জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে সাইকেল, শ্যালোমেশিনসহ লোহা জাতীয় জিনিসপত্র চুরি করে বেগমপুর কলোনীপাড়া বাজারের ভাংড়ী দোকানদার বাবলুর কাছে বিক্রি করেন তিনি। ঘটনার দিন দর্শনা থেকে ট্রাক্টরের ব্রেকসু চুরি করে বিক্রি করতে এসে লোকজনের হাতে ধরা পড়েন কিবরিয়া। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশে দেয়। বাবলুর দোকান থেকেই উদ্ধার হয় চুরিকৃত ট্রাক্টরের ব্রেকসু। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকেন তিনি। চোর কিবরিয়া বর্তমানে জেলহাজতে আছেন বলে জানা গেছে। তবে ঘটনার দিন চোর কিবরিয়ার কাছ থেকে চোরাই মাল ক্রয়ের কথা স্বীকার করলেও বাকি অভিযোগ অস্বীকার করেন ভাংড়ীর দোকানদার বাবলু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রাম, শহর কিংবা ছোট বাজারে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ভাংড়ী মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের দোকান। বিশেষ করে দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি, জীবননগর উপজেলার দেহাটি, চুয়াডাঙ্গা সদরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা এসব ভাংড়ীর দোকানে অতিগোপনে চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। চোরদের কাছ থেকে সামান্য মূল্যে এসব চোরাই মালামাল ক্রয় করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন ভাংড়ীর দোকানিগুলো। সেই সাথে বেশি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় অনেকেই ঝুকছেন এই ব্যবসার দিকে। চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে চুরি নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম উপায় হতে পারে ভাংড়ীর দোকানগুলোতে নজরদারি এমনইটায় মনে করছেন সচেতন মহল।