ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ৬ মাসের জন্য স্থগিত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ

কেন প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন হবে না মর্মে হাইকোর্টের রুল জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • / ৫০ বার পড়া হয়েছে

আবারও থেমে যেতে বসেছে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে কেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হবে না মর্মে রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলার আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও ওই পরিষদই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে। আইনি নানা জটিলতা থাকায় দীর্ঘ ১১ বছর পর এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল। ফলে এবারের নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনাও ছিল ব্যবসায়ীদের মধ্যে। গত ১৫ মে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো. আশরাফ আলী। এরপর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই নানা অভিযোগ ওঠে। ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েন অনেক সদস্য। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলা হাইকোর্টে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, চেম্বারের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিকসহ ১৬ জনকে বিবাদী করে একটি রিট পিটিশন করেন। রিট পিটিশন নম্বর ৮৯০০, ২০২৪।
রিটকারী চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলা বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ৬ মাসের জন্য চেম্বারের নির্বাচন স্থগিত করেছেন। প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে কেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হবে না মর্মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আসন্ন দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ২০২৪-২০২৫ ও ২০২৫-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনী তফসিল গত ২৫ মে প্রকাশিত হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী গত ৩ জুন খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অনেক ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত আছে। বাণিজ্য সংগঠনের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বর্তমান সভাপতি ইয়াকুব হোসেন জালিয়াতির মাধ্যমে বহু সদস্যকে অন্তর্ভুক্তি করেন। প্রতি বছর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গত ১০ বছরে কোনো সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এই কমিটির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই ঘোষিত তফসিল ও বর্তমান কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন করার দাবি ছিল প্রকৃত ব্যবসায়ীদের। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দাবি নজরে রেখে বিজ্ঞ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সচিব খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত হওয়া কোনো অফিসিয়াল চিঠি আমরা পাইনি। একটি অ্যাডভোকেট সার্টিফাইড কপি দিয়েছেন চেম্বারের সদস্য আলাউদ্দীন হেলা। কিন্তু কোনো অফিসিয়াল চিঠি পাইনি।’
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ বলেন, স্থগিত করার কথা মুখে শুনেছি। তবে এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কোনো কাগজ আমি হাতে পাইনি। শোনার পর আমি চেম্বারকে তাগাদা দিয়েছি যাতে এটি আমাকে দেয়া হয়। কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্সের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ৬ মাসের জন্য স্থগিত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ

কেন প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন হবে না মর্মে হাইকোর্টের রুল জারি

আপলোড টাইম : ১১:৩৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

আবারও থেমে যেতে বসেছে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে কেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হবে না মর্মে রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলার আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৫ সালে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও ওই পরিষদই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে। আইনি নানা জটিলতা থাকায় দীর্ঘ ১১ বছর পর এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল। ফলে এবারের নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনাও ছিল ব্যবসায়ীদের মধ্যে। গত ১৫ মে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো. আশরাফ আলী। এরপর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই নানা অভিযোগ ওঠে। ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েন অনেক সদস্য। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন ব্যবসায়ীরা। সর্বশেষ চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলা হাইকোর্টে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, চেম্বারের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিকসহ ১৬ জনকে বিবাদী করে একটি রিট পিটিশন করেন। রিট পিটিশন নম্বর ৮৯০০, ২০২৪।
রিটকারী চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সদস্য আলাউদ্দীন হেলা বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ৬ মাসের জন্য চেম্বারের নির্বাচন স্থগিত করেছেন। প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে কেন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হবে না মর্মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আসন্ন দ্বিবার্ষিক নির্বাচন ২০২৪-২০২৫ ও ২০২৫-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনী তফসিল গত ২৫ মে প্রকাশিত হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী গত ৩ জুন খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ভোটার তালিকায় অনেক ভুয়া ভোটার অন্তর্ভুক্ত আছে। বাণিজ্য সংগঠনের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বর্তমান সভাপতি ইয়াকুব হোসেন জালিয়াতির মাধ্যমে বহু সদস্যকে অন্তর্ভুক্তি করেন। প্রতি বছর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও গত ১০ বছরে কোনো সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এই কমিটির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই ঘোষিত তফসিল ও বর্তমান কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন করার দাবি ছিল প্রকৃত ব্যবসায়ীদের। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দাবি নজরে রেখে বিজ্ঞ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সচিব খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত হওয়া কোনো অফিসিয়াল চিঠি আমরা পাইনি। একটি অ্যাডভোকেট সার্টিফাইড কপি দিয়েছেন চেম্বারের সদস্য আলাউদ্দীন হেলা। কিন্তু কোনো অফিসিয়াল চিঠি পাইনি।’
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ বলেন, স্থগিত করার কথা মুখে শুনেছি। তবে এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. মো. আশরাফ আলী বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কোনো কাগজ আমি হাতে পাইনি। শোনার পর আমি চেম্বারকে তাগাদা দিয়েছি যাতে এটি আমাকে দেয়া হয়। কাগজ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’