ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবন নির্মাণ হলেও নানা জটিলতায় চালু হয়নি

জরাজীর্ণ ভবনে চলছে কার্যক্রম, বিড়ম্বনায় যাত্রীরা

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
  • / ৫২ বার পড়া হয়েছে

প্রায় ৩ বছর আগে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবন নির্মাণ করা হলেও নানা জটিলতায় কার্যক্রম শুরু হয়নি এখনও। দীর্ঘ দিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে নবনির্মিত ভবনটি। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কাস্টমসের জরাজীর্ণ ছোট ভবনেই তাদের কাজ কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছে। এতে করে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। দুই দেশের মানুষের দুর্ভোগ যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ বলছে, ছোটখাটো কোনো সমস্য থাকলে বিষয়টি আমাদের জানালে সমাধান করার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন ও ব্যবহারের উপযোগী না হওয়ায় কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগরে ১৯৮৭ সালে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। ভারতের অংশে রয়েছে কলকাতার গেদে। সেই সময় বাংলাদেশ ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চিকিৎসা, ভ্রমণ, ব্যবসাসহ নানা কাজে আসা-যাওয়া শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ খুব সহজে দর্শনা জয়নগর দিয়ে ভারতের গেদে হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করতে পারেন। এ পথ দিয়ে উভয় দেশের মানুষ অল্প সময়ে ও খরচে যাতায়াত করতে পারেন।

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই কাস্টমসের ভবনের ভেতরে অল্প জায়গায় এ গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করছে। ছোট্ট একটি ঘরে বসেন ইমিগ্রেশন ইনচার্জ। আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের মালামাল যেখানে দেখেন, সেখানেই যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল তিনতলা বিশষ্ট দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবনের কাজ শুরু হয়ে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। প্রায় ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হয় ভবন। যশোরের মেসার্স মহিদুল ইসলাম ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শেষ করে। ভবন নির্মাণ ৩ বছর আগে শেষ হলেও এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি নানা জটিলতা থাকায়।

ছবি: দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের নতুন ভবন

ভবনটি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভারত-বাংলাদেশ থেকে যাতায়াত করা দুই দেশের যাত্রীরা সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনে সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ ভারতের প্রায় ৯০০-১০০০ যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যোগযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় চলাচল বেশি। অল্প সময় ও খরচে ভারত-বাংলাদেশ আসা যাওয়া করা যায়।

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল হুদা বলেন, ‘নিয়মিত ভারতে যাতায়াত করি আমরা। রোদ-বৃষ্টি ও শীতের সময় বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। এতে কষ্ট হয়। যেখানে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়, সেখানে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই।’ চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়া ইউনিয়ানের বাসিন্দা রাজীব হাসান কচি জানান, ভারতে যাওয়া আসার সময় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হয় দুই দেশেই। নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও চালু হয়নি। বসার মতো ব্যবস্থা নেই। টয়লেট সুবিধা নেই। যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমাধান করলে সবার সুবিধা হবে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহসীন বলেন, ‘তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। দোতলায় পুলিশ সদস্যরা থাকেন। তা হলে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। যদি কোনো সমস্য থাকে, তাহলে লিখিতভাবে আমাদের জানালে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।’

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজিম উদ্দীন আল আজাদ জানান, ভবন নির্মাণ হলেও সম্পূর্ণ ব্যবহারের উপযোগী হয়নি। অনেক সমস্যা রয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। ভবনের সমস্য সমাধান হয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হলে দুর্ভোগ হ্রাস পাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবন নির্মাণ হলেও নানা জটিলতায় চালু হয়নি

জরাজীর্ণ ভবনে চলছে কার্যক্রম, বিড়ম্বনায় যাত্রীরা

আপলোড টাইম : ০৯:৩২:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

প্রায় ৩ বছর আগে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবন নির্মাণ করা হলেও নানা জটিলতায় কার্যক্রম শুরু হয়নি এখনও। দীর্ঘ দিন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে নবনির্মিত ভবনটি। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কাস্টমসের জরাজীর্ণ ছোট ভবনেই তাদের কাজ কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছে। এতে করে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। দুই দেশের মানুষের দুর্ভোগ যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ বলছে, ছোটখাটো কোনো সমস্য থাকলে বিষয়টি আমাদের জানালে সমাধান করার ব্যবস্থা করা হবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন ও ব্যবহারের উপযোগী না হওয়ায় কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগরে ১৯৮৭ সালে দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়। ভারতের অংশে রয়েছে কলকাতার গেদে। সেই সময় বাংলাদেশ ভারতের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চিকিৎসা, ভ্রমণ, ব্যবসাসহ নানা কাজে আসা-যাওয়া শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ খুব সহজে দর্শনা জয়নগর দিয়ে ভারতের গেদে হয়ে কলকাতায় প্রবেশ করতে পারেন। এ পথ দিয়ে উভয় দেশের মানুষ অল্প সময়ে ও খরচে যাতায়াত করতে পারেন।

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই কাস্টমসের ভবনের ভেতরে অল্প জায়গায় এ গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করছে। ছোট্ট একটি ঘরে বসেন ইমিগ্রেশন ইনচার্জ। আর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের মালামাল যেখানে দেখেন, সেখানেই যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল তিনতলা বিশষ্ট দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ভবনের কাজ শুরু হয়ে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। প্রায় ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হয় ভবন। যশোরের মেসার্স মহিদুল ইসলাম ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শেষ করে। ভবন নির্মাণ ৩ বছর আগে শেষ হলেও এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি নানা জটিলতা থাকায়।

ছবি: দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের নতুন ভবন

ভবনটি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভারত-বাংলাদেশ থেকে যাতায়াত করা দুই দেশের যাত্রীরা সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনে সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ ভারতের প্রায় ৯০০-১০০০ যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যোগযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় চলাচল বেশি। অল্প সময় ও খরচে ভারত-বাংলাদেশ আসা যাওয়া করা যায়।

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহেল হুদা বলেন, ‘নিয়মিত ভারতে যাতায়াত করি আমরা। রোদ-বৃষ্টি ও শীতের সময় বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। এতে কষ্ট হয়। যেখানে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়, সেখানে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই।’ চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়া ইউনিয়ানের বাসিন্দা রাজীব হাসান কচি জানান, ভারতে যাওয়া আসার সময় ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে হয় দুই দেশেই। নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও চালু হয়নি। বসার মতো ব্যবস্থা নেই। টয়লেট সুবিধা নেই। যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমাধান করলে সবার সুবিধা হবে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহসীন বলেন, ‘তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। দোতলায় পুলিশ সদস্যরা থাকেন। তা হলে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। যদি কোনো সমস্য থাকে, তাহলে লিখিতভাবে আমাদের জানালে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।’

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাজিম উদ্দীন আল আজাদ জানান, ভবন নির্মাণ হলেও সম্পূর্ণ ব্যবহারের উপযোগী হয়নি। অনেক সমস্যা রয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে। ভবনের সমস্য সমাধান হয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হলে দুর্ভোগ হ্রাস পাবে।