ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গার খাসকররা ও জীবননগরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা

এক কিশোরসহ দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০৬:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
  • / ৭৮ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও জীবননগরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোরে ও বেলা দেড়টার দিকে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় ইটভর্তি ট্রাক্টটের চাকায় পিষ্ট হয়ে মুন্না হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের বাজারপাড়া বড় মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় গুরুতর জখম হন মুন্নার বন্ধু সাজিদ। নিহত মুন্না হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার রাইসা গ্রামের রাইস মিল ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীনের ছেলে ও আহত সাজিদ একই গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। এদিকে, দুর্ঘটনার পর ট্রাক্টর ফেলে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ নিহত মুন্নার লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং ঘাতক ট্রাক্টরটি জব্দ করে থানা হেফাজতে নেয়।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুরে মুন্না ও তার বন্ধু সাজিদ মোটরসাইকেলে খাসকররা বাজারে আসে। এসময় একটি ইটবহনকারী ট্রাক্টর পিছন থেকে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মুন্না রাস্তার ওপর ছিটকে পড়লে ট্রাক্টরটি তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মুন্নার মৃত্যু হয়। এদিকে, অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রাক্টর ফেলে চালক সেখান থেকে পালিয়ে যান। মুন্নার মৃত্যুর খবর দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের আহাজারিতে চারপাশে শোকের ছায়া নেমে আসে।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার পর চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ট্রাক্টরটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জীবননগর:
জীবননগরে সড়কের পাশ থেকে আকমল হোসেন (৫৮) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর আঞ্চলিক মহাসড়কের সন্তোষপুর তেল পাম্পের নিকট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে লাশ উদ্ধার হলেও পরে পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। নিহত আকমল হোসেন ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার চরপাড়া গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে। পুলিশ ধারণা করছে, হয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যেতে পারেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার ভোরে সন্তোষপুর তেল পাম্পের অদূরে সড়কের পাশে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জীবননগর থানার পুলিশ। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, ওই ব্যক্তি হয়ত মানসিক প্রতিবন্ধী। রাতের কোনো এক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যেতে পারেন। সন্তোষপুর গ্রামের আকলিমা খাতুন নামের এক নারী জানান, ‘‘ভোরে ফজরের আজানের পর রাস্তায় একটি শব্দ শুনতে পাই। আমরা গিয়ে দেখি ওই ব্যক্তি সড়কের পাশে কাতরাচ্ছে। আমি তার মাথায় পানি দেয়ার জন্য বাড়িতে পানি আনতে গিয়ে ফিরে এসে দেখি তিনি মারা গেছেন।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেন, সন্তোষপুর তেল পাম্প সংলগ্ন সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

জীবননগর থানার পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। ওই ব্যক্তি ফরিদপুরের মধুখালী এলাকা থেকে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়েছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আলমডাঙ্গার খাসকররা ও জীবননগরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা

এক কিশোরসহ দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৮:০৬:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও জীবননগরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোরে ও বেলা দেড়টার দিকে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।

আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গায় ইটভর্তি ট্রাক্টটের চাকায় পিষ্ট হয়ে মুন্না হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের বাজারপাড়া বড় মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় গুরুতর জখম হন মুন্নার বন্ধু সাজিদ। নিহত মুন্না হোসেন আলমডাঙ্গা উপজেলার রাইসা গ্রামের রাইস মিল ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দীনের ছেলে ও আহত সাজিদ একই গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। এদিকে, দুর্ঘটনার পর ট্রাক্টর ফেলে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ নিহত মুন্নার লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে এবং ঘাতক ট্রাক্টরটি জব্দ করে থানা হেফাজতে নেয়।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল দুপুরে মুন্না ও তার বন্ধু সাজিদ মোটরসাইকেলে খাসকররা বাজারে আসে। এসময় একটি ইটবহনকারী ট্রাক্টর পিছন থেকে মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মুন্না রাস্তার ওপর ছিটকে পড়লে ট্রাক্টরটি তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলেই মুন্নার মৃত্যু হয়। এদিকে, অবস্থা বেগতিক দেখে ট্রাক্টর ফেলে চালক সেখান থেকে পালিয়ে যান। মুন্নার মৃত্যুর খবর দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের আহাজারিতে চারপাশে শোকের ছায়া নেমে আসে।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার পর চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ট্রাক্টরটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জীবননগর:
জীবননগরে সড়কের পাশ থেকে আকমল হোসেন (৫৮) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর আঞ্চলিক মহাসড়কের সন্তোষপুর তেল পাম্পের নিকট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে লাশ উদ্ধার হলেও পরে পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। নিহত আকমল হোসেন ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার চরপাড়া গ্রামের মৃত মোজাহার মোল্লার ছেলে। পুলিশ ধারণা করছে, হয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যেতে পারেন।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার ভোরে সন্তোষপুর তেল পাম্পের অদূরে সড়কের পাশে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে পথচারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জীবননগর থানার পুলিশ। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, ওই ব্যক্তি হয়ত মানসিক প্রতিবন্ধী। রাতের কোনো এক সময় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যেতে পারেন। সন্তোষপুর গ্রামের আকলিমা খাতুন নামের এক নারী জানান, ‘‘ভোরে ফজরের আজানের পর রাস্তায় একটি শব্দ শুনতে পাই। আমরা গিয়ে দেখি ওই ব্যক্তি সড়কের পাশে কাতরাচ্ছে। আমি তার মাথায় পানি দেয়ার জন্য বাড়িতে পানি আনতে গিয়ে ফিরে এসে দেখি তিনি মারা গেছেন।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেন, সন্তোষপুর তেল পাম্প সংলগ্ন সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

জীবননগর থানার পরিদর্শক (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। ওই ব্যক্তি ফরিদপুরের মধুখালী এলাকা থেকে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়েছিলেন।